বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস
রাজকীয় শক্তি হিসেবে মুসলমানদের বাংলাদেশে আসার আগে, বাংলাদেশে মূলত দুটি ধর্ম প্রচলিত ছিল। এর একটি বৌদ্ধধর্ম অপরটি সনাতন ধর্ম। সনাতন ধর্ম আবার নানা ভাগে বিভক্ত ছিল। যেমন শৈব, শাক্ত, বৈষ্ণব সৌর ইত্যদি। এছাড়াও ছিল বর্ণমূলক প্রভেদ। এর প্রধান চারটি রূপ ছিল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। সাধারণ মানুষের সাধারণ কথোপকথনে একটি কথ্য ভাষারীতি গড়ে উঠেছিল। কিন্তু ধর্মাচরণের জন্য বৌদ্ধদের ভিতর পালি এবং সনাতন ধর্মালম্বীদের ভিতর প্রচলন ছিল সংস্কৃত ভাষার প্রচলন ছিল।
সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে মধ্যযুগের শুরুতে সুলতানদের পৃষ্ঠপোষকতা একটি বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। সেকালের রচনাতে তাঁর সে সকল সুলতানদের নামকীর্তনও করেছে তাঁদের সৃষ্টিতে। ভাষাশৈলী, বিষয় এবং পৃষ্ঠপোষকতার বিচারে চর্যাপদের পরবর্তী সাহিত্যসৃষ্টির যদি কালানুক্রমিক তালিকা তৈরি করা যায়, তা হয়তো কোনো কোনো ক্ষেত্রে সত্যাশ্রয়ী নাও হতে পারে। কিন্তু মোটাদাগে একটা ধারণা লাভ করা যেতে পারে।
মুসলমানদের বাংলায় আসার আগে, বাংলা ভাষায়
ছিল তৎসম, অর্ধ-তৎসম, তদ্ভব, অস্ট্রিক (মুণ্ডারি, সাঁওতালি), দ্রাবিড় শব্দ।
মুসলমনাদের সূত্রে বাংলা ভাষায় আরবি, ফারসি, তুর্কি ইত্যাদি ভাষার প্রচুর শব্দ
প্রবেশ করেছিল। কালক্রমে এই শব্দগুলো বাংলা ভাষার শব্দ ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে।
ইসলাম ধর্মের সাথে সম্পর্কিত নামাজ, রোজা, জাকত-এর মতো শব্দ ছাড়াও কলম, আদালত, আইন
ইত্যাদি বৈষয়িক শব্দও বাংলাতে প্রবেশ করেছিল। এর প্রভাব দেখা যায় এই সময়ের
কাব্যগুলোতে। ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনের পূর্বকাল পর্যন্ত, পরতুগিজ এবং বার্মিজ শব্দ
দু একটি প্রবেশ করেছে। ফরাসীদের সাথে বাণিজ্যের সূত্রে কিছু ফরাসি শব্দও বাংলাতে
প্রবেশ করেছিল। কিন্তু ইউরোপের ভাষাগুলোর ভিতরে ইংরেজি শব্দ সব চেয়ে বেশি প্রবেশ
করেছে। এবং এখনও তা অব্যাহত আছে। অন্যান্য জাপানি, চীনা, জার্মানি, রুশ ইত্যাদি
শব্দও ঢুকেছে ইংরেজদের সূত্রেই। ১২০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৩৫০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে
বাংলা সাহিত্যের নমুনা পাওয়া যায় না বলে, একে বাংলা সাহিত্যের অন্ধযুগ বলা হয়।
কিন্তু বাংলা ভাষার অন্ধযুগ নয়।
বঙ্গদেশের মুসলিম শাসন এবং তৎকালীন সময়ের বাংলা সাহিত্যের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
তুঘলকি শাসনামলের
(১৩২৮-১৩৪২ খ্রিষ্টাব্দ) শেষে, ১৩৪২ খ্রিষ্টাব্দে
সামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ বাংলার স্বাধীন সুলতান
ছিলেন। তিনি দিল্লীর আক্রমণ প্রতিহত করে স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ
রাখতে সক্ষম হন। এরপর তিনি বাংলার বাইরে আক্রমণ পরিচালনা করেন। ফলে বাংলার
