নসরৎ শাহ
বাংলাদেশের হুসেনশাহী রাজবংশের শাসন-এর প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন হুসেন শাহ-এর পুত্র এবং  হুসেনশাহী রাজবংশের দ্বিতীয় শাসক। ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে  হুসেন শাহ-এর পুত্র মৃত্যুর পর তিনি সিংহাসন লাভ করেন।

উত্তর-পশ্চিম ভারতে মোগলদের ক্ষমতা ক্রমন্বয়ে বৃদ্ধির কারণে নসরৎ শাহ শঙ্কিত ছিলেন। এই সময় মোগলদের দ্বারা বিতারিত আফগানদের নিয়ে তিনি একটি মোগলবিরোধী সংঘ গড়ে তোলেন। তিনি জৌনপুরের লোহানী বংশীয় সুলতান বাহার খাঁ লোহানী, বিহারের শের খাঁ ও লোদী বংশের মাহমুদ খাঁর সাথে যুক্তি করে এই সংঘকে জোরদার করেন।

১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট বাবর পাণিপথের যুদ্ধে জয়লাভ করে পূর্ব-ভারতের দিকে অভিযান পরিচালনা শুরু করেন। এই সময় এই সংঘ মোগলদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। বাবর নসরৎ শাহকে তাঁর আনুগত্যের দাবি করেন। নসরৎ শাহ এই দাবি না মেনে নানাভাবে বাবরকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বাবর তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে- বাংলার দিকে অগ্রসর হন। ১৫২৯ খ্রিষ্টাব্দে উভয় রাজশক্তির মধ্যে যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে নসরৎ শাহ পরাজিত হন। এরপর মৌখিকভাবে তিনি বাবরের আনুগত্য স্বীকার করেন।

বাবরের সাথে সন্ধি হওয়ার পর, নসরৎ শাহ অসম রাজ্য আক্রমণ করে। কিন্তু এই যুদ্ধে সুলতানের বাহিনী পরাজিত হয়। ১৫৩০ খ্রিষ্টাব্দে বাবরের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র হুমায়ুন সম্রাট হন। এই সময়  মোগল বিরোধী রাজশক্তিগুলোকে একত্রিত করার জন্য, গুজরাটের বাহাদুর শাহের সাথে পরামর্শ শুরু করেন। কিন্তু ১৫৩২ খ্রিষ্টাব্দে নসরৎ শাহ আততায়ীর হাতে নিহত হন।  এরপর সিংহাসনে বসেন তাঁর পুত্র আলাউদ্দিন ফিরোজ।


সূত্র :
পুরাতন বাংলা সাহিত্যের তথ্য ও কালক্রম/সুখময় মুখোপাধ্যায়
বাংলাদেশের ইতিহাস/রমেশচন্দ্র মজুমদার।
ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।