জরায়ু
ইংরেজি :
womb, uterus।
স্তন্যপায়ী প্রাণীর
প্রাইমেট
বর্গের প্রাণীকূলের,
স্ত্রীপ্রজনন তন্ত্র -এর একটি অন্যতম প্রধান অঙ্গ।
মনুষ্য প্রজাতির, নারীদেহে জরায়ু হলো থলিসদৃশ একটি পেশিবহুল অঙ্গ। এর আকৃতি অনেকটা
নাশপাতির মতো। স্বাভাবিক অবস্থায় এটি ৫ সেন্টিমিটার চওড়া এবং ২.৫ সেন্টিমিটার পুরু
হয়। এর ওজন প্রায় ৩০ গ্রাম। এই অঙ্গটি নারীর শ্রোণী-গহ্ববরের ভিতরে দেহের মধ্যরেখা
বরাবর মূত্রাশয় এবং মলাশয়ের মধ্যে থাকে।
জরায়ুকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। ভাগ দুটো হলো।
১. জরায়ুর দেহ
(body):
সমগ্র জরায়ুর
২/৩ অংশ হলো এর দেহ।
২. জরায়ু গ্রীবা
(cervix):
সমগ্র
জরায়ুর ১/৩ অংশ হলো এর গ্রীবা।
পুরু জরায়ু
তিনটি স্তরের
কোষগুচ্ছ দ্বারা পুরু আবরণ তৈরি করে। এর বাইরের স্তরের নাম পেরিমেট্রিয়াম
(Perimetrium),
মধ্যস্তরের নাম
মায়োমেট্রিয়াম
(Myometrium)
এবং ভিতরের স্তরের নাম এন্ডোমেট্রিয়াম
(Endometrium)।
এই প্রাচীরের গায়ে
তিনটি ছিদ্র আছে। এর দুই পাশের দুটি ছিদ্রের সাথে যুক্ত রয়েছে দুটি ডিম্বনালী। অপর
ছিদ্রটি নিচের দিকে অবস্থিত এর সাথে যোনিপথ যুক্ত রয়েছে। ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু
ডিম্বনালীতে অবস্থান করে।
সঙ্গমের পর পুরুষের বীর্য যোনি পথ ধরে জরায়ুতে প্রবেশ
করে, এরপর ডিম্বনালীতে অবস্থিত ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয়। শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণু
নিষিক্ত হয়ে ভ্রুণের আদি দশায় পৌঁছে। এরপর নিষিক্ত ডিম্বাণু জরায়ুতে প্রবেশ করে। এই
অবস্থাকে নারীর গর্ভ-সঞ্চার কাল ধরা হয়। জরায়ুতে ভ্রূণটি পৌঁছার ৪/৫ দিনের মধ্যে,
জরায়ুর অন্তঃপ্রাচীরের গায়ে যুক্ত হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ভ্রূণ ও জরায়ুগাত্রের মধ্যে
কিছু কোষ যুক্ত হয়ে ভ্রূণকে স্থিতি অবস্থায় রাখে। এই সংযুক্ত কোষরাশিকে অমরা বা
গর্ভফুল বলা হয়। এই গর্ভফূলের দ্বারা ভ্রূণ মাতৃদেহ থেকে খাদ্য পায় এবং ভ্রূণের দেহ
থেকে অপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বেরিয়ে যায়। জরায়ুতে ভ্রূণটি বড় হতে থাকে। ভ্রূণের ক্রমাগত
বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্য রেখে জরায়ু বৃদ্ধি পায়। ভ্রূণ থেকে মানব শিশুতে পরিণত হতে
প্রায় ২৮০ দিন সময় লাগে। এরপর নারী সন্তান প্রসব করে।
জরায়ুর ব্যাধি
জরায়ুর টিউমার
জরায়ুমুখ ক্যান্সার
জরায়ু নেমে আসা
সূত্র :
জরায়ুমুখের ক্যানসার ও এই রোগের প্রতিরোধ, পারভীন শাহিদা আখতার (অধ্যাপক, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট), দৈনিক প্রথম আলো, প্রকাশ: ২ ফেব্রুয়ারি ২০১১; পরিদর্শনের তারিখ: ২৭ অক্টোবর ২০১১ খ্রিস্টাব্দ।