অ (অচ্)
সংস্কৃত ব্যাকরণে অ (অচ্) কৃৎপ্রত্যয় এবং তদ্ধিত প্রত্যয় হিসেবে পাওয়া যায়। নিচে উভয় প্রত্যয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

১. সংস্কৃত
কৃৎপ্রত্যয়  চ্ (৩/২/৯ থেকে ১০১। অষ্টাধ্যায়ী/পাণিনি।

বিভিন্ন বাংলা অভিধান এবং ব্যাকরণে এই প্রত্যয় যেভাবে উল্লেখ করা হয়, তার কিছু উল্লেখযোগ্য নমুনা দেখানো হলো। 

এই প্রত্যয়টি ক্রিয়ামূলের সাথে যুক্ত হওয়ার পর, এর 'চ' বর্জিত হয় এবং এবং অবশিষ্ট অ-বর্ণটি ক্রিয়ামূলের সাথে যুক্ত হয়। এছাড়া এই প্রত্যয় ক্রিয়ামূলের সাথে যুক্ত হওয়ার সময় ক্রিয়ামূলকে আংশিক পরবর্তন করে। এই প্রত্যয়জাত যে সকল শব্দ বাংলাতে ব্যবহৃত হয়, তার তালিকা নিচে দেওয়া হলো

গণ্ (গণনা করা) + অ (অচ্)=গণ
জি (জয় করা) +অ (অচ্) =জয় (জয় লাভ হয়েছে এমন অবস্থা)।
নৄ (পাওয়া) +অ (অচ্) =নর

বর্ণ্ (রঞ্জিত করা, চিত্রিত করা, চিহ্নিত করা, বর্ণনা করা) + অ (অচ্)= বর্ণ
ভী (ভয় করা) +অ (অচ্) =ভয় (ভয় প্রাপ্ত হয়েছে এমন অবস্থা)।

লিশ্ (অল্প হওয়া) + অ (অচ্) = লেশ (অল্পতা)
লী (লীনভাব) + অ (অচ্) =লয়

উদ্ + (গমন করা) + অ (অচ্) =উদ

হৃ(হরণ করা) +অ (অচ্) =হর।

বৃষ্  (হরণ করা) +অ (অচ্) =বর্ষ

ণিজন্ত ধাতুর পরে এই প্রত্যয় যুক্ত হলে- ক্রিয়ামূলের শেষের ই-কার লোপ পায়, যেমন
       
দারি + অ (অচ্) =দার।


এই প্রত্যয় যে সকল শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে, নতুন শব্দ তৈরি হয় এবং বাংলাতে ব্যবহৃত হয়- তার তালিকা তুলে ধরা হলো।

অংশ্ (ভাগ করা) +অ (অচ্)=অংশ

অক্ (বক্র গমন করা) +অ (অচ্) =অক
অধি- Ö ঈশ্ (অধিপতি) +অ (অচ্)=অধীশ

অপ +অন্ (বাঁচা) + অ (অচ্)=অপান

Öঅর্থি {Öঅর্থ  (বিবেচনা করা)+ই (ণিচ)}+অ (অচ্)=অর্থ
খন্ (খনন করা) + অ (অচ্), ম (মুট্) আগম=মুখ

ছন্দ্ (আচ্ছাদন করা) + অ (অচ্)=ছন্দ

জল্ (আচ্ছাদন করা) +অ (অচ্)=জাল বা জল

দরিদ্রা (দুর্গতি) +অ (অচ্)=দরিদ্র

ধন্ (ধান্যোৎপাদন>উৎপাদন) +অ (অচ্)=ধন
ধৃ  (ধারণ করা) + অ (অচ্)=ধর

 নদ্ (অব্যক্ত ধ্বনি প্রবাহ) + অ (অচ্)= নদ

নাথ্ (প্রার্থনা) + অ (অচ্)=নাথ

মন্ত্র্ (গুপ্ত পরিভাষণ) +অ (অচ্)=মন্ত্র
Öমূল্ (স্থিতি করা) + অ (অচ্) =মূল

যুধ্  (যুদ্ধ করা) + অ (অচ্)=যোধ

যুষ্ (সেবা করা) + অ (অচ্) +আ (টাপ্)}=যোষা

শূর্ (সাহস) +অ (অচ্)=শূর

স্তন্ (শব্দ করা)+অ (অচ্)=স্তন
স্বৃ (শব্দ করা) +অ (অচ্) =স্বর

হৃ (হরণ করা)+ অ (অচ্)=হর
হ্লাদ্ (আনন্দিত হওয়া) +অ (অচ্)=হ্লাদ

 

২. সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়
এই প্রত্যয় যে সকল শব্দের সাথে যুক্ত হয়ে, নতুন শব্দ তৈরি হয় এবং বাংলাতে ব্যবহৃত হয়- তার তালিকা তুলে ধরা হলো।

অর্ধ +অ (অচ) অস্ত্যার্থে=অর্ধ

অহঙ্কার +অ (অচ) অস্ত্যার্থে=অহঙ্কৃত
পাপ +অ (অচ) অস্ত্যার্থে =পাপ

হিম (তুষার বা শিশির) +অ (অচ্)=হিম


                


সূত্র :