Gorilla Beringei Beringei
১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে এই উপ-প্রজাতির নামকরণ করেছিলেন Matschie।
পূর্বাঞ্চলীয় এই গরিলার এই উপ-প্রজাতিটি বসবাস করে মধ্য আফ্রিকার ভার্জিনিয়া আগ্নেয় পর্বতমালার বনাঞ্চলে। ৩ কোটি ৪০ লক্ষ বৎসর খ্রিষ্টপূর্বাব্দে আফ্রিকা এবং আরবভূখণ্ডে বানর এবং এপ থেকে পৃথক প্রজাতি হিসেবে পার্বত্য গরিলার বিবর্তন শুরু হয়েছিল। ৬০ লক্ষ বৎসর আগে সম্পূর্ণ নতুন প্রজাতি হিসাবে পার্বত্য গরিলার আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। এই বিভাজনের মধ্য দিয়ে, এই গরিলা তাঁর নিকটতম জ্ঞাতি শিম্পাঞ্জি এবং মানুষ থেকে পৃথক হয়ে গিয়েছিল। ৪ লক্ষ বৎসর আগে 'পার্বত্য গরিলা' থেকে 'পূর্বাঞ্চলীয় নিম্ন-ভূমির গরিলা' পৃথক হয়ে গিয়েছিল। আর প্রায় ২ লক্ষ বৎসর আগে পশ্চিমা গরিলা (G. gorilla) পৃথক হয়ে গিয়েছিল।
পার্বত্য গরিলা আকার-আকৃতিতে অন্যান্য গরিলার চেয়ে বড়। অন্যান্য গরিলার চেয়ে এরা অনেক শীতল আবহাওয়া সহ্য করতে পারে। এদের প্রত্যেকের নাকের গড়ন ভিন্ন ভিন্ন রকমের হয়। পুরুষ গরিলার ওজন হয় প্রায় ১৯৫-২৫০ কেজি। লম্বায় প্রায় ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি হয়। স্ত্রী গরিলা আকারে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি এবং ওজন ৮০ থেকে ১৩০ কেজি হয়। পুরুষ গরিলার গায়ের পশম ধূসরাভ রূপালি। এদের পিঠের পশমের দৈর্ঘ্য শরীরের অংশের পশমের চেয়ে বেশ ছোট।
এরা দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। প্রতিটি দলে প্রায় ২৫-৩০টি গরিলা থাকে। দলের নেতৃত্বে থাকে কোনো শক্তিশালী পুরুষ।
পূর্বাঞ্চলীয় নিম্নভূমির গরিলা (Eastern lowland gorilla)Gorilla Beringei graueri
১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে এই উপ-প্রজাতির নামকরণ করেছিলেন Matschie। এর অপর নাম গ্রায়ুয়ের-এর গরিলা ( Grauer's gorilla)। এরা বাস কঙ্গো'র (গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র) বনভূমিতে। বিশেষ করে কাহুযি-বিয়েগা (Kahuzi-Biega) এবং মাইকো জাতীয় উদ্যান এবং তৎসংলগ্ন টায়না গরিলা সংরক্ষিত (Tayna Gorilla Reserve) বনভূমি ও উসালা বনে অঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়।
অন্যান্য গরিলাদের সাথে এর প্রধান পার্থক্য লম্বা দঁতের জন্য। অন্যান্য গরিলাদের চেয়ে এদের চোয়ালে বেশি শক্তিশালী। এছাড়া এরা দেহকাণ্ড বেশ লম্বা। পার্বত্য গরিলা'র মতই এদের হাত ও বুক বড় বড় কালো পশমে আবৃত। কিন্তু পিঠের দিকের পশম খাটো। পুরুষ গরিলার পিছনের দিকে এবং নিতম্বের কাছে ধূসর রুপালি পশমে আবৃত।
পুরুষ গরিলার ওজন
প্রায় ১৬০-১৬৫ কেজি। স্ত্রী গরিলার ওজন ৮০-৮৫ কেজি। সটান
দাঁড়ানো অবস্থায় পুরুষ গরিলা লম্বায় প্রায় ৬ ফুট আর স্ত্রী
গরিলা লম্বায় ৫.৩ ইঞ্চি হয়।
এর মূলত উদ্ভিদভোজী। এরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে গাছের পাতা খায়।
খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে এদের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া।
কোনো গাছেরই সকল পাতা খেয়ে শেষ করে গাছটিকে মৃত্যুর মুখে
ঠেলে দেয় না। কোনো সুনির্দিষ্ট গাছের কিছু পাতা খেয়ে ত্যাগ
করে। ফল ছাড়া এরা খায় ফল, বীজ, কচি বাঁশ। কখনো কখনো ফল
খায়।
এরা দলবদ্ধভাবে বসবাস করে। এক একটি দলে ৫-৩০টি পর্যন্ত সদস্য দেখা যায়। দলের নেতৃত্বে থাকে একটি শক্তিশালী পুরুষ গরিলা। নেতা দলের সদস্যদের খাদ্য, বাসস্থানের নিরাপত্তা নিয়ে যেমন ভাবে, তেমনি শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা রাখে। প্রতিটি নেতার অধীনে ৪-৫টি স্ত্রী গরিলা যৌনসঙ্গিনী হিসাবে থাকে। দলের ভিতরে পুরুষ শাবকরা যখন প্রাপ্ত বয়ষ্ক হয়, তখন তারা নিজেদের জন্য যৌন সঙ্গিনী সংগ্রহ করে এবং ধীরে নিজেদের একটি দল গঠন করে। এক্ষেত্রে বিষয়টি দলের ভিতর থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে ঘটে থাকে।
স্ত্রী গরিলা ১০-১১ বৎসর বয়সে সন্তানধারণ ক্ষমতা লাভ করে। সাড়ে আট মাস গর্ভধারণের পর স্ত্রী গরিলা ১ট বা দুটি শাবক প্রসব করে। প্রায় ১ বছর পর্যন্ত শাবক মাতৃদুগ্ধ পান করে। ৯ সপ্তাহ বয়সে এরা হামাগুড়ি দেওয়া শুরু করে এবং চার হাত-পায়ে বা দুই পায়ে হাটা শিখতে সময় লাগে ৩৫ সপ্তাহ। শাবকগুলো ৩-৪ বৎসর মায়ের সাথে সাথে ঘুরে।
সূত্র :
http://tolweb.org/Gorilla/16419
http://en.wikipedia.org/wiki/
http://strongrootscongo.org/images/dsc06391/