মাইক্রোপ্রসেসর
মাইক্রোপ্রোসেসের

ইংরেজি Microprocessor>বাংলা মাইক্রপ্রোসেসর।

একটি একক চিপ বিশেষ। কম্পিউটারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রীয় অংশ হিসাবে কাজ করে। মাইক্রোকম্পিউটারের ক্ষেত্রে একে বলা হয়
, সিপিইউ (
CPU=Central processing unit)। এর মূল উপাদান হলো ট্র্যানজিস্টর, রেজিস্ট্যান্স ও ক্যাপাসিটর। বর্তমানের মাইক্রোপ্রোসেসরগুলোতে কয়েক লক্ষাধিক ট্র্যানজিস্টর এবং সেই সাথে আনুষঙ্গিক রেজিস্ট্যান্স ও ক্যাপাসিটর ব্যবহৃত হয়। মাইক্রোপ্রোসেসরকে ভিত্তি করে কম্পিউটার ভিত্তিক কার্যপরিচালনের সুবিধা লাভের জন্য যে কম্পিউটার তৈরি করা হয়, তাকে মাইক্রোকম্পিউটার বলে।

মূলত মাইক্রোপ্রোসেসর হলো অত্যন্ত জটিল ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস। মাইক্রোপ্রোসেসর থাকে মাদারবোর্ডের সাথে সংযুক্ত অবস্থায়। প্রথম দিকের সুপার কম্পিউটার, মেইনফ্রেম ও মিনিকম্পিউটারের পুরো মাদারবোর্ড জুড়ে প্রসেসিং ইউনিটগুলো ছড়ানো থাকতো। তখন পুরো মাদারবোর্ডকেই সিপিইউ বলা হতো। ক্রমে ক্রমে এই ছড়ানো ছিটানো অংশকে একটি চিপের অন্তর্ভক্ত করা হয়। ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে ইন্টেল তাদের ৪০০৪ প্রোসেসর প্রোসেসরের মাধ্যমে প্রথম এর একটি আদর্শরূপ দিতে সমর্থ হয়।

আগেই বলা হয়েছে
মাইক্রোপ্রোসেসরের মূল উপাদান হলো ট্র্যানজিস্টর, রেজিস্ট্যান্স ও ক্যাপাসিটর। এ সকল উপাদানের মাধ্যমে বিশেষ উদ্দেশ্যে তৈরি হয়ে থাকে ছোট ছোট কার্যকরী একক। এই সকল একককে বলা হয় চিপ। আর একাধিক চিপের কার্যক্রমকে যখন একটি বড় ধরনের কার্যকরী একক তৈরি করা হয়। এই এককের সাহায্যে বড়ধরনের কর্ম সম্পাদন করা যায় বলে, একে বলা হয় এলএসআই (LSI=Large Scale Integration)। এরই অপর নাম সিপিইউ।

 

একটি অখণ্ড সিপিইউ কেন্দ্রীয় অংশ হলো প্রোসেসর (processor)। এই অংশে থাকে রেজিস্টার এবং সমন্বিত যৌক্তিক অংশ (Combinational Logic)। প্রোসেসরের বাইরের থাকে নিয়ন্ত্রক অংশ (Control Unit)। আর এই তিনটি অংশ মিলে যা বড় এককটি তৈরি হয়, তাকেই মাইক্রোপ্রোসেসর বলা হয়।


মাইক্রোপ্রোসেসর যে কাজই করুক তার জন্য স্মৃতি ভাণ্ডারের প্রয়োজন পড়ে। কম্পিউটারের সকল ধরনের স্মৃতি মিলেই গড়ে উঠে স্মৃতি একক। মাইক্রোকম্পিউটারে স্মৃতি অংশ বিভিন্ন ভাগে বিভাজিত অবস্থায়। এই ভাগগুলো হলো- র‌্যাম, রম, হার্ডডিস্ক, সিডিরম ইত্যাদি। তবে মাইক্রোকম্পিউটারের নিজস্ব বা পরিচালক স্মৃতি হিসাবে বিবেচনা করা হয় র‌্যাম ও রমকে। অন্যান্য স্মৃতি রক্ষক(হার্ডডিস্ক, সিডিরম ইত্যাদি) বা অন্যান্য ডিভাইসের সাথে মাইক্রোপ্রোসেসরের সাথে যোগাযোগ গড়ে উঠে অপর একটি ইউনিট দ্বারা। এই ইউনিটকে বলা হয়- (input/output (I/O) ইউনিট। ইন্টেলের ৮০৪৮ প্রোসেসরে প্রসেসিং ইউনিট, মেমোরি ইউনিট এবং ইনপুট/আউটপুট যুক্ত ছিল। বর্তমানে এ দুটো ইউনিটকে প্রোসেসর থেকে পৃথক করে আলাদা ইউনিট হিসাবে স্থান দেওয়া হয়ে থাকে।

 


প্রতিটি মাইক্রোপ্রোসেসরের জন্য প্রয়োজন হয় নির্দিষ্ট ভোল্টেজ মানের বিদ্যুৎ। একে বলা হয় সিপিইউ-ভোল্টেজ। এক সময় মাদারবোর্ডের সাথে মাইক্রোপ্রোসেসরের সংযোগের সময় জাম্পার ব্যবহার করে ভোল্টেজ মান সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হতো। বর্তমানে এই ভোল্টেজমান মাদারবোর্ড থেকে নির্ধারিত হয়। এর জন্য জাম্পার ব্যাবহারের প্রয়োজন পড়ে না।


প্রথম দিকে মাইক্রোপ্রোসেসরগুলো মাদারবোর্ডের সাথে দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত করে পিসি বাজারজাত করা হতো। ইন্টেল ৪০৪৮৬ প্রোসেসর তৈরি হওয়ার পর দেখা গেল, প্রোসেসরগুলো মাদারবোর্ডের সাথে বিল্ট-ইন অবস্থায় পাওয়া যাচ্ছে না। অর্থাৎ পিসি নির্মাতারা পৃথকভাবে প্রোসেসর কিনে- পরে মাদারবোর্ডে যুক্ত করা শুরু করলেন। অবশ্য একই সময়ে, প্রোসেসর যাতে মাদারবোর্ডে যুক্ত হতে পারে, সে রকম মাদারবোর্ডও বাজারে আসা শুরু হলো। মাদারবোর্ডে মাইক্রোপ্রোসেসর বসানোর জন্য ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ব্যবহৃত হয়েছে সকেট সিসটেম। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ইন্টেলের পেন্টিয়াম টু প্রোসেসর উদ্ভাবনের পর মাদারবোর্ডে স্লট ব্যবস্থার প্রচলন হয়। তখন এই স্লটের নাম দেওয়া স্লট-১। ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে পেন্টিয়াম থ্রি প্রোসেসরের জন্য ব্যবস্থা করা হলো- স্লট টু নামের আরও একটি ব্যবস্থা। পেন্টিয়াম ফোর-এর জন্য জন্য পুনরায় চালু হয় সকেট সিসটেম। অন্যান্য প্রোসেসর নির্মাতাদের মধ্যে এএমডি স্লট সিসটেমকে গ্রহণ করেছিল।

 

intel 4004

মাইক্রোপ্রোসেসর ও মাইক্রো-কম্পিউটারের ইতিহাস

৪ জানুয়ারি : সেলেরন ৩৬৬ ও ৪০০ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।

৫ জানুয়ারি : পেন্টিয়াম-টু জেয়ন প্রোসেসর ৪৫০ মেগাহার্টজ প্রোসেসর। 

৭ জানুয়ারি : ৩০০ মোবাইল পেন্টিয়াম এমএমএক্স প্রোসেসর।

২৫ জানুয়ারি : ২৬৬, ৩০০, ৩৩৩ ও ৩৬৬ মেগাহার্টজ মোবাইল পেন্টিয়াম টু প্রোসেসর। এই দিনেই উপস্থাপিত হয় ১৯৯৯ মোবাইল সেলেরন ২৬৬ ও ৩০০ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।

২৬ ফেব্রুয়ারি : ৪৫০ ও ৫০০ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি প্রোসেসর।

১৭ মার্চ : ৫০০ ও ৫৫০ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম জেয়ন প্রোসেসর।

২২ মার্চ : সেলেরন ৪৩৩ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।

৫ এপ্রিল : মোবাইল সেলেরন ৩৩৩ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।

২৬ এপ্রিল : সেলেরন ৪৬৬ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।

১৭ মে : মোবাইল সেলেরন ৩৬৬ মেগাহার্টজ প্রোসেসর, ৫৫০ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি প্রোসেসর বাজারে অাসে।

১৪ জুন তারিখে : ৪০০ মেগাহার্টজ মোবাইল পেন্টিয়াম টু প্রোসেসর ও ৪০০ মেগাহার্টজ মোবাইল সেলেরন প্রোসেসর।
২ আগাস্ট : সেলেরন ৪৬৬ মেগাহার্টজ প্রোসেসর ও ৬০০ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি প্রোসেসর।

১৫ সেপ্টেম্বর : মোবাইল সেলেরন ৪৩৩ ও ৪৬৬ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।

২৫ অক্টোবর : ৬০০, ৬৬৭ ও ৭৩৩ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি জেয়ন প্রোসেসর, ৫০০, ৫৩৩, ৬০০, ৬৫০, ৬৬৭, ৭০০ এবং ৭৩৩

মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি প্রোসেসর, ৪০০, ৪৫০ ও ৫০০ মেগাহার্টজ মোবাইল পেন্টিয়াম থ্রি প্রোসেসর।

এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয় ৫০০ মেগাহার্টজে আলফা 21264 প্রোসেসর এবং জুন মাসে প্রকাশিত হয় এদের ৬০০, ৬৬৭ ও ৭৫০ মেগাহার্টজ গতির প্রোসেসরসমূহ। এই বরের ২৩শে জুন ৭ সকেট ভিত্তিকএএমডি তাদের AMD Athlon প্রোসেসর বাজারে ছাড়ে।

২০০০ সালে ি প্রোসেসরসমূহ:

৪ জানুয়ারি : সেলেরন ৫৩৩ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।
১২ জানুয়ারি : ৮০০ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি জেয়ন প্রোসেসর।
১৮ জানুয়ারি : ৬০০ ও ৬৫০ মেগাহার্টজ মোবাইল পেন্টিয়াম থ্রি প্রোসেসর।
১২ ফেব্রুয়ারি : মোবাইল সেলেরন ৪৫০ ও ৫০০ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।
৮ মার্চ : ১ গিগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি প্রোসেসর।
২০ মার্চ : ৮৫০ ও ৮৬৬ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি প্রোসেসর।
২৯ মার্চ : সেলেরন ৫৬৬ ও ৬০০ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।
১০ মে : ৮৬৬ মেগাহার্টজের জেয়ন প্রোসেসর।
২৪ এপ্রিল : মোবাইল ৭০০ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি ও মোবাইল সেলেরন   ৫৫০ মেগাহার্টজ প্রোসেসর।
২২ মে : ৭০০ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি
২৪ মে : ৯৩৩ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি ও পেন্টিয়াম থ্রি জেয়ন।
২৪ মে : ৯৩৩ মেগাহার্টজ পেন্টিয়াম থ্রি ও পেন্টিয়াম থ্রি জেয়ন।
১৯ জুন :  এএমডি প্রকাশ করে AMD Duron প্রোসেসর। এর গতি হলো ৬০০,   ৬৫০ ও ৭০০ মোগাহার্টজ প্রোসেসর।
২০ নভেম্বর : ইন্টেল পেন্টিয়াম ফোর নামক এই প্রোসেসরর ১.৪ ও ১.৫   গিগাহার্টজের দুটি সংস্করণ বাজারে আত্মপ্রকাশ করে।

২০০১ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত প্রসেসেরসমূহ।

৯ অক্টোবর এএমডি প্রকাশ করে Athlon XP

২০০ খ্রিষ্টাব্দের ৯ অক্টোবর এএমডি প্রকাশ করে ৫১২কেবি এল২ ক্যাশযুক্ত Athlon XP
        [প্রথম পর্ব সমাপ্ত]