বামন
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে  ত্রেতাযুগে আবির্ভুত বিষ্ণুর প্রথম অবতার দৈত্যরাজ বলিকে দমন করার জন্য বিষ্ণু বামনরূপে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। পুরাণে বামনাবতার নামেও পরিচিত।

 

মৎস্য পুরাণের মতে অসুরদের দ্বারা দেবতারা পরাজিত হয়ে আশ্রয়হীন হলে, দেবমাতা অদিতি পুনরায় শক্তিশালী পুত্রের জন্য বিষ্ণুর আরাধনা করেন। আরাধনায় সন্তুষ্ট হয়ে, বিষ্ণু তাঁকে জানান যে, তিনি (বিষ্ণু) কশ্যপের ঔরসে অদিতির গর্ভে জন্মগ্রহণের অঙ্গীকার করেন। এরপর যথাসময়ে অদিতির গর্ভে বিষ্ণুর আবির্ভাব হলে, অসুরেরা ক্রমে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। যথাসময়ে বলি বামন রূপে জন্মগ্রহণ করেন।

সেই সময়ের অসুর অধিপতি বলি একটি যজ্ঞের আয়োজন করলে, বামনরূপী বিষ্ণু উক্ত যজ্ঞানুষ্ঠানে গিয়ে ত্রিপাদ-ভূমি (তিন পা রাখার মতো ভূমি) প্রার্থনা করেন
বলি সম্মত হয়ে ভূমি দান করলে, বিষ্ণু তাঁর দেহবর্ধিত করে বিশাল আকার ধারণ করেন বিষ্ণু স্বর্গে-মর্তে দুই পা রেখে নাভি থেকে তৃতীয় পা বের করেন এই তৃতীয় পা কোথায় রাখবেন তা বলিকে জিজ্ঞাসা করলে, বলি তাঁর মাথা নত করে তৃতীয় পা রাখার অনুরোধ করেন বলি তৃতীয় পদ বলির মাথায় রাখার সাথে সাথে বলি বিষ্ণুর স্তব করতে থাকেন এমন সময় প্রহ্লাদ এসে বলির বন্ধন মুক্তির জন্য অনুরোধ করলে, বিষ্ণু বলিকে মুক্তি দেন এবং বলি সত্য রক্ষার জন্য বহুকষ্ট স্বীকার করেছেন বলে, বিষ্ণু দেবতাদের দুষ্প্রাপ্য রসাতলকে তাঁর বাসের জন্য দান করেন



সূত্র:
মৎস্যপুরাণ। ২৪৪-২৪৬ অধ্যায়। বেদব্যাস। অনুবাদ পঞ্চানন তর্করত্ন। নবভারত পাবলিশার্স। ১৪০৬।