নাসিরউদ্দিন মাহমুদ
ভারতবর্ষে আদি তুর্কি শাসনের
সপ্তম শাসক এবং সুলতান ইলতুৎমিস
-এর পুত্র।
১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে আদি তুর্কি শাসনের
ষষ্ঠ শাসক
আলাউদ্দিন মাসুদ শাহ্, দিল্লীর সিংহাসনে বসেন। তাঁর রাজত্বের সময় আমিররাই রাজ্যের
সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠেন। এই সময় বলবন নামক জনৈক আমির অত্যন্ত শক্তিশালী
অবস্থানে চলে যান, তিনি
ইলতুৎমিস-এর অপর পুত্র
নাসিরউদ্দিন মাহমুদ-এর সাথে ষড়যন্ত্র করে, ১২৪৪ খ্রিষ্টাব্দে
মাসুদ শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করেন এবং নাসিরউদ্দিন মাহমুদকে দিল্লীর সিংহাসনে বসান।
নাসিরুউদ্দিন ছিলেন শান্তিপ্রিয় এবং ধর্মভীরু। এই কারণে তিনি অধিকাংশ সময় ধর্মচর্চার ভিতরেই থাকতেন। অবসর সময়ে তিনি কোরান শরিফ-এর অনুলিপি তৈরি করতেন। ফলে রাজ্যের প্রকৃত শাসক হয়ে উঠেছিল আমিররা। আমিরদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী ছিলেন না। এই কারণে আমিরা তাঁকে সিংহাসনে বসিয়ে রেখে, নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করতেন।
আমিরদের ভিতরে গিয়াসউদ্দিন বলবন-এর মূল শাসন ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তিনি নিজের আত্মীয়দের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করে, নিজের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। একই সাথে তিনি কেন্দ্রীয় সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন।তাঁর রাজত্বের সময় যতগুলো বিদ্রোহ হয়েছে, তার সবই গিয়াসউদ্দিন বলবন সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করেন। ফলে প্রকৃত সুলতান বলবনই হয়ে উঠেছিলেন। ১২৬৫ খ্রিষ্টাব্দে নাসিরউদ্দিন অপুত্রক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ফলে তাঁর মৃত্যুর পর, গিয়াসউদ্দিন বলবন সিংহাসনে লাভ করেন। এই সূত্রে বলবন রাজত্ব শুরু হয়।
সূত্র :
ভারতের ইতিহাস । অতুলচন্দ্র রায়, প্রণবকুমার চট্টোপাধ্যায়।