শব্দ-তীব্রতা
Intensity
সাধারণত দেখা যায়, স্রোতা শব্দের উৎপত্তিস্থলের
যত বেশি কাছে থাকে, সে তত বেশি জোরে শব্দ শুনতে পায়। এর দ্বারা শব্দের
শব্দোচ্চতা
অনুভব করে। আবার শ্রোতা দুটি শব্দের একটির
শব্দোচ্চতা
থেকে অপরটির
শব্দোচ্চতা
কম অনুভব করে, তাহলে সে দুটি শব্দের ভিতর তুলনা করবে।
শব্দোচ্চতা'র
দ্বারা সে যে তুলনামূলক ধারণা পাবে, তা শব্দের তীব্রতার হ্রাসবৃদ্ধি হিসেবে বিবেচনা
করবে। মূলত শব্দের কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুতে গতিমুখে লম্বভাবে অবস্থিত একক
ক্ষেত্রফলের ভিতর দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যে পরিমাণ শব্দশক্তি প্রবাহিত হবে, তাকে ওই
বিন্দুর তীব্রতা বলা হবে।শব্দের তীব্রতা একটি ভেক্টর রাশি।
শব্দের তীব্রতা বৃদ্ধির কারণসমূহ
শব্দ-উৎসের কম্পাঙ্ক:
শব্দের তীব্রতা শব্দের কম্পাঙ্কের সমানুপাতিক। এই বিচারে শব্দের কম্পাঙ্ক
বৃদ্ধি পেলে শব্দের তীব্রতা বেড়ে যায়। যদি শব্দের তীব্রতা
I
হয় এবং কম্পাঙ্ক
f
হয় তবে,
এর গাণিতিক সূত্র হবে—
I
µ f2
মাধ্যমের ঘনত্ব:
শব্দ যে মাধ্যমের ভিতর দিয়ে
প্রবাহিত হয়, তার ঘনত্ব বৃদ্ধি করলে, শব্দের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে
শব্দের তীব্রতা মাধ্যমের ঘনত্বের সমানুপাতিক। যদি শব্দের তীব্রতা
I
হয় এবং
কম্পাঙ্ক ρ
হয় তবে,
এর গাণিতিক সূত্র হবে—
I
µ ρ
শব্দ উৎসের বিস্তার:
শব্দ-উৎসের কম্পনের
বিস্তারের কমবেশি হলে, শব্দের তীব্রতাও কমবেশি হয়। এই কারণে কোনো বস্তুতে মৃদু
আঘাত করলে মৃদু শব্দ হয়। আবার জোরে আঘাত করলে, এর কম্পনের বিস্তার বৃদ্ধি পায়
ফলে শব্দের তীব্রতা বৃদ্ধি পায়। এক্ষেত্রে শব্দের তীব্রতাকে বিস্তারের
সমানুপাতিক হিসেবে বিচার করা হয়। যদি শব্দের তীব্রতা
I
হয় এবং কম্পাঙ্ক
a
হয়
তবে, এর গাণিতিক সূত্র হবে—
I
µ a2
শব্দ উৎস
থেকে শ্রোতার দূরত্ব: কোনো
শব্দ-উৎস থেকে উৎসারিত শব্দ
যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে, তখন তার মোট শক্তির যদি অন্য কোনো কিছু দ্বারা শোষিত না
হয়, তবে ওই শক্তি সমভাবে চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু এই শক্তি দূরত্ব
অতিক্রমণকালে ক্ষমতা হারাতে থাকবে। এর ফলে দূরের শ্রোতা শব্দ শব্দটি অপেক্ষাকৃত
আস্তে শুনবে। যদি শব্দের তীব্রতা
I
হয়, শব্দের মোট শক্তির পরিমাণ
p
ধরা হয়
এবং এই শব্দ-অতিক্রমণদূরত্ব
1/πr2
হয়,
তবে
এর গাণিতিক সূত্র হবে—
শব্দের গতি:
শব্দের গতিবেগের উপর শব্দের তীব্রতা কমবেশি হয়। শব্দের
তীব্রতা মাধ্যমের শব্দের বেগের সমানুপাতিক। যদি শব্দের তীব্রতা
I
হয় এবং কম্পাঙ্ক
v
হয়
তবে, এর গাণিতিক সূত্র হবে—
I
µ v
শব্দ-উৎসের আকার: কোনো শব্দ-উৎসের আকার বড় হলে শব্দের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে।
পারিপার্শ্বিক প্রভাব: কোনো শব্দ-উৎসের কাছে কোনো অনুনাদী বস্তু বা শব্দ-প্রতিফলক থাকলে, শব্দের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে।
শব্দ-উৎস এবং শ্রোতার গতি: কোনো শব্দ-উৎস বা শ্রোতা যদি গতিশীল থাকে, বা উভয় গতিশীল হয়ে পরস্পরের কাছে আসে বা দূরে যায়, তাহলে শব্দের তীব্রতার হ্রাস বৃদ্ধি ঘটবে।