একাদশ শতাব্দীতে প্রাপ্ত পাথর-খোদিত বরুণের মূর্তি |
বরুণ
হিন্দু বৈদিক
ও
পৌরাণিক দেবতা।
ঋগ্বেদের বিভিন্ন সূক্ত থেকে এই দেবতা সম্পর্কে জানা যায়, একটি ধারণা পাওয়া যায়। তবে
এই দেবতা সম্পর্কে খুব বেশী ঋক রচিত হয় নি। তাঁর সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়
বিভিন্ন সূক্ত থেকে। যেমন-
তিনি ছিলেন মহান দেবতা এবং শোভনকর্মা। তিনি মানুষের জন্য অন্নের ব্যবস্থা করে দেন। তিনি ত্রিলোককে দীপ্তি প্রদান করতেন। তিনি দ্যুলোক, ভূলোক ও সমস্ত জগতে দীপ্যমান। ১।২৫।২০
তিনি জগতের নায়ক। তিনি জল সৃষ্টি করেছেন। বরুণের নির্দেশে নদীসকল প্রবাহিত হয়। ২।২৮।৪
তিনি সূর্যের পরিক্রমণের জন্য অন্তরীক্ষ বিস্তারিত করেছেন। তিনি অশ্বসমূহকে বল, গাভীদেরকে দুধ এবং হৃদয়ে সংকল্প প্রদান করেছেন। তিনি প্রকৃষ্ট জ্ঞন সম্পন্ন। তাঁর রয়েছে সুমহতী প্রজ্ঞা। ৫।৮৫।৬
তিনি সূর্জযকে দীপ্তির জন্য নির্মাণ করেছেন। তিনি সমুদ্রকে স্থাপন করেছেন। তিনি সমগ্র সৎপথের রাজা। অরাধ করলেও বরুণ দয়া করেন।৭।৮৭।৭
তিনি ভুবনসমূহের ধারক, তিন সপ্ত সিন্ধুর ঈশ্বর। ৮।৪১।৯
তিনি ভুবন সম্রাট, আমরা তাঁর কোলে বর্তমান। ৮।৪২।২
জানা যায়, তিনি জল সৃষ্টি করেছিলেন।
মহাভারতের মতে-
তিনি
ছিলেন
কর্দম ঋষির পুত্র।
জলের দেবতা
হিসাবে ইনি অব্জিদেব,
অম্বুপ,
অম্বুপতি,
অম্ভঃপতি
ও অর্ণবমন্দির নামে
পরিচিত। পক্ষান্তরে
অদিতির পুত্র
হিসাবে- ইনি অদিতিজ,
অদিতিতনয়,
অদিতিনন্দন,
অদিতিপুত্র,
অদিতিসূত
নামে অভিহিত হয়ে থাকেন।
কথিত আছে একই
সময় মিত্র ও বরুণ উর্বশীকে দেখে কামনায় অধীর হয়ে একটি কুণ্ডে বীর্যপাত করেন।
এই কুণ্ড থেকে প্রথমে অগস্ত্য ও পরে বশিষ্ঠ মুনির জন্ম হয়।
খাণ্ডববন দহনের সময় বরুণ অর্জুনকে চন্দ্র প্রদত্ত গাণ্ডীব ধনু,
দুটি
অক্ষয় তূণীর ও কপিধ্বজ রথ দান করেন।
একই সময় ইনি কৃষ্ণকে একটি চক্র ও কৌমদকী নামক গদা উপহার হিসাবে প্রদান করেন।
বরুণ চন্দ্রের কন্যা ও উতথ্যের স্ত্রী ভদ্রাকে হরণ করেন।
বিশেষভাবে অনুরোধ করার পরও ভদ্রাকে ফিরিয়ে না দেওয়াতে উতথ্য সমুদ্রের সমস্ত পানি
পান করা শুরু করেন।
ফলে বরুণ অত্যন্ত ভীত হয়ে,
ভদ্রাকে উতথ্যের
কাছে ফিরিয়ে দেন।