জনপদগুলোকে যুদ্ধের তাণ্ডব সহ্য করতে হয় নি। ১৩৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ইলিয়াস শাহের
মৃত্যুর পর, তাঁর পুত্র
সিকান্দার শাহ
রাজত্ব লাভ করেন। ১৩৮৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত
তিনি রাজত্ব করেন। ১৩৫৯ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লীর সুলতান ফিরোজ তুঘলক বাংলা আক্রমণ
করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। এরপর তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র
আজম শাহ
১৩৮৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজত্ব লাভ করেন। ১৪০৯
খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি রাজত্ব করেন।
রাজকীয় শক্তি হিসেবে মুসলমানদের বাংলাদেশে আসার আগে, বাংলাদেশে মূলত দুটি ধর্ম
প্রচলিত ছিল। এর একটি বৌদ্ধধর্ম অপরটি সনাতন ধর্ম। সনাতন ধর্ম আবার নানা ভাগে
বিভক্ত ছিল। যেমন শৈব, শাক্ত, বৈষ্ণব সৌর ইত্যদি। এছাড়াও ছিল বর্ণমূলক প্রভেদ। এর
প্রধান চারটি রূপ ছিল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। সাধারণ মানুষের সাধারণ
কথোপকথনে একটি কথ্য ভাষারীতি গড়ে উঠেছিল। কিন্তু ধর্মাচরণের জন্য বৌদ্ধদের ভিতর
পালি এবং সনাতন ধর্মালম্বীদের ভিতর প্রচলন ছিল সংস্কৃত ভাষার প্রচলন ছিল।
উল্লিখিত রাজাদের ভিতর আজম শাহ প্রকৃত বিদ্যুৎসাহী ছিলেন। মধ্যযুগীয় বাংলা
সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে
আজম শাহ
পৃষ্ঠপোষকতা একটি বিশিষ্ট স্থান দখল করে আছে। তিনি পারস্যের কবি
হাফিজকে বাংলায় নিমন্ত্রণ করেছিলেন। কবি এর প্রত্যুত্তরে একটি গজল রচনা করে,
আজমশাহকে পাঠান। এই গজলটি হলো
ধারণ করা হয় তাঁর আমলে বিদ্যাপতি জীবিত ছিলেন। বিদ্যাপতি আনুমানিক ১৩৭০-১৪৬০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতর জীবিত ছিলেন। এছাড়া বিদ্যাপতির সমসাময়িক কালে ছিলেন করেছিলেন বড়ু চণ্ডিদাস (১৪০০-১৪৩৩ খ্রিষ্টাব্দ)। তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থ শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। ১৪০৯ খ্রিষ্টাব্দে আজম শাহ মৃত্যুবরণ করলে, তাঁর পুত্র হামজা শাহ সিংহাসন লাভ করেন। ১৪১৩ খ্রিষ্টাব্দে হামজা শাহ মৃত্যবরণ করেন। এরপর সুলতান হন শিহাবুদ্দিন বায়াজিদ শাহ। এই সময় গণেশ নামক এক হিন্দু সামন্ত বাংলার শাসক হয়ে উঠেন। ১৪১৪ খ্রিষ্টাব্দে ফিরোজশাহকে হত্যা করে রাজা গণেশ রাজত্ব লাভ করেন। কিন্তু বাংলার মুসলমান প্রজাদের হিন্দু রাজার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলেন স্থানীয় দরবেশ সম্প্রদায়। এছাড়া দরবেশরা জৌনপুরের সুলতান ইব্রাহিম শর্কীকে বাংলা আক্রমণে উৎসাহিত করেন। এই অবস্থায় গণেশের পুত্র যদু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে (জালালউদ্দিন নাম ধারণ করেন) ইব্রাহিম শর্কীকে সন্তুষ্ট কররে। ইব্রাহিম পরে পুনরায় জৌনপুরে ফিরে যান। এরপর যদুকে নামে মাত্র সুলতান