প্লাস্টিড (জীবকোষ)
Plastides
উদ্ভিদ কোষের সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত একটি অঙ্গাণু। ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং প্রাণীকোষে সাধারণত
প্লাস্টিড পাওয়া যায় না।
প্লাস্টিডের প্রধান কাজ হলো- খাদ্য প্রস্তুত করা, খাদ্য সঞ্চয় করা, উদ্ভিদ দেহকে বর্ণময় ও আকর্ষণীয় করা এবং পরাগায়ণে সাহায্য করা।
ধারণা করা হয়, আদি জীবকোষে প্লাস্টিডের আবির্ভাব ঘটেছিল
মেসোআর্কিয়ান যুগ অধিযুগের শেষের দিকে।
গ্রিক πλαστός; plastós:
শব্দ থেকে
Plastid
শব্দটি গৃহীত হয়েছে।
উদ্ভিদ কোষে প্লাস্টিড আবিষ্কার ও নামকরণ করেছিলেন
Ernst Haeckel, but A. F. W।
রঙের ভিত্তিতে প্লাস্টিডকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগগুলো হলো-
(Chloroplast):
সবুজ রঙের প্লাস্টিডদের বলা হয় ক্লোরোপ্লাস্ট। এই জাতীয় ক্লোরোপ্লাস্টে সবুজ
বর্ণের ক্লোরোফিল
নামক উপকরণ থাকে। এর মাধ্যমে উদ্ভিদ-কোষ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া সম্পাদন করে।
গাছের পাতা,কচি কাণ্ড ও অন্যান্য সবুজ অংশে এদের পাওয়া যায়।
প্লাস্টিডের গ্রানা অংশ সূর্যালোককে আবদ্ধ করে রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে।
এ আবদ্ধ সৌরশক্তি স্ট্রোমাতে অবস্থিত উৎসেচক সমষ্টি, বায়ু থেকে গৃহীত কার্বন ডাই-অক্সাইড ও
কোষস্থ পানি থেকে সরল শর্করা উৎপন্ন করে। এই প্লাস্টিডে ক্লোরোফিল থাকে তাই এদের সবুজ দেখায়।
এছাড়া এতে ক্যারোটিনয়েড নামক রঞ্জক ও থাকে।
ক্রোমোপ্লাস্ট
(Chromoplast):
সবুজ ছাড়া নানা রঙের হতে পারে।
এসব প্লাস্টিডে জ্যান্থফিল,ক্যারোটিন,ফাইকোএরিথ্রিন,ফাইকোসায়ানিন ইত্যাদি বর্ণের কণিকা থাকে। এর ফলে উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ
বিভিন্ন বর্ণের সৃষ্টি করে। এই প্লাস্টিডের প্রভাবেই ফুল,পাতা ও উদ্ভিদের অন্যান্য অংশ আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
রঙিন ফুল,পাতা ও গাজরের মূলে এদের পাওয়া যায়। ফুলকে আকর্ষণীয় করে পরগায়নে সাহায্য করা এদের প্রধান কাজ।
এ ছাড়া এরা বিভিন্ন প্রকার রঞ্জক পদার্থ সংশ্লেষণ ও জমা করে।
লিউকোপ্লাস্ট
(Leucoplast):
যেসব প্লাস্টিড কোনো রঞ্জক পদার্থ বা
ক্লোরোফিল
থাকে না, সে সকল প্লাস্টিডকে লিউকোপ্লাস্ট বলা হয়। এদের রঙ হয় সাদা ।
ক্লোরোফিল না থাকায়
এই জাতীয় প্লাস্টিড সালোকসংশ্লেষণে অংশগ্রহণ করে না। সাধারণত যেসব কোষে সূর্যের আলো পৌঁছায়না
সেখানে এদের বেশি পাওয়া যায়। যেমন-মূল,ভ্রুণ,জননকোষ ইত্যাদি। এদের প্রধান কাজ খাদ্য সঞ্চয় করা।
অনেক সময় আলোর সংস্পর্শে এসে লিউকোপ্লাস্ট ক্রোমোপ্লাস্ট বা ক্লোরোপ্লাস্টে রূপান্তরিত হয়।