বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ
সমনাম: তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ
electromagnetic wave

শূন্যমাধ্যমে আলোর সঞ্চলন গতি বা দ্রুতিতে গতিশীল বিদ্যুৎ ও চুম্বকশক্তি আলোড়িত হয়। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ এবং চৌম্বকক্ষেত্র পরস্পর লম্ব দশায় থাকে এবং উভয় তরঙ্গ সঞ্চালন অভিমুখে সাথে লম্ব অবস্থায় থাকে। এই উভয় তরঙ্গের একীভূত দশাকে বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ নামে অভিহিত করা হয়।

মূলত কোনো পরিবাহকের চৌম্বকক্ষেত্রের উপস্থিতিতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়। এর ফলে বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় আবেশের সৃষ্টি হয়। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে এই ঘটনার প্রথম ব্যাখ্যা দেন মাইকেল ফ্যারাডে। ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দে জেমস ক্লার্ক এবং ম্যাক্সওয়েল বিদ্যুৎ ও চুম্বকের সরল ও প্রতিসম সংজ্ঞা উপস্থাপন করেন।

ম্যাক্সওয়েল তত্ত্ব অনুসারে, বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ হলো এক প্রকার অনুপ্রস্থ তরঙ্গ। কারণ এর তরঙ্গ মাধ্যমের কণাগুলোর কম্পনের দিকের সাথে সমকোণে অগ্রসর হয়। এই সূত্র থেকে উদ্ভব হয় বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ তত্ত্ব। এর চলমান রূপ নিচের চিত্রের মতো।


তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গের শূন্য মাধ্যমে সঞ্চালন ক্ষেত্রে তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গের গতিবেগ ও আলোর গতিবেগের সমান। অর্থাৎ
v=c0

আমরা পৃথকভাবে যদি শুন্য মাধ্যমে বিদ্যুৎক্ষেত্র এবং চৌম্বকক্ষেত্রকে দেখি তাহলে- দুটি পৃথক দশা পাবো।

ম্যাক্সওয়েল তত্ত্ব অনুসারে বিদ্যুৎক্ষেত্রে বিস্তার এবং চৌম্বকক্ষেত্রে বিস্তার বিশেষভাবে সম্পর্কযুক্ত। এই সম্পর্কটি হলো-

     Eo=c Bo
বা co= Eo / Bo
বা c= E/ B

ম্যাক্সওয়েল তত্ত্ব অনুসারে বিদ্যুৎচুম্বকীয় তরঙ্গের উৎস এবং এর তরঙ্গদৈর্ঘ যাই হোক না কেন, এর দ্রুতি সব সময় একটি মান অনুসরণ করবে এই মানটি হলো-

তরঙ্গধর্মী শক্তি হিসেবে একে অনেক সময় বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ হলো- বলা হয়। সংক্ষেপে একে বলা হয় - E-M radiation বা EMR । মূলত যখন কোনো বিদ্যুৎ আধান স্পন্দিত হলে বা ত্বরণগতি লাভ করে এবং ওই আধান থেকে একটি বিদ্যুৎশক্তিযুক্ত এবং চৌম্বক ক্ষেত্রবিশিষ্ট একটি তরঙ্গ উৎপন্ন হয় এবং তা বাইরে দিকে ধাবিত হয়। তখন এই তরঙ্গকে বলা হয় বিদ্যুৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