অক্ষয় বট
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা বড়
বট গাছকে অক্ষয় বট নামে অভিহিত করা হয়।
কথিত আছে প্রলয়কালে বিষ্ণু বটপত্রে অধিষ্ঠিত
ছিলেন। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করেন যে- বটগাছের মৃত্যু নাই এবং এই গাছ পবিত্র
ও পুজার যোগ্য। প্রয়াগ, গয়া, পুরী, ভুবনেশ্বর প্রভৃতি
তীর্থক্ষেত্রে এরূপ এক একটি বটবৃক্ষ আছে। এই সকল বৃক্ষে জলসেচন করলে অক্ষয়
ফল লাভ হয়।
সকল দেশের সনাতন ধর্মে বড় গাছের পূজা করার
রীতি লক্ষ্য করা যায়। ভারতবর্ষে বটগাছ ছাড়াও তুলসি, অশ্বত্থ গাছের পূজার চল আছে।
হিন্দু পৌরাণিক
কাহিনি মতে, দশরথের প্রেতাত্না সীতাদেবীর হাত থেকে চালের অভাবে বালুকার পিণ্ড গ্রহণ
করেছিলেন। এর সাক্ষী ছিল ফল্গুনদী, তুলসী গাছ ও অক্ষয়বট । রামচন্দ্র ঘটনার সত্যতা
যাচাই করতে যখন ফল্গুনদী ও তুলসী গাছকে প্রশ্ন করেন, তখন তারা মিথ্যা কথা বলে। ফলে
সীতাদেবী তাদের অভিশাপ দেন। কিন্তু অক্ষয়বট সত্য কথা বলায়, সীতাদেবী তাকে
আশীর্বাদ করেন ।
সনাতন হিন্দু ধর্মমতে তীর্থের বৃহৎ বটগাছে জল দিলে এবং পূজা করলে মনষ্কামনা পূর্ণ
হয়। প্রাচীন কাব্যগ্রন্থে বৈতরণী নদীর তীরে অক্ষয় বটের উল্লেখ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের সীতাকুণ্ডে একটি অক্ষয় বট আছে। সীতাকুণ্ডের সর্ববৃহৎ ধর্মীয়
অনুষ্ঠান শিবচতুদরর্শী মেলায় নানা ধরনের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের সাথে অক্ষয়বটেরও
পূজা করা হয়।
নিরঞ্জন নদীর পাড়ের যেখানে
বুদ্ধ (গৌতম) বোধিত্ব
লাভ করেছিলেন, সেখানে প্রথম বৌদ্ধ মন্দির নির্মাণ করেন
সম্রাট অশোক।
এই মন্দিরের পাশে অবস্থিত হিন্দু তীর্থক্ষেত্রে একটি অক্ষয়বট আছে।