স্ত্রী প্রজনন তন্ত্রের একটি অংশ। জরায়ু'র উপরের উভয় পার্শ্ব জুড়ে শ্রেণিগহ্বরের পার্শ্ব-দেওয়ালের গায়ে লেগে থাকে এই অঙ্গটি। এর সংখ্যা ২টি। এদের আকার অনেকটা বাদামের মতো এবং রং ধূসর গোলাপী বা ধূসর। এদের প্রতিটি লম্বায় ৩ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থে ১.৫ সেন্টিমিটার হয়। এই ডিম্বাশয় দুটি পেরিটোনিয়াম নামক আবরক দ্বারা আবৃত থাকে।
বয়সভেদে এর অবস্থান ও
অন্যান্য বৈশিষ্ট্য পরিবর্তিত হয়। যৌবন শুরু হওয়ার
আগে ডিম্বাশব দুটি পৃষ্ঠদেশ বরাবর থাকে। এই সময় এদের গাত্র
মসৃণ এবং রঙ ধূসর গোলাপী থাকে। ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু তৈরি
হওয়া শুরু হলে, এর গাত্র অমসৃণ হয়ে যায় এবং রঙ ধূসর গোলাপী
থেকে ধূসর বর্ণে রূপ নেয়।
ডিম্বাশয়
ডিম্বনালীর সাথে একধরণের তন্তুর দ্বারা ঝুলন্ত
অবস্থায় থাকে। বয়ঃসন্ধিকালে ডিম্বাশয়ে প্রায় ৩-৪ লক্ষ
প্রিমর্ডিয়াল ফলিকল
(Primordial
folicle)
থাকে। এই ফলিকলগুলো হরমোনের
প্রভাবে প্রতিমাসে বৃদ্ধি পায়। এদের ভিতরে একটি ফলিকল
সবচেয়ে বড় আকার ধারণ করে। একে বলা হয় গ্রাফিয়ান ফলিকল
(Graafian
folicle)।
প্রজননের ক্ষেত্রে এই গ্রাফিয়ান ফলিকলই মূখ্য ভূমিকা রাখে।
স্ত্রী প্রজননকাল শুরু হয় ১৩-১৫ বৎসরের ভিতরে এবং স্থায়ী
থাকে ৪৫-৫০ বৎসর পর্যন্ত। এই সময়ের ভিতরে ডিম্বাশয় থেকে
গ্রাফিয়ান ফলিকল উৎপন্ন হয় প্রায় ৪৫০টি। এরপর নারীর প্রজনন
ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়।
ডিম্বাশয় থেকে উৎপন্ন গ্রাফিয়ান ফলিকল ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বনালীতে আসে। এই সময় গ্রাফিয়ান ফলিকল-এর একটি অংশ ডিম্বাশয়ে থেকে যায়। থেকে যাওয়া এই অংশটির রং হলুদ। একে বলা হয় করপাস লুটিয়া (Corpus lutia)। এর কোষগুলো ইস্ট্রোজেন (Estrogen) এবং প্রোজেস্টেরন (Progesteron) নাম দুটো স্ত্রী হরমোন নিঃসরণ করে। ইস্ট্রোজেন-এর প্রভাবে ফলে গর্ভকালীন সময়ে নারীর স্তনকে পুষ্ট ও বৃদ্ধি করে। একই সাথে জরায়ুর আকার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। পক্ষান্তরে প্রোজেস্টেরন জরায়ুর ভিতরে ভ্রণের পূর্ণ বিকাশের উপযোগী পরিবেশ তৈরি করে।