ছায়ানট
কাজী নজরুল ইসলাম
দূরের বন্ধু
বন্ধু আমার! থেকে থেকে কোন্ সুদূরের বিজন পুরে
ডাক দিয়ে যাও ব্যথার সুরে?
আমার র অনেক দুখের পথের বাসা বারে বারে ঝড়ে উড়ে,
ঘর-ছাড়া তাই বেড়াই ঘুরে॥
তোমার বাঁশীর উদাস কাঁদন
শিথিল করে সকল বাঁধন
কাজ হলো তাই পথিক সাধন-
খুঁজে ফেরা পথ-বঁধরে,
ঘুরে- ঘুরে- দূরে দূরে॥
হে মোর প্রিয়! তোমার বুকে একটুকুতেই হিংসা জাগে,
তাই তো পথে হয় না থামা-তোমার ব্যথা বক্ষে লাগে!
বাঁধতে বাসা পথের পাশে
তোমার চোখে কান্না আসে
উত্তরী বায় ভেজা ঘাসে
শ্বাস ওঠে আর নয়ন বুঝে,
বন্ধু, তোমার সুরে সুরে॥
বরিশাল
আশ্বিন ১৩২৭
১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে দুর্গাপূজা উপলক্ষে নবযুগ পত্রিকার অফিস ছুটি হয়ে যায়। এই ছুটি কাটানোর জন্য অক্টোবরের ১-২ তারিখে (রবি-সোম, ১৫-১৬ আশ্বিন) নজরুল এবং মুজাফ্ফর আহমদ বরিশালে শের-এ-বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের ভাগ্নে ওয়াজির জালী ও ইউসুফ আলীর বাড়িতে যান। এই সময় এই কবিতটি রচনা করেছিলেন। কবিতাটিতে সুরারোপিত করে গানে পরিণত করা হয়েছিল।
ছায়ানট কাব্যগ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত এই কবিতা সাথে রচনাকাল উল্লেখ আছে-'বরিশাল, আশ্বিন ১৩২৭'। কবিতা হিসেবে- প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল মোসলেম ভারত পত্রিকার 'কার্তিক ১৩২৭' (অক্টোবর-নভেম্বর ১৯২০) সংখ্যায়।