রেখে গণেশ রাজত্ব করেন। এরপর নিজেকে শক্তিশালী করে যদুকে সিংহাসনচ্যুত করেন। এরপর তিনি দরবেশদের কঠোর হস্তে দমন করেন। এই সময় ধীরে ধীরে তিনি সাধারণ মুসলমানদের মন জয় করে রাজত্বে শান্তি বজায় রাখতে সক্ষম হন। ১৪১৮ খ্রিষ্টাব্দে রাজা গণেশের মৃ্ত্যু হলে তাঁর পুত্র মহেন্দ্রদেব রাজত্ব লাভ করেন। এরপর ১৪১৮ খ্রিষ্টাব্দে জালালউদ্দিন মুসলমান আমীরদের সহায়তায় মহেন্দ্রদেবকে ক্ষমতাচ্যুত করেন।
নতুনভাবে ক্ষমতা লাভের পর জালালউদ্দিন রাজ্যে শান্তি আনেন এবং পরে তিনি পাণ্ডুয়া থেকে গৌড়ে রাজধানী স্থানান্তর করেন। তিনি সংস্কৃত পণ্ডিত বৃহস্পতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। রাজসভায় এই পণ্ডিতের বিশেষ প্রভাব ছিল। তিনি এই পণ্ডিতকে রায়মুকুট উপাধিতে ভূষিত করেন। ধারণা করা হয়, তাঁর উৎসাহেই কৃত্তিবাস বাঙ্গালায় রামায়ণ রচনা করেছিলেন।
১৪৩১ খ্রিষ্টাব্দে জালালউদ্দিন মৃ্ত্যবরণ করলে, তাঁর পুত্র সামসউদ্দিন আহমেদ রাজত্ব লাভ করেন। তাঁর কুশাসনে অতীষ্ট হয়ে বাংলার আমিররা ১৪৪২ খ্রিষ্টাব্দে তাঁকে হত্যা করে। এবং ইলিয়াস শাহের বংশধর নাসিরুদ্দিন মাহমুদকে সিংহাসনে বসান। তিনি রাজত্ব করেন ১৪৫৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। তাঁর মৃ্ত্যুর পর সিংহাসন লাভ করেন তাঁর পুত্র রুকনদ্দিন বরবক। ১৪৭৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বরবক মৃত্যুবরণ করেন। এরপর তাঁর পুত্র সামসউদ্দিন রাজত্ব লাভ করেন। তিনি রাজত্ব করেন ১৪৮১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত।
সামসউদ্দিনের সাহিত্যে অনুরাগ ছিল প্রবলভাবে। মালাধর বসু 'শ্রীকৃষ্ণ বিজয়' রচনা করেছিলেন ১৪৭৩ থেকে ১৪৮০ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে। সামসউদ্দিন তাঁর কাব্য প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে 'গুণরাজ খান' উপাধি দেন। ধারণা করা হয়, কবি জয়নুদ্দিন 'রসুল বিজয়' কাব্য রচনা করেছিলেন তাঁর রাজত্বকালে।
এরপর সিংহসনে আরোহণ করেন জালালউদ্দিন। ১৪৮৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করার পর, মুজফ্ফর নামক এক হাবসী কৃতদাস কর্তৃক তিনি নিহত হন। এবং এই মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ইলিয়াসশাহী রাজবংশের বিলুপ্তি ঘটে। এরপর মুজফ্ফর অত্যন্ত অত্যাচারী সুলতান ছিলেন। এই কারণে মন্ত্রী এবং প্রজাদের মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দেয়। এই সময় রাজ্যের প্রধান মন্ত্রী হুসেন শাহের নেতৃত্বে বিদ্রোহ চরম আকার ধারণ করে। বিদ্রোহীরা মুজফ্ফরকে হত্যা করে। ১৪৯৩ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার সিংহাসনে আলাউদ্দিন হুসেন শাহ বসেন।
হুসেন শাহ সাহিত্যানুরাগী ছিলেন। মনসামঙ্গলের কবি বিজয়গুপ্ত ও বিপ্রদাস তাঁর সময় জীবিত ছিলেন। ধারণা করা হয় বিজয়গুপ্ত তাঁর মনসামঙ্গল কাব্য রচনা করেছিলেন ১৪৯৫ খ্রিষ্টাব্দে। হুসেন শাহের সেনাপতি পরাগল খাঁ কবীন্দ্র পরমেশ্বর শ্রীকর নন্দীকে বাংলায় মহাভারত অনুবাদে উৎসাহিত করেন।
১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে হুসেন শাহের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র নসরৎ শাহ সিংহাসনে আরোহণ করেন। ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট বাবর পাণিপথের যুদ্ধে জয়লাভ করে পূর্ব-ভারতের দিকে অভিযান পরিচালনা শুরু করেন। তিনি নসরৎ শাহকে তাঁর আনুগত্যের দাবি করেন। নসরৎ শাহ এই দাবি না মেনে নানাভাবে বাবারকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাবর তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে- বাংলার দিকে অগ্রসর হন। ১৫২৯ খ্রিষ্টাব্দে উভয় রাজশক্তির মধ্যে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে নসরৎ শাহ পরাজিত হন। এরপর মৌখিকভাবে তিনি বাবরের আনুগত্য স্বীকার করেন। ১৫৩০ খ্রিষ্টাব্দে বাবরের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র হুমায়ুন সম্রাট হন। এই সময় মোগল বিরোধী রাজশক্তিগুলোকে একত্রিত করার জন্য, গুজরাটের বাহাদুর শাহের সাথে পরামর্শ শুরু করেন। কিন্তু ১৫৩২ খ্রিষ্টাব্দে নসরৎ শাহ মৃত্যুবরণ করলে এই আলোচনা থেমে যায়।
নসরৎ খাঁও তাঁর পিতা হুসেন শাহের মতো বিদ্যানুরাগী ছিলেন। তিনিও বাংলা কাব্য চর্চায় কবিদের বিশেষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন। সেকালের খ্যাতনামা গ্রন্থকার শ্রীকরনন্দী, কবিকঙ্কন প্রমুখ নসরৎ খাঁর অনুগ্রহ লাভ করেছিলেন।
মৃত্যুর আগে নসরৎ শাহ তাঁর ভাই আব্দুল বদরকে উত্তরাধিকার মনোনীত করেন। কিন্তু নসরৎ শাহের মৃত্যর পর, দরবারের প্রভাবশালী মহল নসরৎ শাহের পুত্র আলাউদ্দিন ফিরোজকে সিংহাসনে বসান। ১৫৩৪ খ্রিষ্টাব্দে খুলতাত মাহমুদ তাঁকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করেন। মাহমুদ অযোগ্য রাজা ছিলেন। ফলে দেশে অরজকতার সৃষ্টি হয়। বিহারের আফগান দলপতি শের খাঁ বাংলা আক্রমণ করেন ১৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দে। এই যুদ্ধে মাহমুদ শাহ পরাজিত হন এবং বাংলাদেশ থেকে বিতারিত হন। এরই সাথে সাথে ইলিয়াস শাহী রাজবংশের বিলুপ্ত ঘটে।
বিদ্যাসুন্দর (১৫৩২) আলাউদ্দীন ফিরোজ শাহের আদেশের দ্বিজ শ্রীধর এই কাব্য রচনা করেন।
শ্রীকৃষ্ণকৃর্তন।
১৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শের খাঁ বাংলার রাজধানী গৌড় অধিকার করেন। পূর্ব ভারতের একজন শক্তিশালী শাসকে পরিণত হন। তৎকালীন মোগল সম্রাট হুমায়ুন শেরখাঁ-এর ক্ষমতা বৃদ্ধিতে শঙ্কিত হয়ে শেরখাঁ-এর বিরুদ্ধে ১৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দে শেরখাঁর অধিকৃত চুনার দখল করেন। এর কিছুদিন পর হুমায়ুন বাংলা আক্রমণ করেন এবং গৌড় পর্যন্ত পোঁছে গৌড় অবরোধ করেন। শের খাঁ প্রত্যক্ষযুদ্ধে অবতীর্ণ না হয়ে গৌড় ত্যাগ করেন। হুমায়ুন প্রায় ৩ মাস গৌড় অধিকার করে বসে থাকেন। এই সময় শেরখাঁ বারাণসী, জৌনপুর ও কনৌজ দখল করে নেন। আগ্রার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে হুমায়ুন আগ্রার দিকে রওনা দেন। ফলে বাংলায় মোগল আধিপত্য শিথিল হয়ে যায়। ১৫৩৯ খ্রিষ্টাব্দের বক্সারের চৌসারে হুমায়ুনের সাথে শের খাঁ-র যুদ্ধ হয়ে। এই যুদ্ধে হুমায়ুন শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। এরপর শের খাঁ বাংলা, বিহার, জৌনপুরের সম্রাটে পরিণত হন। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে হুমায়ুন একটি বিশাল বাহিনী নিয়ে শের খাঁর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। এই যুদ্ধেও হুমায়ুন পরাজিত হন এবং রাজ্যচ্যুত হয়ে কাশ্মীরে পালিয়ে যান। শের খাঁর ভয়ে হুমায়ুন নানা স্থান পালিয়ে বেড়ান এবং অমরকোটের রাজপুতর রাজার আশ্রয় লাভ করেন। এই সময় কামরান তাঁকে বন্দী করার চেষ্টা করলে তিনি পারশ্যের শাহ্ তহমাম্প-এর কাছে আশ্রয় লাভ করেন। পরে পারশ্য সৈন্যের সহায়তায় ১৫৪৫ খ্রিষ্টাব্দে কাবুল ও কান্দাহার জয় করেন। ১৫৪৫ খ্রিষ্টাব্দে শের খাঁর মৃত্যুর পর, তার উত্তরাধিকারদের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে আফগান শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সুযোগে হুমায়ুন ১৫৫৫ খ্রিষ্টাব্দে লাহোর জয় করেন। একই বৎসরে তিনি দিল্লী ও আগ্রা দখল করেন। ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দে হুমায়ুন মৃত্যুবরণ করেন। পিতার মৃত্যুর পর ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ বৎসর বয়সে সম্রাট আকবর দিল্লীর সিংহাসনে বসেন।
এই দীর্ঘ সময় বাংলা আফগান শাসনে ছিল। ১৫৪৫ খ্রিষ্টাব্দে শের খাঁর মৃত্যুর পর, তাঁর এক আত্মীয় শূর খাঁ বাংলার শাসনকর্তা হ ন। কিছুদিন পর তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ১৫৬৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশে রাজত্ব করেন। ১৫৬৪ খ্রিষ্টাব্দে এই বংশের শেষ শাসককে পরাজিত করে বিহারের শাসনকর্তা কর্রানী বাংলাদেশ শাসন করা শুরু করেন এবং বাংলার সম্রাট হিসেবে ঘোষণা দেন। এই বংশের সুলতান সুলেমান আকবরের সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে নিয়েছিলেন। ১৫৭২ খ্রিষ্টাব্দে সুলেমানের পুত্র বায়েজিদ সুলতান হন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র দাউদ সুলতান হন। দাউদ মোগল আধিপত্য অস্বীকার করলে, আকবর টোডরমল এবং মুনিম খাঁকে দাউদের বিরুদ্ধে পাঠান। ১৫৭৫-৭৬ খ্রিষ্টাব্দের দিকে তুকরাই এবং রাজমহলের যুদ্ধে দাউদ খাঁ পরাজিত এবং নিহত হন।
১৫৭৬ খ্রিষ্টাব্দে কররানী রাজবংশের সুলতান দাউদ মোগলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা
করেন। এই বিদ্রোহ দমনের জন্য টোডরমল এবং মুনিম খাঁ নামক দুইজন মোগল সেনাপতি এই
বিদ্রোহ দমনে অগ্রসর হন। তুকরাই এবং রাজমহলের যুদ্ধের পর, সুলতান দাউদ পরাজিত ও
নিহত হলে, কাগজে কলমে বাংলাদেশ মোগল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু
প্রকৃতপক্ষে মোগলরা বাংলার উপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারে নাই। ফলে ঢাকা মোগলদের
