বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: ওঁ শঙ্কর হর হর শিব সুন্দর
ওঁ শঙ্কর হর হর শিব সুন্দর।
কোটি ভাস্কর জ্যোতি শূলপাণি নটবর॥
রজত গিরিনিভ কান্তি মনোহর।
জটা ভূষণ ত্রিনয়ন শশীশেখর॥
বাঘাম্বর যোগীন্দ্র ডমরুধর।
প্রসীদ আশুতোষ রুদ্র মহেশ্বর॥
- ভাবসন্ধান: শিবের বন্দনা মূলক গান। এই গানে শিবের নানাবিধ নামে তাঁর
দৈহিক ও দৈবসত্তার মহিমা, পোশাক, ধ্যানমগ্নতা এবং তাঁর সন্তুষ্টতা বিষয়ক বিবরণ
উপস্থাপন করা হয়েছে।
এই গানটি শুরু হয়েছে শঙ্কর, হর, শিব, সুন্দর নামে। উল্লেখ এখানে শঙ্কর (মঙ্গলকারী),
হর (অকল্যাণ হারক), শিব (শুভ, কল্যাণকর) ও সুন্দর (পরম সত্য ও সুন্দর) অর্থে
বিশেষণবাচক ও বন্দনামূলক নামে অভিহিত করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় পঙ্ক্তিতে
তুলনা করা হয়ে রূপক শব্দের মাধ্যমে। বলা হয়েছে- তিনি কোটি ভাস্করের (সূর্য) জ্যোতিসম,
শূলপাণি (ত্রিশূলধারী শিব), নটবর (বিষ্ণু নটবর অভিহিত থাকেন। এখানে নটবরের তূল্য
অর্থে শিবকে বুঝানো হয়েছে)।
গানের প্রথম অন্তরায় শিবের দৈহিক রূপ বর্ণনা বলা হয়েছে- নানা রূপকতার মধ্য দিয়ে।
রূপালি পর্বততূলা সৌন্দর্য মনোহর তাঁর রূপরাশি। তাঁর দৈহিক বর্ণনায় বলা হয়েছে
জটাধারী, ত্রিনয়নধারী এবং মস্তকে চন্দ্রধারণকারী।
তাঁর পরনে বাঘছাল, হাতে রয়েছে ডমরু নামক বাদ্যন্ত্র। তিনি যোগীন্দ্র তিনি অল্পতে
প্রসীদ (সন্তুষ্ট) হন বলেই তিনি আশুতোষ। আবার অকল্যাণ বিনাশে তিনি ভয়ঙ্কর, তাই তিনি
রুদ্ধ। ঈশ্বরদের (দেবতা অর্থে) মধ্যে মহান, তাই মহেষশ্বর বা মহাদেব।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল
সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায় না। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা মার্চ (রবিবার ১৯ ফাল্গুন ১৩৪৬), মণিলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত 'অন্নপূর্ণা' নামক নাটক মঞ্চস্থ হয়। এই নাটকে এই গানটি প্রথম ব্যবহৃত হয়েছিল। ধারণা করা হয়, নজরুল এই নাটকের জন্যই রচনা করেছিলেন। এই সময় নজরুল ইসলামের বয়স ছিল ৪০ বৎসর
৯ মাস।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ১৩০১। পৃষ্ঠা:
৩৯৪। ]
- মঞ্চ
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। শিব-বন্দনা