অণীমাণ্ডব্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা { পৌরাণিক সত্তা | কাল্পনিকসত্তা | কল্পনা | সৃজনশীলতা | দক্ষতা | জ্ঞান | মনস্তাত্ত্বিক বিষয় | বিমূর্তন | বিমূর্ত-সত্ত | সত্তা |}
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে
 জনৈক মৌন ঋষি এঁর প্রকৃত নাম ছিল মাণ্ডব্য একদিন ইনি তাঁর আশ্রমের প্রবেশদ্বারের কাছে যোগাভ্যাসে মগ্ন ছিলেন এমন সময় একদল চোর চুরি করে নগরপালের তাড়া খেয়ে এই আশ্রমে প্রবেশ করে এবং আশ্রমের এক কোণে লুকিয়ে পড়ে কিছুক্ষণ পর নগরপাল ওই চোরগুলিকে খুঁজতে খুঁজতে আশ্রমে এসে উপস্থিত হন নগরপাল মুনিকে চোরদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে, এই ঋষি মৌন-যোগাভ্যাসে থাকার জন্য কোন উত্তর করলেন না বেগতিক দেখে চোরেরা চুরিকৃত মালামাল রেখেই পালিয়ে যায় নগরপাল মুনির কাছ থেকে কোন উত্তর না পেয়ে, আশ্রম তল্লাসী করে চুরিকৃত দ্রব্যাদি পায় ফলে নগরপাল চোরদের আশ্রয়দাতা হিসাবে, বিচারের জন্য মুনিকে রাজদরবারে নিয়ে আসে রাজা বিচার করে এই মুনির শূলদণ্ডের আদেশ দেন

    যথাসময়ে এই আদেশ কার্যকর করার জন্য এঁকে শূলে চড়ানো হয় কিন্তু শূলে দীর্ঘকাল কাটানোর পরও, তাঁর মৃত্যু না হলে রাজা এসে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তাঁকে মুক্তি দেন কিন্তু তাঁকে শূল থেকে নামানোর চেষ্টা করা সময় দেখা গেল যে, শূল থেকে ইনি বিচ্ছিন্ন হচ্ছেন না ফলে শূলের বাইরের অংশটুকু কেটে বাদ দেওয়া হয় এই ভাবে শূলবিদ্ধ অবস্থায় ইনি বহুতীর্থ পরিভ্রমণ করেন এই থেকে তাঁর নাম হয় অণীমাণ্ডব্য উল্লেখ্য অণী অর্থ-শূলের অগ্রভাগ

    মুনি অত্যন্ত গ্লানি নিয়ে, একদিন যমরাজের কাছে তাঁর এই শাস্তির কারণ জানতে চাওয়ায় যমরাজ বলেন যে, 'বাল্যকালে আপনি একটি পতঙ্গের মলদ্বারে তৃণ প্রবেশ করিয়েছিলেন- সেই পাপের ফল আপনাকে ভোগ করতে হচ্ছে।' মুনি এতে রাগান্বিত হয়ে বললেন. 'লঘু পাপে আপনি আমাকে গুরু দণ্ড দিয়েছেন এই কারণে, আপনাকে শাস্তি স্বরূপ শূদ্রযোনিতে জন্মগ্রহণ করতে হবে।' এই অভিশাপের কারণে, পরবর্তী কালে যমরাজ, বিচিত্রবীর্যের প্রথমা স্ত্রী অম্বিকার শূদ্র দাসীর গর্ভে এবং ব্যাসদেবের ঔরসে বিদুররূপে জন্মেছিলেন মুনি এরপর একটি আইন প্রবর্তন করেন আইনটি হলো চৌদ্দ বৎসরের পূর্বে অজ্ঞানকৃত পাপের জন্য কেউ দণ্ডভোগ করবে না এবং পঞ্চদশ বর্ষ অবধি কর্ম্মানুসারে ফললাভ হবে।