শাসনধীনের বাইরেই থেকে যায়।
এরপর সম্রাট জাহাঙ্গীররের আমলে ১৬০৫ খ্রিষ্টাব্দের ভিতরে, পশ্চিম বাংলায় মোগল শক্তি
প্রতিষ্ঠা পায়। কিন্তু এই সময়, বাংলার বার ভুইয়াদের বিরোধিতার কারণে, পূর্ব ও
দক্ষিণ বাংলা মোগল শাসনাধীনের বাইরেই ছিল। এদের দমনের জন্য, সম্রাট জাহাঙ্গীর, ১৬০৮
খ্রিষ্টাব্দে ইসলাম খান চিশতীকে রাজমহলের সুবেদার নিযুক্ত করেন। ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দের
ভিতরে ইসলাম খা বার ভুইয়ার অনেকাংশ দমন করতে সক্ষম হন। এই সময় বাংলার ভৌগোলিক
অবস্থান বিবেচনা করে, তিনি ১৬১০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলার রাজধানী রাজমহল থেকে সরিয়ে
ঢাকায় স্থানান্তর করেন। এই সময় সুবাদার ইসলাম খান ঢাকার নাম পাল্টে রাখেন
জাহাঙ্গীরনগর।
১৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ঢাকা প্রাদেশিক রাজধানী ছিল। ১৬৩৯ খ্রিষ্টাব্দে শাহ সুজা
ঢাকা থেকে রাজমহলে রাজধানী স্থানান্তর করেন। শাহ সুজা'র পতনের পর ১৬৬০
খ্রিষ্টাব্দে সুবেদার মীর জুমলা আবার রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তর করেন। ১৬৬১
খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৬৬৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি বাংলার সুবাদার হিসেবে দায়িত্ব
পালন করেছিলেন। সুবেদার মীর জুমলার মৃত্যুর পর, বাংলাদেশের শাসনভার পান শায়েস্তা
খাঁ। এই সময় ঢাকা থেকে আসাম এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে মোগলরা বহু সামরিক অভিযান
পরিচালনা করেছে।
মধ্যযুগী বাংলা সাহিত্যের তালিকা
১৩৭০-১৪৬০ খ্রিষ্টাব্দ আনুমানিক। বিদ্যাপতির
বাংলা রচনাসমূহ।
১৪০০-১৪৩৩ খ্রিষ্টাব্দ আনুমানিক। শ্রীকৃষ্ণকীর্তন। বড়ু চণ্ডিদাস।
১৪১৮-৩১ খ্রিষ্টাব্দ। রামায়ণ। কৃত্তিবাস
১৪৭৩-৮০ খ্রিষ্টাব্দ। ভাগবত। (সংস্কৃত ভাগবতের ১০-১১ স্কন্ধের অনুবাদ) মালধর
বসু
শ্রীকৃষ্ণ বিজয়। মালধর বসু
রসুল বিজয়। যয়নুদ্দীন
১৪৯৪ খ্রিষ্টাব্দ। মনসামঙ্গল। বিজয়গুপ্ত
১৪৯৫-৯৬ খ্রিষ্টাব্দ। মনসা বিজয়। বিপ্রদাস পিল্লাই
১৪৯৭-৯৮ খ্রিষ্টাব্দ। গীৌরীমঙ্গল। শঙ্করকিঙ্কর মিশ্র
১৫১৩-১৯। মহাভারত। কবীন্দ্র পরমেশ্বর।
১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে। মহাভারত--এর অশ্বমেধ পর্ব। শ্রীকরনন্দী
১৫৩৮ খ্রিষ্টাব্দ। চৈতন্যভাগবত। বৃন্দাবন দাস।
১৫৬০-১৫৬৫। চৈতন্যমঙ্গল। লোচনদাস
১৬১২-১৬১৫ খ্রিষ্টাব্দ। চরিতামৃত। কৃষ্ণদাস কবিরাজ।
১৬৪৫-৫২ খ্রিষ্টাব্দ। পদ্মাবতী। আলাওল
বাংলাদেশে মুসলমানদের শাসনমালে নিম্নবর্ণের হিন্দুদের বিশাল অংশ
মুসলমান হয়ে গিয়েছিল। একই সাথে বৌদ্ধদের প্রভাব কমে গিয়েছিল আশঙ্কাজনকভাবে।
মুসলমানরা সুলাতনরা বৌদ্ধ এবং মুসলমান ছাড়া বাকি জনগোষ্ঠীর নাম দিয়েছিল হিন্দু। এই
হিন্দু শব্দটি তারা আমদানি করেছিল পারশ্য থেকে। উত্তর-পশ্চিম ভারতে তা ব্যাপকভাবে
গৃহীত হয়েছিল আগেই। বাংলাদেশে এই শব্দটি সনাতনধর্মীরাও গ্রহণ করে নিয়েছিল। এই সময়
