মরুৎ
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা
{|
হিন্দু দৈবসত্তা
|
দৈবসত্তা
|
আধ্যাত্মিক সত্তা
|
বিশ্বাস
|
প্রজ্ঞা
|
জ্ঞান |
মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
|
বিমূর্তন
|
বিমূর্ত-সত্তা
|
সত্তা
|}
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে-
১. ক্ষীরোদ সমুদ্র মন্থনের পর, এখান থেকে উত্থিত অমৃতের অধিকার নিয়ে দেবতা ও অসুরদের ভিতর একটি ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে দিতির পুত্ররা (অসুর) পরাজিত ও নিহত হন। এই কারণে, দিতি, তাঁর স্বামী কশ্যপের কাছে ইন্দ্রহন্তাকারী অজেয় অবধ্য এক পুত্র কামনা করেন। কশ্যপ বললেন, তুমি যদি সহস্র বৎসর শুচি হয়ে থাকতে পার, তবে তোমার ইন্দ্রহন্তাকারী পুত্র জন্মাবে। কশ্যপ কর্তৃক দিতি গর্ভলাভ করলে, ইনি শুচি হয়ে দিনযাপন করতে থাকেন। এই ভাবে নয় শত নব্বই বৎসর শেষে একদিন দিতি মাথার দিকে পা এবং পায়ের দিকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পরেন। এই জন্য ইন্দ্র তাঁকে অশুচি মনে করে, তাঁর গর্ভস্থ সন্তানকে সপ্তখণ্ডে বিভক্ত করেন। এই সময় গর্ভস্থ শিশু কেঁদে উঠলে, ইন্দ্র বলেন, মা রুদ (কেঁদো না)। পরবর্তী সময়ে এরা সাতটি পুত্র হিসাবে সপ্তলোকে বিচরণের আধিকার পান। এদেরকে সম্মিলিতভাবে মরুৎগণ বলা হয়।
২.
ঋগ্বেদের এক স্থানে তেষট্টি জন মরুতের উল্লেখ পাওয়া যায়।
পুরাণে এঁদের সংখ্য ৪৯ জন।
এরা ঋগ্বেদের প্রধান দেবতা।
তাঁরা ৩৩টি সূক্তে স্তুত হয়েছেন।
অপর দেবতা ইন্দ্র অগ্নি পুষার সাথে আরো ৯টি সূক্তে এঁদের উল্লেখ পাওয়া যায়।
এক্ষেত্রে এঁরা রুদ্র নামেও অভিহিত হয়েছেন।
এঁরা সকলেই
সহোদর,
সমবয়সী।
এঁদের গাত্রবর্ণ উজ্জ্বল ও জ্যোতির্ময়।
শরীর জুড়ে রয়েছে বিদ্যুতের প্রবাহ।
এঁদের হাতে রয়েছে কুঠার ও ধনুর্বাণ।
এঁরা দেবী
রোদসীকে (রোদসী অর্থে আকাশ,
বিদ্যুৎ)
বিদুন্ময় রথে বহন করেন।
আবার রোদসীকে মরুদ্গণের স্ত্রী হিসাবেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এঁরা বসুগণের সাথে একই রথে ভ্রমণ করেন।
ষাড়ের মতো গর্জন করে এঁরা যখন অগ্রসর হন,
তখন পৃথিবী
কম্পিত হয়।
মরুদ্গণের
প্রধান কাজ বৃষ্টিপাত করে সূর্যের চোখকে আবৃত করে রাখা।
তাই এঁদেরকে ইন্দ্রের সখা ও অনুচর বলা হয়।
সেই সূত্রে এঁরা ইন্দ্রাণীর বন্ধু হিসাবেও পরিচিত।
এঁরা গান ও স্তুতি দ্বারা বজ্র ও বৃষ্টির দেবতা ইন্দ্রের বল বৃদ্ধি করেন।
পক্ষান্তরে ইন্দ্র তাঁর সকল কাজ মরুত্দের সাহায্যেই করে থাকেন।