 বেনজীর ভুট্টো
বেনজীর ভুট্টো
তিনি লেখাপড়া করেছেন হার্ভার্ড ও অক্সফোর্ড 
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। শিক্ষা শেষে করে ১৯৭৭ সালে দেশে ফেরেন। কিন্তু অল্পদিনের 
মধ্যেই জেনারেল জিয়াউল হক দ্বারা সংঘটিত এক সামরিক অভ্যুত্থানে, তাঁর পিতা  জুলফিকার 
আলী ভুট্টো ক্ষমতাচ্যূত হন। এরপর জিয়াউল হক কর্তৃক তার পিতা ভুট্টোকে একটি 
রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত করে ফাসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যার পর, বেনজির 
পাকিস্তানের রাজনীতিতে পা রাখেন এবং তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির হাল ধরেন। এই কারণে তৎকালীন 
প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক বহুবার আটক করেছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে 
তিনি আবার লন্ডন চলে যান। দেশে পুনরায় ফিরে আসেন ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে। এরপর সরকার বিরোধী 
আন্দোলনে তিনি জনমত গড়ে তোলেন। এই বৎসরের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়ে 
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন।
১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের ৬ আগষ্ট তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। ১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দের ৬ই আগষ্ট 
নির্বাচিত হয়ে দ্বিতীয়বারের মত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ 
খ্রিষ্টাব্দের ৬ই নভেম্বর তাকে পুনরায় বরখাস্ত করা হয়। পরবর ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের 
নির্বাচনে তিনি হেরে যান।
|  | 
| স্বামী আসিফ আলী জারদারির সাথে বেনজির ভুট্টো | 
|  | 
| বেনজির ভুট্টো হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী আক্রমণের পরের দৃশ্য | 
১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে, সুইজারল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার 
অভিযোগে, বেনজির ও তার স্বামী আসিফ আলী জারদারিকে পাঁচ বছরের জেল ও ৮৬ লাখ ডলার 
জরিমানা করে পাকিস্তানের একটি আদালত। পরে উচ্চ আদালত এই রায়কে পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে 
রায় দেয়। এরপর আট বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে ২০০৭ এর অক্টোবরে বেনজির 
পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করেন। স্বামী 
সাবেক সেনাশাসক জেনারেল পারভেজ মুশাররফের শাসনামলে, ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে ডিসেম্বর, 
তিনি  রাওয়ালপিন্ডিতে একটি নির্বাচনী সমাবেশ করেন। উক্ত সমাবেশে 
রাওয়ালপিন্ডির লিয়াকত জাতীয় বাগ একটি র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। এরপর সভাস্থল ত্যাগ 
করে উদ্যেশ্যে গাড়ীতে আরোহণের পরপরই আত্মঘাতী হামলায় তিনি নিহত হন। আত্মঘাতী হামলাকারীরা গুলি 
বর্ষণ করে এবং পরবর্তীতে আত্মঘাতী বোমার 
বিস্ফোরণ ঘটায়। আততায়ীরা নিজের শরীরে রাখা বোমার বিস্ফোরণ ঘটানোর পূর্বে বেনজীরের 
ঘাড়ে ও বুকে গুলি করেছে। পুলিশ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে র্যালি শেষে বেনজীর তার 
এসইউভিতে চড়ে গন্তব্যে যাত্রা করবেন এমন সময় তার গাড়িতে এক বা একাধিক আততায়ী 
গুলিবর্ষণ করে। যখন অন্য কেউ মনে করছিল বেনজীরকে গুলি করে মারার প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ 
সফল হয়নি তখন এসইউভি'র আশেপাশে কোথাও থেকে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। বিভিন্ন সূত্র 
মতে, যে আততায়ী গুলি করেছিল সে-ই নিরাপত্তা রক্ষীদের হাত থেকে বাঁচতে বোমা 
বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। স্থানীয় সময় ১৮:১৬ (জিএমটি ১৩:১৬)-তে রাওয়ালপিন্ডি জেনারেল 
হাসপাতালে নেয়ার পথে বেনজীরকে মৃত ঘোষণা করা হয়।