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভিতর পৌরাণিক দেবদেবীর সাথে মিশে গিয়েছিল বাংলার লোকজ
দেবদেবী এবং এদের উপখ্যান। চণ্ডী, বাসুলি, বিষয়রি বা মনসার মতো লৌকিক দেবদেবীরা
বিশেষ স্থান দখল করে নিয়েছিল। মধ্যযুগে ধর্মানতরিত মুসলমানরাও এই সকল লৌকিক
দেবদেবীর অনুরক্ত ছিল। আফগান শাসনামলের শেষের দিকে হিন্দু-মুসলমানের ঐক্যের সূত্রে
সত্যপীরের পূজা চালু হয়েছিল। ১৪৮৬ খ্রিষ্টাব্দে শ্রীচৈতন্যদেবের জন্ম হয়। তাঁর
প্রচারিত বৈষ্ণব মত প্রাচীনপন্থী হিন্দুদের উজ্জীবিত করেছিল। অনেকে সনাতন ধর্মী
চৈতন্যদেবের বৈষ্ণব মতকে সানন্দে গ্রহণ করতে পারেন নি। হিন্দু ধর্মের অভ্যন্তরীণ
বিভাজন এবং মুসলমাদের প্রভাব মিলিত হয়ে একটি মিশ্র ধারা বাংলা সঞ্চলিত হয়েছিল। এই
সকল বৈষ্ণব ভক্তরা তাঁদের মতামত প্রতিষ্ঠা ও প্রচারের জন্য
রচনা করেছিলেন বৈষ্ণব পদাবলী। মুসলমান সাধক কবিরা তাঁদের মতকে প্রকাশ করার জন্য
রচনা করেছিলেন ধর্ম সাহিত্য। হিন্দু ভক্ত কবিরা রচনা করেছিলেন মঙ্গলকাব্য। কিন্তু
আদৃত হয়েছিল উভয় সম্প্রদায়ের মানুষকে।
মঙ্গল কাব্য
হিন্দুধর্মের ভক্ত কবিরা দেবতার আরাধনা, মাহাত্য-কীর্তন নির্ভর কাব্য। যা শ্রবণেও মঙ্গল হয়, এমন কি, যে কাব্য যার ঘরে রাখলেও মঙ্গল হয়, এমন বিশ্বাস গড়ে উঠেছিল এই কাব্য। মঙ্গলকাব্য ৫টি অংশে বিভাজিত ছিল। এর প্রথম অংশে ছিল দেব-দেবীর বন্দনা এবং দেবেদবীর উদ্দেশ্য কাব্যের উৎসর্গ বাণী। দ্বিতীয় অংশে ছিল কোনো কবি কর্তৃক কোনো আখ্যানের বর্ণনা। এই অংশে কবি নিজের পরিচয় তুলে ধরেন এবং যে দৈব দর্শনে তিনি কবিতা লিখতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন তার বর্ণনা। তৃতীয় অংশ দেবখণ্ড। এতে এক ঈশ্বরের সাথে স্থানীয় দেবীর সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ বর্ণনা করে। এই অংশের একটি পরিচিত অংশ হিসেবে প্রভু শিব সর্বদা একবার দর্শন দেন এই অংশে। চতুর্থ অংশে প্রধান বর্ণনা থাকে, সাধারণত এখানে দেবী অভিশপ্ত হয়ে স্বর্গ থেকে পতিত হন এবং স্বর্গীয় ধর্ম বিচ্যুত হন। তিনি তখন পুণর্জাগরণে নিমজ্জিত হন এবং মরণশীল হিসেবে পৃথিবীতে জীবনযাপন করেন। চূড়ান্তভাবে তিনি নিজেকে অর্চনীয় এক দেবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। এই গল্পের আরেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল তার কষ্ট ও কষ্টমোচন, এবং তার চরিত্র ও ব্যবহারের বর্ণনা দেয়া হয়। অধিকাংশ মঙ্গল কাব্য সাধারণ পয়ার ছন্দে রচিত।
মঙ্গলকাব্য (ধর্মমঙ্গল)
মঙ্গলকাব্যের একটি ধারায় শুধু হিন্দু ধর্মের পৌরাণিক আখ্যানের সাথে ধর্মীয় আদর্শ প্রাচারের উদ্দেশ্যে রচিত হতো। এই জাতীয় মঙ্গলকাব্যকে ধর্মমঙ্গল নামে অভিহিত করা হয়ে থাকে। এই ধারার কবিরা ছিলেন‒ আদি রূপরাম, কানাহরি দত্ত, খেলারাম, ঘনরাম চক্রবর্তী, দ্বিজ বংশী দাস, দ্বিজ প্রভারাম, দ্বিজ মাধব, বিজয়গুপ্ত, বিপ্রদাস পিপলাই, ময়ূর ভট্ট, মানিকরাম গাঙ্গুলি, রূপরাম, শ্যামপণ্ডিত, শ্রীশ্যাম পণ্ডিত, সীতারাম দাস। এঁদের ভিতর সর্বপ্রাচীন কবি ছিলেন ময়ুর ভট্ট। ধারণা করা হয় তিনি ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বিদ্যামান ছিলেন।মঙ্গলকাব্য (চণ্ডীমঙ্গল)
