গয়
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
পৌরাণিক সত্তা
|
কাল্পনিকসত্তা
|
কল্পনা
|
সৃজনশীলতা
|
দক্ষতা
|
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
|
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত-সত্তা
|
সত্তা
|}
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে
এই নামে একাধিক চরিত্র পাওয়া যায়। যেমন–
১. বানররাজ সুগ্রীবের বানর অনুচর। সুগ্রীবের আহ্বানে ইনি তাঁর অনুগত বানর সৈন্যদের নিয়ে সীতার খোঁজে কিষ্কিন্ধ্যায় উপস্থিত হয়েছিলেন। ইনি লঙ্কাযুদ্ধে উপস্থিত থেকে রামের সপক্ষে যুদ্ধ করেন।
২. একজন ধার্মিক রাজা বিশেষ। এঁর পিতার নাম ছিল অমূর্তরয়। ইনি যজ্ঞ-আহুতির অবশিষ্টাংশ আহার করে শতবর্ষ উপাসনা করেন। এতে অগ্নি সন্তুষ্ট হয়ে তাঁর প্রার্থনামত বেদ অধ্যয়ন করার অধিকার দেন। অগ্নির বরে ইনি পৃথিবীর উপর আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম হন। ইনি এক বৃহৎ যজ্ঞের আয়োজন করেন। এই যজ্ঞকালে একটি বট গাছ চিরজীবি হয়। এই বট গাছই অক্ষয়বট নামে পরিচিত।
৩. প্রখ্যাত বিষ্ণুভক্ত অসুর। এঁর নামানুসারেই গয়াতীর্থের নামকরণ করা হয়। বিষ্ণুর বর লাভের জন্য ইনি কঠোর তপস্যা করেন। ফলে দেবতারা তাঁদের অধিকার হারাবেন, এই ভয়ে ব্রহ্মার শরণাপন্ন হন। দেবতারা ব্রহ্মাকে একটি বর প্রদানের দ্বারা তপস্যা ত্যাগ করতে অনুরোধ করেন। ব্রহ্মা তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে বর প্রদান করতে ইচ্ছা করলে- ইনি বলেন যে,- তাঁর শরীর যেন ব্রাহ্মণ, তীর্থশীলা, দেবতা, মন্ত্র, যোগী প্রভৃতি সমস্ত পদার্থ অপেক্ষা পবিত্র হয়। ব্রহ্মা তাঁকে সেই বরই প্রদান করেন। এর ফলে কোন লোক তাঁকে দেখামাত্র বৈকুণ্ঠলাভ করতে থাকে। এর ফলে ক্রমে ক্রমে পৃথিবী জনশূন্য হতে থাকে। এরই ফলশ্রুতিতে যমপুরীতে মৃতের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকলে-যমরাজ বিষ্ণুকে বিষয়টি জানান। এর প্রতিকারের জন্য দেবতারা গিয়ে গয়ের কাছে তাঁর শরীর ভিক্ষা চান। গয় এতে সম্মত হলে, দেবতারা তাঁর শরীরের উপর একটি পাথর স্থাপন করে- তার উপর দেবতারা অবস্থান নেন। গয়াসুর নিশ্চল হয়ে দেবতাদের উদ্দেশ্য জানতে পেরে- দেবতাদেরকে জানান যে, এত কৌশল না করে দেবতারা এমনিতেই তাঁকে হত্যা করতে পারতেন। কারণ তিনি দেবতাদের অবধ্য নন। গয়ের বিনয়ে দেবতারা তাঁকে বর দিতে ইচ্ছা করলে ইনি বলেন যে, যতদিন চন্দ্র, সূর্য বা পৃথিবী থাকবে, ততদিন দেবতারা তাঁর বুকের উপর আসীন থাকবেন। যে স্থানে ঘটনাটি সংঘটিত হয় তা গয়ের নামে পবিত্র একটি তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়। এই তীর্থক্ষেত্রই গয়াধাম। এখানে হিন্দুরা মৃত আত্মীয়ের উদ্দেশ্যে পিণ্ড দেয়।