মূল
বানান বিশ্লেষণ:
ম্+উ+ল্+অ।
উচ্চারণ:
[মুল্]
[mul]
মুল্ [মু এর পরের ল রুদ্ধ হয়ে একাক্ষর মূল্ ধ্বনি তৈরি করবে]
শব্দ-উৎস:
সংস্কৃত मूल (মূল)>বাংলা মূল
রূপতাত্ত্বিক
বিশ্লেষণ: Öমূল্
(স্থিতি করা)
+
অ (অচ্) =মূল
অথবা
মূ
(বন্ধন করা)
+
ল (ক্ল)=মূল
পদ: বিশেষ্য
ঊর্ধ্বক্রমবাচকতা {| উদ্ভিদাঙ্গ | উদ্ভিদাংশ | প্রাকৃতিক লক্ষ্যবস্তু | সমগ্র | দৈহিক লক্ষ্যবস্তু | দৈহিক সত্তা | সত্তা |}
অর্থ:
ভাস্কুলার উদ্ভিদের
একটি অঙ্গ।
সমার্থক শব্দাবলি: মূল, শিকড়।
ইংরেজি: root
বিস্তারিত অর্থ: ভাস্কুলার উদ্ভিদের
এমন একটি অঙ্গ, যার সাহায্যে উদ্ভিদ নিজেকে কোনো ভিত্তির সাথে নিজেকে আটকে রাখে এবং
দেহের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান শোষণের মাধ্যমে গ্রহণ করে। এর সাথে কোনো ফুলের কুঁড়ি
থাকে না। অধিকাংশ উদ্ভিদের মূলের রঙ সাদাটে হয়। তবে গাঁজর, শালগম জাতীয় মূল
ক্রোমোপ্লাস্টের কারণে রঙিন হয়। সাধারণত মূলে ক্লোরিফিল থাকে না। কিন্তু জলজ ফার্ন
Azola-র
মূলে ক্লোরোফিল দেখা যায়।
মূলের দৈর্ঘ্য কয়েক সেন্টিমিটার থেকে ৬০-৭০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। পানা
জাতীয় জলজ উদ্ভিদের মূল কয়েক সেন্টিমিটার হলেও মরুভূমিতে কোনো কোনো গুল্মের মূল ৭০
মিটার পর্যন্ত মাটির গভীরে প্রবেশ করে। সাধারণত উদ্ভিদের কাণ্ডের চেয়ে মূল ছোটো হয়ে
থাকে। কিন্তু অনেক উদ্ভিদের মূলের দৈর্ঘ্য অনেক বড় হয়। যেমন ম্যাপল গাছের মূল প্রায়
গাছের উচ্চতার সমান হয়। শীতপ্রধান অঞ্চলের উদ্ভিদগুলোর মূল মাটির ১০ সেন্টিমিটার
গভীরে পৌঁছায়। কিছু কিছু গাছের মূল ২ মিটার পর্যন্ত মাটির গভীরে প্রবেশ করে।
গ্রীষ্মপ্রধান এবং শুষ্ক অঞ্চলে মূল মাটির আরও গভীরে প্রবেশ করে। অন্যদিকে
জলাভূমির উদ্ভিদের মূল মাটির খুববেশি গভীরে পৌঁছায় না।
অনেক গাছের মূল ঘাসের মতো সরু হয়, আবার অনেক
গাছের মূলের বেড় প্রায় ১০ সেন্টিমটার পর্যন্ত দেখা যায়। তবে সকল মূলের প্রান্তীয়
ভাগ সরু হয়ে যায়। এই সকল সরু অংশের সাথে পশমের মতো সরু অংশ থাকে। এদেরকে বলা হয়
মূলরোম। মূলরোমের মাথায় একধরনের জলীয় উপাদান শোষণ উপযোগী টুপি থাকে। একে বলা হয়
মূলত্র। জলজ উদ্ভিদের মূলের অগ্রভাগে মূলত্রের পরিবর্তে থাকে মূলথলি। এর সাহায্যে উদ্ভিদ
পানি এবং অন্যান্য খনিজ লবণ মাটি থেকে শোষণ করে। মূলের দ্বারা শোষিত উপাদান
উদ্ভিদের জাইলেমের ভিতর দিয়ে কাণ্ডে পৌঁছায়।
মূল সাধারণত ভ্রূণমূল (radicle)
থেকে উৎপন্ন হয়। সকল উদ্ভিদের মূল একই ধরণের হয় না। গঠন ও
অন্যান্য বৈশিষ্টের বিচারে মূলকে প্রাথমিকভাবে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগ দুটি
হলো−
স্থানিক বা প্রধান মূল
(Tap
root):
ভ্রূণমূল
বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে প্রধান মূল সৃষ্টি হয়। এক্ষত্রে ভ্রূণমূল নষ্ট হয়ে যায় না।
প্রধান মূল মাটির গভীরে প্রবেশ করে। আর এই প্রধান মূল থেকে শাখা মূল ও প্রশাখা
মূল বের হয়ে মাটির নিচে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে মাটির সাথে উদ্ভিদের সুদৃঢ় বন্ধন
সৃষ্টি হয়।
অস্থানিক মূল
(Adventitious
root):
ভ্রূণদশা
থেকে উদ্ভিদের বৃদ্ধি প্রাপ্তির সময়, ভ্রূণমূল নষ্ট হয়ে যায়। এরপর কাণ্ড থেকে
অসংখ্য মূল সৃষ্টি হয়ে, মাটির ভিতরে মাটির দিকে, বা মাটির দিকে বৃদ্ধি পায়।
অস্থানিক মূলের প্রকৃতি অনুসারে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন-
গুচ্ছমূল
পত্রজমূল
কাণ্ডজমূল