মঙ্গলকাব্যের এই ধারায় রচিত হয়েছে কালকেতু ও ধনপতি উপাখ্যান। চণ্ডীমঙ্গলের আদি কবি ছিলেন চতুর্দশ শতকের মাণিক দত্ত। এই ধারার অন্যান্য কবিরা ছিলেন মাধবাচার্য, মুকুন্দরাম চক্রবর্তী, মুক্তারাম সেন, দ্বিজ হরিরাম, ভাবানী শঙ্কর, জগদীশ প্রমুখ।মঙ্গলকাব্য (বিদ্যাসুন্দর উপখ্যান)
মঙ্গলকাব্যের এই ধারার কাহিনী সংস্কৃত কাব্য থেকে গৃহীত হয়েছিল। বিহলণ প্রণীত সংস্কৃত ভাষার কাব্য 'চৌর্যপঞ্চাশিকা'-য় এই আখ্যান রয়েছে। দীনেশচন্দ্রের মতে এইকাব্যের আদি রচয়িতা কবিকঙ্ক ছিলেন ময়মনসিংহ অঞ্চলের। অন্যদিকে দেখা যায় বাংলার সুলতান ফিরোজ শাহের আদেশে দ্বিজ শ্রীধর বিদ্যাসুন্দর রচনা করেছিলেন ১৫৩২ খ্রিষ্টাব্দের দিকে। এই বিচারে দ্বিজ শ্রীধরকে বিদ্যাসুন্দরের আদি কবি বলা যায়। এরপর অন্যান্য যাঁরা এই কাব্য রচনা করেছিলেন, তাঁরা হলেন- গোবিন্দদাস, কৃষ্ণরাম দাস, কবিশেখর বলরাম, চক্রবর্তী, ভারতচন্দ্র রায় গুনাকর, রামপ্রসাদ সেন, প্রাণরাম চক্রবর্তী, নিধিরাম আচার্য কবিরত্ন, কবীন্দ্র মধুসূদন, ক্ষেমানন্দ, বিশ্বেশ্বর দাস প্রমুখ।এঁদের ভিতর কবিকঙ্ক জনৈক মুসলমান পীরের আদেশে এই কাব্য রচনা করেছিলেন। ধারণা করা হয় কবিকঙ্ক সত্যপীরে বন্দনা করেছিলেন উক্ত পীরের স্থানে। মুসলমান কবিদের মধ্যে সাবিরিদ খান একটি বিদ্যাসুন্দর রচনা করেছিলেন।
মঙ্গলকাব্য (মনসা মঙ্গল)
মঙ্গলকাব্যের এই ধারায় প্রায় শতাধিক কবি কাব্য রচনা করেন। বেহুলা-লক্ষীন্দরের কাহিনী অবলম্বনে এই কাব্যের সূচনা ঘটেছিল কবি কানা হরিদত্ত। এরপর মনসা মঙ্গল রচনা করেন বিপ্রদাস, নারায়ণ দেব, দ্বিজ বংশীদাস, ষষ্ঠীবর, ক্ষেমানন্দ সেন, কেতকা দাস, গঙ্গাদাস, সেন, ষষ্ঠীবর দত্ত, রামজীবন বিদ্যাভূষণ, জানকীনাথ, বৈদ্যনাথ জগন্নাথ, রাজা রাজসিংহ, গোপালচন্দ্র মজুমদার।
মনসামঙ্গলের বাইরে মুসলমান কবিরা রচনা করেছিলেন সত্যপীরের আখ্যান। তবে এই আখ্যান রচনায় বেশ কিছু হিন্দু কবির নাম পাওয়া যায়। এই ধারার উল্লেখযোগ্ কবিরা ছিলেন- শেখ ফয়জুল্লাহ, গরীবুল্লাহ শাহ, আরিফ, রাজেশ্বের ভট্টাচার্য, ফকীর রাম, দাস, অযোধ্যারাম দাস, কবিচন্দ্র প্রমুখ। মুসলমান কবিরা ধর্মীয় বোধে কিছু সত্যাসত্য নির্ভর কাব্য রচনা করেছিলেন। এর ভিতরে ছিল, আমীর হামজা, হানিফার লাড়াই, আবু শামা ইত্যাদি।
এই সকল কাব্যের কাহিনীগত বিষয় যাই থাক, বাংলা ভাষার ক্রবিবর্তনের ধারায় একটি নবতর বিষয় যুক্ত হয়েছিল।
সূত্র :
পুরাতন বাংলা সাহিত্যের তথ্য ও কালক্রম/সুখময় মুখোপাধ্যায়
বাংলা সাহিত্যের কথা/মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
বাংলা সাহিত্যের সমগ্র ইতিহাস/ক্ষেত্রগুপ্ত
বাংলাদেশের
ইতিহাস/রমেশচন্দ্র মজুমদার।
ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।