কুবলয়াশ্ব
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{
পৌরাণিক সত্তা
|
কাল্পনিকসত্তা
|
কল্পনা
|
সৃজনশীলতা
|
দক্ষতা
|
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
|
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত-সত্তা
|
সত্তা
|}
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনীতে এই নামে দুটি চরিত্র পাওয়া যায়। যেমন–
১।
ইক্ষ্বাকুবংশীয় রাজা বৃহদশ্বের পুত্র।
একবার বৃহদশ্ব বনে যেতে ইচ্ছা করলে উতঙ্ক তাকে নিষেধ করেন।
এর পরিবর্তে উতঙ্ক বলেন যে- তাঁর আশ্রমের কাছে মরুভূমিতে উজ্জালক নামক অংশে
মধুকৈটভের পুত্র ধুন্ধু বসবাস করে।
উক্ত নিদ্রিত দানব বত্সরে একবার নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
এই নিঃশ্বাস ত্যাগকালে এক সপ্তাহ ভূমিককম্প হয়।
এবং এই নিঃশ্বাসের সাথে আগুন,
ধূলি এত তীব্রবেগে নির্গত হয় যে- সূর্যের মার্গলোক পর্যন্ত তা পৌঁছায়।
এই দানবকে হত্যা করলে অক্ষয়কীর্তি লাভ হবে,
বৃহদাশ্ব এই কথা শুনে তাঁর পুত্র কুনলাশ্বকে ধুন্ধু বধে পাঠিয়ে বনে চলে যান।
উল্লেখ্য ধুন্ধু তপস্যার দ্বারা ব্রহ্মাকে সন্তুষ্ট করে- দানব, যম, গন্ধর্ব, নাগ ও রাক্ষসের অবধ্য হওয়ার বর লাভ করেছিলেন। ধুন্ধু বালুর মধ্যে লুকিয়ে থেকে- মাঝে মাঝে আশ্রমে এসে উপদ্রব করতো। এদিকে উতঙ্কও কঠোর তপস্যা দ্বারা বিষ্ণুকে তুষ্ট করেছিলেন। বিষ্ণু বর দিয়েছিলেন- যোগবল অবলম্বন করে কুবলাশ্ব ধুন্ধুকে হত্যা করতে সক্ষম হবেন।
কুবলাশ্ব পিতার অনুরোধে একুশ হাজার পুত্র ও সৈন্য নিয়ে ধুন্ধু বধে অগ্রসর হন। এই সময় কুবলাশ্বের দেহে বিষ্ণু প্রবেশ করেন। কুবলাশ্ব এক সপ্তাহ ধরে বালু খনন করে নিদ্রিত অবস্থায় ধুন্ধুকে দেখতে পান। ধুন্ধুর নিদ্রা ভেঙে গেলে ইনি মুখের আগুন দ্বারা কুবলাশ্বের সমুদয় পুত্র ও সৈন্যদের হত্যা করেন। এরপর কুবলাশ্ব যোগবলে ধুন্ধুর মুখের আগুন নিভিয়ে দেন এবং ধুন্ধুকে হত্যা করেন। সেই থেকে কুবলাশ্ব ধুন্ধুমার নামে খ্যাত হন।
২। ইনি রাজা শত্রুজিতের পুত্র। এঁর প্রকৃত নাম ছিল- ঋতধ্বজ। কুবলয় নামক অশ্বে ইনি ভ্রমণ করতেন বলে এঁর নাম হয়েছিল- কুবলাশ্ব। পাতালকেতু নামক এক দৈত্য গন্ধর্বরাজ বিশ্বাশুরের কন্যা মদালসাকে হরণ করে এবং গালব নামক ঋষির আশ্রমে এসে প্রচণ্ড উত্পাত শুরু করতে থাকে। এই কন্যা উদ্ধারের স্বার্থে বিশ্বাসুর গালবকে একটি ঘোড়া দান করেছিল। গালব সেই ঘোড়াটিকে কুবলাশ্বকে দেন। কুবলাশ্ব সেই ঘোড়ায় চড়ে পাতালকেতুকে পরাজিত করেন এবং মদালসাকে উদ্ধার করে তাঁকে বিয়ে করেন।
দানব পাতালকেতুর ভাই তালকেতু ভ্রাতৃহত্যার প্রতিশোধ নেবার জন্য কুবলাশ্বের রাজধানীতে ছদ্মবেশে এসে বসবাস শুরু করেন। একদিন কুবলাশ্ব শিকারে গেলে- ইনি রটনা করেন যে কুবলাশ্ব শিকারে গিয়ে মারা গেছেন। এই সংবাদে মদালসা শোকে প্রাণত্যাগ করেন। কুবলাশ্ব কিছুদিন পর ফিরে এসে এই সংবাদ শুনে শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েন। এদিকে মদালসা পাতালে নাগ বংশে পুনরায় জন্মগ্রহণ করেন। কুবালাশ্ব ঘটনাচক্রে পাতালে গেলে মদালসার সাথে তাঁর আবার মিলন ঘটে।