বিষয়: নজরুল সঙ্গীত। 
শিরোনাম: গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে ─ কিশোর কৃষ্ণ দোলে বৃন্দাবনে  
	
		 গগনে কৃষ্ণ মেঘ দোলে 
		─ 
	কিশোর কৃষ্ণ দোলে বৃন্দাবনে।
থির সৌদামিনী রাধিকা দোলে নবীন ঘনশ্যাম সনে;
দোলে রাধা শ্যাম ঝুলন-দোলায় দোলে আজি শাওনে॥
		পরি' ধানি রঙ ঘাগরি, মেঘ রঙ ওড়না
গাহে গান, দেয় দোল্ গোপীকা চল-চরণা,
ময়ূর নাচে পেখম খুলি' বন-ভবনে॥
		গুরু গম্ভীর মেঘ-মৃদঙ্গ বাজে আঁধার অশ্রুর তলে,
হেরিছে ব্রজের রসলীলা অরুণ লুকায়ে মেঘ-কোলে।
মুঠি মুঠি বৃষ্টির ফুল ছুঁড়ে হাসে
দেব-কুমারীরা হেরে অদূর আকাশে,
জড়াজড়ি করি' নাচে, তরুলতা উতলা পবনে॥
	
	- ভাবসন্ধান: এই গানে বৃন্দাবনের ঝুলন উৎসব উদ্যাপনকে উপস্থাপন করা হয়েছে 
	প্রকৃতির বর্ষাকালীন রূপ ও রাধা-কৃষ্ণের প্রেমলীলার যুগলবন্দীতে। বর্ষা আর 
	বৃন্দাবনের ঝুলনোৎসবের আয়োজনের যুগলধারার এক দিকে রয়েছে- বর্ষণঘন শ্রাবণ 
	রূপবৈচিত্র্য, অন্য দিকে রয়েছে রাধকৃষ্ণ-ভিত্তিক গোপিনীরা। এই প্রেক্ষাপটে 
	গানটির স্থায়ীতে প্রতিভাত হয়েছে যুগল দর্শনের সাম্যরূপ।  কবি বলছেন- 
	শ্রাব্মাসের 
	কালো মেঘ আকাশে যেমন করে দুলছে বজ্র-বিদ্যুৎকে সাথে  নিয়ে, তেমনি স্থির বিদ্যুৎসম 
	দ্যুতিময় রাধাকে নিয়ে বৃন্দাবনের কালো কিশোর দুলছেন ঝুলনের দোলনায়। 
 এই উৎসবে গোপিনীরা
		ধানি রঙ ঘাগরি আর মেঘবর্ণের ওড়নার আভরণে, কাজরির  নৃত্য-গীতের 
	ছন্দলীলায়িত পদচারণায় উল্লসিত। বনভবনে সে ছন্দের সঙ্গী হয়ে
	 ময়ূর পেখম মেলে 
	দিয়েছে নৃত্যানন্দে বিভোর হয়ে।
 
 কবি
	এই ঝুলনোৎসবের অনুষঙ্গী হয়ে, উপভোগ করছেন প্রকৃতিকে। কবি তাঁর অপরূপ রূপকল্পে উপস্থাপন 
	করেছেন গানের পরবর্তী অংশে। তিনি গুরু গম্ভীর মেঘের গর্জনকে মৃদঙ্গের বাদ্য হিসেবে দেখেছেন, 
	যেন মেঘের ছন্দ আঁধারের আনন্দাশ্রু বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ছে এই উৎসবের জন্য। ব্রজের এই 
	রসলীলা সূর্য দেখছে মেঘের ঢাকা আকাশের আড়লে বসে। এই উৎসবের অংশভাগী হয়ে মেঘমালা 
	বৃষ্টির ফুল সহাস্য ছুড়ে দিচ্ছে এই উৎসবকে মহিমান্বিত করা জন্য। যেন দেবকুমারীরা 
	এ সব গভীর মুগ্ধতায় দেখেছেন অদূরের আকাশে বসে। এই উৎসবের অংশভাগী হয়ে জড়াজড়ি করে 
	নাচছে তরুলতা উতলা বাতাসের সঙ্গী হয়ে।
 
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে 
	সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের  ২৯ আগষ্ট  খ্রিষ্টাব্দ 
		(মঙ্গলবার, ১২ ভাদ্র ১৩৪৬) কলকাতা বেতার থেকে প্রচারিত হয়েছিলে জগৎ ঘটকের 
		রচিত 'ঝুলন' 
		নামক গীতি-আলেখ্য। এই গীতি-আলেখ্যে নজরুলের রচিত এই গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল। 
		এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪০ বৎসর ২ মাস।
	
 
			 
 
- 
	গ্রন্থ:
	নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা 
					১২৪৭। তাল: কাহারবা। পৃষ্ঠা: ৩৭৯]
 
- বেতার:  'ঝুলন' 
		(গীতি-আলেখ্য)। রচয়িতা জগৎঘটক। কলকাতা বেতার কেন্দ্র। [২৯ আগষ্ট ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দ (মঙ্গলবার, ১২ ভাদ্র ১৩৪৬)। 
	শিল্পী: ইলা ঘোষ]
		সূত্র:  
			- বেতার জগৎ: ১০ম বর্ষ ১৬শ সংখ্যার [পৃষ্ঠা: 
		৬৩৭]
- The Indian Listener. Vol. 
		IV No 16 Page 1183
 
 
- রেকর্ড: এইচএমভি [সেপ্টেম্বর ১৯৪০ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪৭)। এন ১৭৪৮২। শিল্পী: ইলা ঘোষ ও 
সুনীল ঘোষ]
 
- পত্রিকা:
		- সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা [শ্রাবণ ১৩৪৭ (জুলাই-আগষ্ট ১৯৪০)]। ঝুলনিয়া। 
		কথা: কাজী নজরুল ইসলাম। সুর: নিতাই ঘটক। স্বরলিপি: কুমারী বিজলী ধর। পৃষ্ঠা: 
		১৫১-১৫৪। স্বরলিপির শেষে পাদটীকায় উল্লেখ আছে- 'গানখানি মেয়েরা G সার্পের
 
Scaleএ এবং পুরুষ
		B
		ফ্ল্যাট বা C Scaleএ গাহিলে সুবিধা হইবে। 
		কুমারী ইলা ঘোষ ও শ্রীমান সুনীল ঘোষ (মন্টু) এইচ্ এম ভি রেকর্ডে গানখানি 
		গাহিয়াছেন।']
		[নমুনা]
 
	 
	সুরকার: নজরুল ইসলাম  
	স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: 
	- বিজলী ধর। সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা [শ্রাবণ ১৩৪৭ (জুলাই-আগষ্ট ১৯৪০)]
 
	[নমুনা]
- ড. রশিদুন্ নবী।
	নজরুল -সংগীত স্বরলিপি 
(৩৮তম খণ্ড)। নজরুল 
ইন্সটিটিউট। ঢাকা। 
জ্যৈষ্ঠ 
১৪২৩ বঙ্গাব্দ/ জুন, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে। গান সংখ্যা ৯। পৃষ্ঠা: ৫১-৫৪ 
[নমুনা]
 
পর্যায়:
		- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত সনাতন হিন্দুধর্ম, বৈষ্ণব। ঝুলনোৎসব।
- সুরাঙ্গ: কাজরী অঙ্গের ঝুলনের সুর
- তাল: 
		কাহারবা
- গ্রহস্বর: সা