ছেণ্ডা
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {  | আনদ্ধ বাদ্যযন্ত্র | ঘাত বাদ্যযন্ত্র | সঙ্গীতযন্ত্র | যন্ত্র | ডিভাইস | যন্ত্রকরণতা | মানবসৃষ্টি | সমগ্র | দৈহিক লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা |}

মালায়াম ছেণ্ডা (ചെണ്ട)>বাংলা ছেণ্ডা।
দক্ষিণ ভারতীয় একটি ঐতিহ্যবাহী তালবাদ্যযন্ত্র। কর্ণাটকের টুলু নাড়ু এবং তামিলনাড়ুতে এর নাম ছাণ্ডে।

এর কাঠের তৈরি সিলিন্ডার আকারের দেহকাঠামোর উভয় মুখে চামড়ার আচ্ছাদন থাকে।  উভয়মুখী এই বাদ্যযন্ত্রের বাম মুখের নাম এডামথালা (
ഇടം തല), আর ডানদিকের মুখের নাম ভালামথালা (വലം തല)। প্রথাগতভাবে এর আচ্ছাদিত পর্দাটি তৈরি হতো ষাঁড়ের পেটের দিককার চামড়া থেকে। তবে বর্তমানে গাভীর চামড়াও ব্যবহার করা হয়। এডামথালায় ব্যবহার করা হয় এক বা দুই স্তরের চামড়া। পক্ষান্তরের ভালামথালায় ব্যবহার করা হয় পাঁচ থেকে সাত স্তরের চামড়া। এই কারণে ভালামথালা থেকে গুরুগম্ভীর ধ্বনি তৈরি হয়ে থাকে। উভয় মুখের চামড়া ছায়াতে শুকিয়ে একটি কাঠ বা বাঁশের তৈরি চক্রে স্থাপন করা হয়। একসময় মোটা তালগাছের গুঁড়ি কেটে এই চক্র তৈরির রেওয়াজ ছিল।  এই চক্রসহ চামড়ার আচ্ছাদন কাঠের সিলিণ্ডারের স্থাপন করা হয়। এই সিলিন্ডার তৈরি করা হয় কাঁঠাল গাছের গুঁড়ি থেকে।  

যন্ত্রটি লম্বায় প্রায় দুই ফুট এবং প্রস্থে প্রায় এক ফুট হয়। আর কাঠের পুরুত্ব হয় প্রায় দেড় ইঞ্চি। উভয় মুখের চক্রসহ পর্দাকে শক্ত দড়ি দিয়ে বেঁধে পর্দাকে সটান অবস্থানে আনা হয়। যন্ত্রটিকে সুরে বাঁধার জন্য দড়ির সাথে থাকে ধাতব আংটি ।

এই যন্ত্রটি কাঠির সাহায্যে বাজানো হয়। এই কাঠির অগ্রভাগ বাঁকা থাকে। কেরালার হিন্দু ধর্মের উৎসব বা লোক উৎসবগুলোতে বাজানো হয়। তবে কথাকলি, কর্ণাটকী লোকনৃত্যে মদ্দলমের সহযোগী বাদ্যযন্ত্র হিসাবেও বাজানো হয়। দক্ষিণ ভারতের ঐতিহ্যবাহী 'যক্ষগান' নামক নৃত্যনাট্যের সাথে এই বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়।

ছেণ্ডার মুখের ব্যাসের আকার অনুসারে নানা নামে নামকরণ করা হয়। এই নামগুলো হলো- ছেণ্ডা ভাট্টাম, ওম্পাত্থু ভিচান ছেণ্ডা, ওম্পাথে কাল ভিচান ছেণ্ডা, উরুট্টু ছেণ্ডা ইত্যাদি। 'প্রামাণাবাদ্য' নামক অর্কেষ্ট্রাধর্মী বাদনে উরুট্টু ছেণ্ডা প্রধান তালবাদ্যযন্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ছেণ্ডার ব্যবহার দেখা যায় কেরালার জনপ্রিয় 'ছেন্ডা মেলাম' বাদনশৈলীতে।



সূত্র :