Kingdom: Animalia |
টির্যানোসোরাস/টাইর্যানোসোরাস
ইংরেজি : Tyrannosaurus।
বৈজ্ঞানিক নাম—
Albertosaurus sacrophagus।
Tyrannosauridae
গোত্রের
ডাইনোসর
বিশেষ। এর উচ্চারণ টির্যানোসোরাস বা টাইর্যানোসোরাস। এই নামের অর্থ-স্বৈরাচারী
শাসক টিকটিকি (tyrant
lizard=Gr. tyrannos "king, tyrant, despot" + Gr. sauros "lizard")।
বিশাল আকৃতি,
হিংস্রতা ও দুর্দমনীয় চরিত্রের জন্য এর এই নাম দেওয়া হয়েছে। ১৯০৫ সালে অসবর্ন (Osborn)
এর নামকরণ করেন।
এরা ছিল মাংসাশী। ৮ কোটি ৫০ লক্ষ বৎসর থেকে ৬ কোটি ৫০ লক্ষ বৎসর আগে (ক্রেটাসিয়াস
অধিযুগ)
এরা আদি উত্তর আমেরিকা ও মধ্য এশিয়া (মঙ্গোলিয়া,
চীন) অঞ্চলের নদী সংলগ্ন স্থানে বা খোলামেলা জঙ্গলে বাস করতো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের Museum of Natural History i -এ রক্ষিত কঙ্কাল |
১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে এদের জীবাশ্মের প্রথম সন্ধান পান ব্রানহাম ব্রাউন (Brown)। ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে হেনরি ফেয়ারফিল্ড অসবর্ন (Henry Fairfield Osborn) এর নামকরণ করেন। এ যাবৎ এর প্রায় ৩০টি জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর অধিকাংশই পাওয়া গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এর বেশ কিছু প্রজাতির জীবাশ্ম পাওয়া গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা, টেক্সাস, উটাহ, ওয়িমিং; কানাডার আলবের্তা ও সাসকাচেওয়ান এবং এশিয়ার মঙ্গোলিয়াতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের Museum of Natural History-এ এর কঙ্কাল রক্ষিত আছে।
এদের দৈর্ঘ্য ছিল ৪০ ফুট (১৩ মিটার),
নিতম্বের কাছে উচ্চতা ছিল ১৫-২০ ফুট (৪.৬-৬ মিটার) এবং ওজন ছিল প্রায় ৬ টন। এরা ছিল
দ্বিপদী। পিছনের পা ছিল অনেকটা পাখির মতো। প্রতিটি পায়ে ছিল তিনটি বড় বড় আঙুল। এরা
তাদের এই দীর্ঘ ও শক্তিশালী পায়ের সাহায্যে প্রায় ১৫ মাইল/ঘন্টা (২৪কিমি/ঘন্টা)
বেগে ছুটতে পারতো। অন্যান্য মাংসাশীদের তুলনায় এদের সামনের দুটি হাত ছিল খুবই
ছোট। হাতের দৈর্ঘ্য ছিল ৫ ফুট (১.৬ মিটার)। সামনের হাতে মাত্র দুটি আঙুল ছিল।
শিকার ধরার জন্য এরা এই হাতকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার পরিবর্তে শক্তিশালী
চোয়াল ও দাঁত ব্যবহার করতো। হিংস্রতা ও শিকারের ক্ষিপ্রতার জন্য একে ডাইনোসরদের
রাজা বলা হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ ডাকোটা যাদুঘরে রক্ষিত দাঁত |
এরা তৃণভোজী ও মাংসাশী উভয় ধরনের ডাইনোসরকে হত্যা করতে সক্ষম ছিল। এদের চোয়ালে ছিল আসুরিক শক্তি। চোয়ালের দৈর্ঘ্য ছিল ৪ ফুট (১.২ মিটার)। মুখে মোট ৫০-৬০টি সুতীক্ষ্ণ দাঁত ছিল। এই দাঁতগুলোর দৈর্ঘ্য গড়ে ৯ ইঞ্চি (২৩ সেন্টিমিটার) পরিমিত ছিল। এদের কোন দাঁত নষ্ট হলে, পুনরায় নূতন দাঁত গজাতো। এরা তাদের শক্তিশালী চোয়াল এবং দাঁতের সাহায্যে যে কোন প্রাণীর হাড় গুঁড়ো করে ফেলতে পারতো। অন্য কোন ডাইনোসর ও অন্যান্য প্রাণীদের এরা ভয় করতো না। এদের একমাত্র শত্রু ছিল অন্য স্বগোত্রীয় ডাইনোসর। এরা একবারে প্রায় ৫০০ পাউন্ড মাংস আহার করতে পারতো।
টির্যানোসোরাস-এর প্রজাতি সমূহ
Tyrannosaurus rex |
Tyrannosaurus bataar |
Tyrannosaurus rex : এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে ১৯০৫ সালে। প্রাপ্তিস্থান কানাডার (আলবের্তা এবং সাসকাচেওয়ান), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (কলোরোডা, মন্টানা, নিউ মেক্সিকো, উত্তর ডাকোটা এবং ওয়িমিং।
Tyrannosaurus bataar : এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে ১৯৫৫ সালে। প্রাপ্তিস্থান মালভী, চীন, মঙ্গোলিয়া। এদের ওজন ছিল ৪ থেকে ৫ টন।
Tyrannosaurus efremovi
: এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে ১৯৫৫ সালে। প্রাপ্তিস্থান মালভী, মঙ্গোলিয়া। এদের ওজন ছিল ২ থেকে ৩ টন। অনেকে মনে করেন, এটি কোন পৃথক প্রজাতি নয়। এর যে জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে, তা হলো- অল্পবয়স্ক Tyrannosaurus bataar-এর।Tyrannosaurus lancesis: এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে ১৯৪৬ সালে। প্রাপ্তিস্থান যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা।
Tyrannosaurus lanpingensis : জীবাশ্ম পাওয়া গেছে ১৯৭৫ সালে। প্রাপ্তিস্থান চীনের ইউনানন প্রদেশের আপার জিংশিয়ান ফরমেশনে।
Tyrannosaurus luanchuanensis : প্রাপ্তিস্থান চীনের হেনান-এর কুইবা ফরমেশনে। ১৯৭৯ সালে ডং এই প্রজাতি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেন।
Tyrannosaurus movojilovi : এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে ১৯৫৫ সালে। প্রাপ্তিস্থান মালভী, মঙ্গোলিয়া।
Tyrannosaurus stanwinstonorum : এর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে চীনে।
সূত্র
:
ডাইনোপেডিয়া। কামরুল হায়দার। বলাকা বুকস ইন্টারন্যাশনাল। শ্রাবণ ১৪১২, জুলাই
২০০৫।
http://en.wikipedia.org/wiki/