জরায়ু টিউমার
ইংরেজি: uterus tumor।
জরায়ুতে সৃষ্ট
টিউমার-কে
জরায়ু
টিউমার বলা হয়। চিকিৎসা শাস্ত্রে একে ইউটেরাইন ফাইব্রয়েড (Uterine
fibroid) বলা
হয়।
জরায়ুর
মাংসপেশী ও ফাইব্রাস কলা অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে এই
টিউমারের
সৃষ্টি হয়। মূলত এই রোগটি জিনগত বা বংশগত। কিন্তু এছাড়াও যে কোনো নারীর
জরায়ুতে এই
টিউমার হতে পারে। এক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন হরমোন-কে দায়ী করা হয়। ইউটেরাইন ফাইব্রয়েড
ফলে কিডনি ফুলতে পারে, ইউরিনারি ব্লাডারে চাপ পড়তে পারে। ইউরিনেট করতে অসুবিধা হতে
পারে। তবে
ক্যান্সারের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। মোটে ১ শতাংশ ক্ষেত্রে এই
অসুখটি থেকে
ক্যান্সার (সারকোমা) হতে পারে। তবে গর্ভকালীন সময়ে সময় একটু বেশিই
সর্তক থাকা প্রয়োজন।
এই রোগ শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া :
অতিরিক্ত ঋতুস্রাব, তলপেটে অস্বাভাবিক যন্ত্রণা, দীর্ঘসময় ধরে ঋতুস্রাব হওয়া।
অস্বাভবিক রক্তস্বল্পতা।
তলপেট চাপ ধরে থাকা এবং বাধাগ্রস্থ মুত্রত্যাগ সমস্যা। কোনো কোনো মলত্যাগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।
তলপেট আকারে এতটাই বড় হতে পারে, যে রোগীকে গর্ভবতীর মতো মনে হয়।
ডাক্তারি পরীক্ষা
পেলভিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে একে শনাক্ত করার চেষ্টা করা হয়।
নিশ্চিতভাবে বোঝার জন্য আলট্টাসোনিক পদ্ধতি ব্যবহারভ করা হয়।
চিকিৎসা পদ্ধতি
এই রোগের প্রধান চিকিৎসাকে বলা হয় 'ল্যাপ্যারোস্কোপিক
অ্যান্ড হিস্টেরোস্কোপিক মায়োমেক্টমি'। ফাইব্রয়েডের সমস্যা দূর করতে এটি এখন
সবচেয়ে বেশী করা হয়। এতে সনাতন পদ্ধতিতে পেট কাটতে হয় না। মাইক্রোসার্জারি করা
হয় বলে ভবিষ্যতে গর্ভধারণেও কোনও সমস্যা হয় না। য়ে
টিউমারটি যদি ইউটেরাইন ক্যাভিটির
ভিতরে হয় তাহলে ক্যামেরা দিয়ে
জরায়ুর ভিতরটা দেখে নিয়ে
টিউমার বাদ দিয়ে দেওয়া
হয়। এক্ষেত্রে আর ল্যাপ্যারোস্কোপিক করারও প্রয়োজন হয় না। আর ভবিষ্যতে স্বাভাবিক
গর্ভধারণে কোনও অসুবিধা হয় না। মোটে একদিন আপনাকে হাসপাতালে থাকতে হবে। এই
পদ্ধতিটি যন্ত্রণাবিহীন ও বিশেষ কোনও ঝূঁকিও থাকে না। ফাইব্রয়েডের সবচেয়ে
জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোর মধ্যে এটির নাম সবার আগে আসে। এছাড়া ইউটেরাইন
আটার্রি এমবোলাইজেশন বলে আরেকটি পদ্ধতি আছে।
জরায়ুতে রক্ত জোগান দেওয়ার রাস্তা এর
সাহায্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে এই পদ্ধতিটি কিছুটা যন্ত্রণাদায়ক আর গর্ভধারণে
কিছুটা সমস্যা হয়।
শল্যচিকিৎসা ছাড়া ইনজেকশন দ্বারা সাময়িকভাবে ফাইব্রয়েডকে নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।
মোটামুটি তিন থেকে ছয় মাস
টিউমারের আকার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ইনজেকশেন দেওয়া
হতে পারে। ইনজেকশেন বন্ধ করে দিলে ছয় মাস পরে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে।
টিউমারগুলো ইস্টোজেন সেনসিটিভ হওয়ায় সোয়াফুড এড়িয়ে চলা বাঞ্ছনীয়। এছাড়া
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, ওজন তৈলাক্ত খাবার চলা বাঞ্ছনীয়।
সূত্র : http://www.naripokkho.org.bd/