আ ( প্রত্যয়)
কৃৎপ্রত্যয় এবং তদ্ধিত প্রত্যয়। বাংলা এবং সংস্কৃত শব্দ গঠনে এই প্রত্যয় ব্যবহৃত হয়।

১ বাংলা কৃৎপ্রত্যয় ২ বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয়
    বিশেষ্য বাচক                হাত +আ =হাতা।  হিআ>হিয়া, খেলনা, দোলনা।
    বিশেষণ বোধক               আধ +আ =আধা। যেমন- আধা পথ,  কাটা মাথা
    সর্বনাম                         আম +আ =আমা। এরূপ : তোমা, যা, তা।

বিবিধ অর্থবোধক শব্দ সৃষ্টিতে ব্যবহৃত আ প্রত্যয় ।
    অবজ্ঞায় : পাগল +আ = পাগলা।       এরূপ : অকর্মা, কাহ্নাআ, গোবরা, বাদলা, মটকা, শ্যামা।
    জাত অর্থে : পান +আ =পানা।          এরূপ : ভয়সা, মহিষা
    ‌দেশবাচক : কাশ্মির +আ =কাশ্মিরা     এরূপ : কাশ্মিরা কন্যা
    বৃহৎ অর্থে : ঘড় +আ =ঘড়া।            এরূপ : খোন্তা, ঝোড়া, ঢাকনা, হাঁড়া।
    যুক্তার্থে : বেসুর +আ= বেসুরা।         এরূপ : তেলা, নামা, লোনা, 
    সাদৃশ্যার্থে : বাঘ+আ = বাঘা।           এরূপ : জলুআ, হাতা
    স্থান অর্থে : একতল +আ =একতলা    এরূপ : দোতলা, তেতলা।
    স্বার্থে : গোয়াল +আ =গোয়ালা।        এরূপ : মাথা, ল্যাজা
    স্বরসঙ্গতি : ঘোড় +আ =ঘোড়া           এরূপ  : কাঁচা, প্রেমা

৩. সংস্কৃত আ (টাপ্) স্ত্রী-প্রত্যয়
সংস্কৃত শব্দের সাথে এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে স্ত্রীবাচক শব্দ সৃষ্টি করে। বিভিন্ন গ্রন্থে এই প্রত্যয়টি বিভিন্ন ভাবে লিখিত হয়ে থাকে। যেমন ― পাণিনি এই প্রত্যয়কে টাপ্ হিসাবে উল্লেখ করেছিলেন। এই প্রত্যয়ের ট্ এবং প্ ইৎ হয় এবং আ বর্ণ শব্দের সাথে যুক্ত হয়। এই কারণে এই গ্রন্থে একে আ (টাপ্) হিসাবে উল্লেখ করা হলো। নোচে এই প্রত্যয় ব্যবহারের বিধি এবং ফলাফল উল্লেখ করা হলো

১. ক্রিয়ামূলের শেষে প্রত্যয় যুক্ত হয়ে ভাববাচ্য বা কর্তৃবাচ্য পদ তৈরি করে। এর সাথে পরে এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে বিশেষ্য তৈরি করে, এবং তা স্ত্রীলিঙ্গ-বাচক পদ হিসাবে উল্লেখ করা হয়। যেমন
                আ- ভা (দীপ্তি) + অ (অঙ) ভাববাচ্য + আ (টাপ্) স্ত্রী-প্রত্যয়) = আভা
                অ (অব্যয়)-
(গমন করা, পাওয়া) + ত (ক্ত)}, কর্তৃবাচ্য} + আ (টাপ্)=অঋণা

   শব্দের শেষে এই যুক্ত হয়ে স্ত্রীবাচক শব্দে পরিণত হয়। এই জাতীয় শব্দগুলো হলো― আভা

২. যে সকল শব্দের শেষে ক আছে, তাদের সাথে এই প্রত্যয় যুক্ত হলে- পূর্ব বর্ণের সাথে ই-কার যুক্ত হয়। যেমন-
                                   নায়ক + আ (টাপ্) =নায়িকা
                                   নাটক + আ (টাপ্) =নাটিকা।

এই জাতীয় শব্দের তালিকা নিচে তুলে ধরা হলো-অংশক>অংশিকা, অধ্যাপক>অধ্যাপিকা, কারক>কারিক, নাটক>নাটিক, নায়ক>নায়িকা, গ্রাহক>গ্রাহিকা

তবে অষ্টক, ইষ্টক, সেবকা, কন্যকা, করকা, ক্ষিপকা, চটকা, তারকা, অধিত্যকা, উপত্যকা ইত্যাদি শব্দের ক্ষেত্রে আ ধ্বনি যুক্ত হয়।