লোমোশ গণ্ডার
woolly rhinoceros

গণ্ডারের একটি বিলুপ্ত প্রজাতি। ধারণা করা হয় ৩৭ লক্ষ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে  রাইনোইসেরোটিডায়ি গোত্র থেকে এই গণ্ডারের আবির্ভাব হয়েছিল এবং ১০ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। এদের শরীর বড় বড় লোমে ঢাকা ছিল। এই কারণে এদেরকে লোমশ গণ্ডার বলা হয়। এর গণের নাম Coelodonta । ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের এই গণের নামকরণ করেছিলেন Bronn

এই গণের যে ৪টি প্রজাতির জীবাশ্মের সন্ধান পাওয়া গেছে, সেগুলো হলো-

Coelodonta antiquitatis
ধারণা করা হয়
Coelodonta thibetana বা Coelodonta tologoijensis থেকে ক্রমবির্তনের ধারায় উদ্ভব হয়েছিল। এদের সমস্ত শরীরের বড় বড় লোমে ঢাকা ছিল।

এদের কাঁধের উপরে বিশাল কুঁজো ছিল। এর মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ছিল ৩ থেকে ৩.৮ মিটার (৯.৮-১২.৫ ফুট)। আনুমানিক ওজন ছিল ১৮০০- থেকে ২৭০০ কেজি। আর কাঁধ বরাবর উচ্চতা  ছিল ২ মিটার (৬.৬ ফুট)।

এদের ছিল দুটি খড়্গ। নাকের সম্মুখের খড়্গটি ছিল বাঁকানো এবং বেশ বড়। এর দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৩.৩ ফুট থেকে ৪.৬ ফুট। এর পিছনে দুই চোখের মাঝখানে ছিল ছোট খড়্গটি।  এর ওজন ছিল প্রায় ১৫ কেজি। মাথার খুলিটির দৈর্ঘ্য ছিল ৭০-৯০ সেন্টিমিটার (২৮ থেকে ৩৫ ইঞ্চি)।

এদের প্রধান খাদ্য ছিল নানা ধরনের ঘাস। এরা সাধারণত নদী তীরবর্তী ঘাসে ঢাকা অঞ্চলে বসবাস করতো। এদের সাথে বিচরণ করতো ম্যামোথ, দানব হরিণ, রেইন হরিণ, সাইগা এন্টিলোপ এবং বাইসন।

প্রায় ১৩ হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে এরা এশিয়া থেকে ইউরোপ হয়ে রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চল অবধি ছড়িয়ে পড়েছিল। এশিয়ার মঙ্গোলিয়ান অঞ্চলেও এদের বিস্তার ঘটেছিল।

এদের প্রধান শত্রু ছিল মানবগোষ্ঠীর ও হায়না। সে সময়ের মানবগোষ্ঠী পাথরের পাশাপাশি এই গণ্ডারের খড়্গ এবং অস্থিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতো।


সূত্র: