বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: চম্পা-বনে বেণু বাজে ─ বাজে বাজে


চম্পা-বনে বেণু বাজে বাজে বাজে।
কে গো চঞ্চল? এলে মনোহর সাজে
                কিশোর নাটুয়ার সাজে॥
আঁখি মেলিয়া চাহে মালতীর কলি
ভবন-শিখী নাচে 'কে গো' বলি',
ছড়ায় সমীরণ ফুল-অঞ্জলি
                তোমার পথ-মাঝে॥
নূপুর শুনি বনে নাচে কুরঙ্গ
মানস-গঙ্গায় জাগে-তরঙ্গ,
সরসীতে কমলিনী থরথর অঙ্গ
                রক্তিম হ'ল লাজে॥
লুকায় ফুলধনু মেঘের কোলে
রাখিয়া কপোল চাঁদের কপোলে,
                হেরে তরুণ রসরাজে॥

১. মনোহর

  • ভাবসন্ধান: এটি বর্ষার আগমনী গান। গ্রীষ্মের শেষ লগ্নে বসন্তের ম্লান চম্পক-বনে বর্ষার আগমনী বাঁশী বেজে ওঠে। পৃথিবী সবুজশ্যামলে যেন কিশোর নর্তকের নবসাজে সজ্জিত হয়। আসন্ন বর্ষার ফুল মালতি তার পাপড়ি মেলে দেয়। বর্ষার আভাষের ভবন-ময়ূর নেচে ওঠে, প্রকৃতিতে ঝরে পড়ে গ্রীষ্মের ফুলগুলো। যেন প্রকৃতি দেবীর পায়ে বর্ষার আগমনী বাতাস পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে।

    বর্ষার রুমঝুম ধ্বনি যেন নূপরের মধুর ধ্বনির মতো বাজে। আর সে ধ্বনির ছন্দে নাচে বনহরিণ। সে ছন্দে মনের আনন্দ-গঙ্গায় তরঙ্গ ওঠে। সে ছন্দে সরোবরের পদ্ম, যেন বর্ষার আসঙ্গ লিপ্সায় কম্পিত হয়, রাঙা হয়ে ওঠ লজ্জায়। বসন্তের প্রেমদেবতার পুষ্পধনু হারিয়ে যায় মেঘের আড়ালে। মেঘ আর চাঁদের সপ্রেম স্পর্শে জেগে ওঠ নবীন বর্ষার অপরূপ রূপ। যেন  প্রেমদেবতা রসরাজ বর্ষাকে নবরূপে দর্শন করে।
     
  • রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। সঙ্গীতবিজ্ঞান প্রবেশিকা পত্রিকার 'আশ্বিন ১৩৪৫' (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩৮) সংখ্যায় গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৩৯ বৎসর ৪ মাস।

  • গ্রন্থ:
    • নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১২৮৬। রাগ: মিশ্র সুর (ধূন)। তাল: দাদরা পৃষ্ঠা: ৩৯০]
  • পত্রিকা
    • সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা [আশ্বিন ১৩৪৫ (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩৮)। মিশ্র-ত্রিতাল। কথা ও সুর: কাজী নজরুল ইসলাম। সুরকার: নীলমণি সিংহ। স্বরলিপি: নীলমণি সিংহ। পৃষ্ঠা: ২৫৩-২৫৫] [নমুনা]
       
  • স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: 
  • সুরকার: নীলমণি সিংহ। [সঙ্গীত বিজ্ঞান প্রবেশিকা। [আশ্বিন ১৩৪৫ (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ১৯৩৮)]
  • পর্যায়:
    • বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি
    • সুরাঙ্গ: রাগাশ্রয়ী