বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: এসো মুরলীধারী বৃন্দাবন-চারী গোপাল গিরিধারী শ্যাম
এসো মুরলীধারী বৃন্দাবন-চারী গোপাল গিরিধারী শ্যাম।
তেমনি যমুনা বিগলিত-করুণা কুলু কুলু কুলু স্বরে ডাকে অবিরাম॥
কোথায় গোকুল-বিহারী শ্রীকৃষ্ণ
চাহিয়া পথ পানে ধরণী সতৃষ্ণ,
ডাকে মা যশোদায় নীলমণি আয় আয় ডেকে যায় নন্দ শ্রীদাম॥
ডাকে প্রেম-সাধিকা আজো শত রাধিকা গোপ-কোঙারি,
এসো নওল-কিশোর কুল-লাজ-মান-চোর ব্রজ-বিহারী।
পরি’ সেই পীতধড়া, সেই বাঁকা শিখী ছূড়া বাজায়ে বেণু
আরবার এসো গোঠে, খেল সেই ছায়া-বটে চরাও ধেনু
কদম তমাল-ছায়ে এসো নূপুর পায়ে ললিত বঙ্কিম ঠাম॥
- ভাবসন্ধান: কোনো কারণে কৃষ্ণ বৃন্দাবন ছেড়ে দূরে কোথাও গিয়েছিলেন।
তাঁর অদর্শনে উতলা বৃন্দাবনবাসীর মনে জেগে উঠেছে ভক্তি ও প্রেমের আক্ষেপ ও
আকুলতা। এরই সাথে উপস্থাপিত হয়েছে- কৃষ্ণবিহীন ব্রজবাসীর মনে বেদনাবিধূর
স্মৃতিকাতরতা।
গানের শুরুতেই তাঁকে 'মুরলীধারী বৃন্দাবন-চারী গোপাল গিরিধারী শ্যাম' সম্বোধনে
করে আহ্বান হয়েছে। তাঁর অবর্তমানে ব্যথিত বৃন্দাবনের মর্মব্যথা
রূপকল্পের মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করে বলা হয়েছে- বিগলিত-করুণায় যমুনার কুলু কুলু
ধ্বনি যেন অবিরাম তাঁকেই ডেকে চলেছে। বলছে- 'কোথায় গোকুল-বিহারী শ্রীকৃষ্ণ',
তাঁর আসার আশায় চরাচর যেন সতৃষ্ণ নয়নে পথের দিকে চেয়ে আছে। তাঁকে ডাকছেন মা
যশোদা স্নেহাদরে নীলমণি বলে, ডাকছেন কৃষ্ণের পালক পিতা নন্দ, ডাকছেন বন্ধু
শ্রীদাম।
তাঁকে ডাকছেন শতশত রাধিকারূপিণী হতভাগিণী গোপ-বধূরা। তাঁরা ডাকছেন সেই 'কুল-লাজ-মান-চোর'
রূপী সেই ব্রজবিহারী নওল কিশোরকে। যেন তিনি আসেন তাঁর চিরায়ত রূপে, গোচারণ
ভূমির তাঁর উপস্থিতিতে মধুময় হয়ে উঠবে। তিনি ছায়াবটে চরাবেন গাভী, কদম-তমালের
ছায়ায় নাচবেন নূপুর পায়ে ললিত বঙ্কিম ভঙ্গিমায়।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের
এপ্রিল (চৈত্র ১৩৩৮- বৈশাখ ১৩৩৯) মাসে এইচএমভি রেকর্ড
কোম্পানি থেকে এই গানটির প্রথম রেকর্ডে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩২
বৎসর ১১ মাস।
- গ্রন্থ:
- বনগীতি।
- প্রথম সংস্করণ [১৩ অক্টোবর ১৩৩২ (রবিবার ২৭ আশ্বিন ১৩৩৯)]। মান্দ-কাহারবা। পৃষ্ঠা: ৮৬-৮৭]
- নজরুল রচনাবলী। জন্মশতবর্ষ সংস্করণ পঞ্চম খণ্ড। বাংলা একাডেমী। ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ মে, ২০১১
। বনগীতি। গান সংখ্যা ৫৭। মান্দ-কাহারবা। পৃষ্ঠা ২১২]
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১১১৯। রাগ: মান্দ,
তাল: কাহার্বা। পৃষ্ঠা: ৩৪২]
- রেকর্ড:
এইচএমভি। এপ্রিল ১৯৩২ (চৈত্র ১৩৩৮-বৈশাখ ১৩৩৯)। এন
৪১৮৪। শিল্পী: মিস্ বীণাপাণি।
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: ইদ্রিস আলী। [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি
চুয়াল্লিশততম খণ্ড। স্বরলিপি নজরুল ইন্সটিটিউট কর্তৃক
প্রকাশিত। আষাঢ় ১৪২৪/জুন ২০১৮] পৃষ্ঠা: ৯৫-৯৮। [নমুনা]
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণব। কৃষ্ণ। বিরহ
- সুরাঙ্গ: ভজন
- রাগ:
মাণ্ড/মান্দ
- তাল:
কাহারবা
- গ্রহস্বর: ধর্স