সরলাদেবী
১৮৭২-১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দ
রবীন্দ্রনাথের
ভাগ্নী।
স্বর্ণকুমারী দেবী এবং জানকীনাথ ঘোষালের তৃতীয় সন্তান এবং দ্বিতীয় কন্যা।
১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দের
৯ সেপ্টেম্বর ২৫ ভাদ্র ১২৭৯ বঙ্গাব্দের জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে
জন্মগ্রহণ করেন।
শৈশবে তিনি লেখাপড়ার হাতে হাতে খড়ি হয়েছিল গৃহশিক্ষক সতীশ পণ্ডিতের কাছে। সাড়ে সাত
বছর বয়সে তিনি বেথুন স্কুলে ভর্তি হন এবং এই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাশ করার পর
ভর্তি হন বেথুন কলেজে। এই কলেজ থেকে এফ.এ পাশ করেন এবং ওই একই কলেজ থেকে ১৮৯০
খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজিতে অনার্স পাশ করেন।
১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দ (১৩০২ বঙ্গাব্দ)-এ
ভারতী
পত্রিকার সম্পাদক
স্বর্ণকুমারী দেবী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই কারণে তিনি
সম্পাদকে পদ ত্যাগ করেন। ভারতীর বৈশাখ ১৩০২ সংখ্যা থেকে সরলা দেবী ও তাঁর বড় বোন
হিরন্ময়ী দেবী সম্পাদনার
দায়িত্ব নেন।
১৯৮৭
খ্রিষ্টাব্দে (১৩০৫ বঙ্গাব্দে )
এই পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
রবীন্দ্রনাথ-সম্পাদিত এই পত্রিকার প্রথম সংখ্যা ছিল বৈশাখ ১৩০৫। নানাবিধ কাজ এবং
তাঁর লেখার তাগিদের কারণে রবীন্দ্রনাথ এই পত্রিকাটি যথাযথভাবে চালাতে পারেন নি। যে
কারণে বৎসরের শেষ চারটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল যুগ্মসংখ্যা হিসাবে। তাঁর সম্পাদনায়
প্রকাশিত ভারতীর শেষ ফাল্গুন-চৈত্র ১৩০৬ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ৬
বৈশাখে। এরপর তিনি সম্পাদকের পদ ত্যাগ করেন। নতুনভাবে পত্রিকার দায়িত্ব পান
সরলা দেবী।
১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দের ৪ অক্টোবর [১৮ আশ্বিন ১৩১২ বঙ্গাব্দ] সরলাদেবীর সাথে ডাঃ পেয়ার মল-এর বিবাহ হয়। বিবাহের পর তিনি পাঞ্জাবে চলে যান। ফলে ভারতী পত্রিকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ১৩১৪ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ্য মাসে পত্রিকা সম্পাদনার দায়িত্ব সৌরিন্দ্রমোহনের হাতে অর্পণ করেন।
স্বদেশী দ্রব্যের উৎপাদন ও ব্যবহারের প্রচারের লক্ষ্যে 'লক্ষ্মীর ভাণ্ডার'
নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। ১৯১০ সালে এলাহাবাদে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের
অধিবেশনে তিনি একটি নিখিল ভারত মহিলা সম্মেলন আহ্বান করেন। এই সম্মেলনেরই উদ্যোগে
'ভারত-স্ত্রী-মহামণ্ডল' প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃ্ত্যুবরণ করেন।
তিনি বহু রবীন্দ্র-সঙ্গীতের স্বরলিপি করেছেন। তাঁর সংগৃহীত মহীশূর অঞ্চলের গান এবং বাংলা বাউল গান থেকে রবীন্দ্রনাথ বেশ কিছু ভাঙা গান রচনা করেছিলেন।
তাঁর রচিত
গ্রন্থ
সঙ্গীত শতগান (১৩০০)
গীত-ত্রিংশতি (১৯৪৫)
জীবনের ঝরাপাতা (১৮৭৯ শকাব্দ)