তুলসী লাহিড়ী
(১৮৯৭-১৯৫৯) খ্রিষ্টাব্দ)।
নাট্যকার, অভিনেতা, গীতিকার ও সুরকার

১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ৭ এপ্রিল অবিভক্ত বাংলার গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সুরেন্দ্রনাথ লাহিড়ী ছিলেন রংপুরের ডিমলা এস্টেটের ম্যানেজার।

বিএ, বিএল পাশ করে তিনি রংপুরে আইন ব্যবসা শুরু করেন। এর পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র অভিনয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েন। ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর প্রথম অভিনীত নির্বাক ছবি ছিল জ্যোতিষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালিত 'মাটির স্নেহ'।

ছায়াছবি ও সঙ্গীতের অনুরাগে ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে
কলকাতার আলিপুর কোর্টে আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন। তাঁর রচিত দুটি গান ওস্তাদ জমিরুদ্দিন খাঁ'র কণ্ঠে রেকর্ডে প্রকাশিত হলে, তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। এই সূত্রে তিনি হিজ মাস্টার্স ভয়েস ও মেগাফোন গ্রামোফোন কোম্পানিতে সংগীত পরিচালক পদে চাকরি পান। গানের প্রতি তাঁর তীব্র আকর্ষণ এবং খ্যাতি তাঁকে বিপুল ভাবে আলোড়িত করে। ফলে তিনি আইন ব্যবসা ত্যাগ করে সঙ্গীত ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জগতে চলে আসেন।

১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে বিহার রাজ্যের ঝরিয়া অঞ্চল থেকে কে. মল্লিক কমলা ঝরিয়াকে কলকাতায় এনেছিলেন এইচএমভি থেকে রেকর্ড প্রকাশের জন্য। তাঁর কণ্ঠে ধারণকৃত ২টি গানের রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৩৭)। এই রেকর্ডে ২টি গান ছিল। এগুলো হলো-'প্রিয় যেন প্রেম ভুলো না' ও 'নিঠুর নয়ন-বাণ কেন হান'। রেকর্ড নম্বর এন ৩‌‌১৩৭‌১৩৭

এই গান দুটির রচয়িতা ছিলেন প্রণব রায় এবং সুরকার ছিলেন তুলসী লাহিড়ি। এই প্রথম পরিচয়েই তিনি কমলা ঝরিয়া'র প্রেমে পড়ে যান। গানের রেকর্ড এবং অভিনয় জগতে আসার ক্ষেত্রে কমলা ঝরিয়াকে তিনি নানা ভাবে সাহায্য করেন। এ নিয়ে তুলসী লাহিড়ীর পরিবারে অশান্তি শুরু হলে, তিনি তাঁর স্ত্রী শান্তিলতা এবং চার পুত্র ও দুই কন্যাকে ছেড়ে কমলার সঙ্গে থাকা শুরু করেন। পরে অবশ্য দুজনের এই সম্পর্ক তুলসী লাহিড়ীর পরিবার মেনে নিয়েছিল।

তুলসী লাহিড়ী কমলাকে নিয়ে নানা ভাড়াবাড়িতে থাকার পর শেষে তাঁকে কলকাতার ১৫৮/সি রাসবিহারী এভিনিউয়ের একেবারে সদর রাস্তার পাশে একটি তিনতলা বাড়ি কিনে দেন। ঝরিয়া থেকে কমলার এক ভাই এসে সপরিবার এই বাড়িতে ওঠেন। এই সময়ের ভিতরে উভয়ই সঙ্গীত ও অভিনয় নিয়ে মেতে ছিলেন। বহু ছবিতে উভয়ে এক সাথে কাজ করেছেন। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ জুন তিনি মৃ্ত্যবরণ করেন।

তুলসী লাহিড়ীর অভিনীত ছবির তালিকা


সূত্র: