বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: নাচন লাগে ঐ তরুলতায় পাতায় ফুলে
নাচন লাগে ঐ তরুলতায় পাতায় ফুলে।
ফুল-সৌখিন দখিন হাওয়া নাচে দু’লে দু’লে॥
নাচে অথির-মতি রঙীন-পাখা প্রজাপতি,
বন দুলায়ে মন ভুলায়ে, ঝিল্লি-নূপুর বাজায়ে
নাচে বনে নিশীথিনী এলোচুলে॥
মৃণাল-তনু কমল নাচে এলো খোঁপায় নীল জলে,
ঝুমুর ঝুমুর ঘুমুর বাজে নির্ঝর পাষাণ-তলে।
বাদ্ল হাওয়ায় তাল্-বনা ঐ বাজায় চটুল দাদ্রা তাল,
নদীর ঢেউ-এ মৃদং বাজে,
পান্সী নাচে টাল্মাটাল্।
নেচে নেচে গ্রহতারা দিশাহার নটরাজের নাট-দেউলে॥
-
ভাবার্থ: এই গানে বর্ষাকে উপস্থাপন করেছেন নৃতোৎসবের আমেজে। এই উৎসব
ফুল সৌখিন দখিনা বাতাসে নাচে নৃত্যানন্দে। তারই ছন্দে দোলা লাগে তরুলতার
পাতায় পাতায়। অস্থির রঙিন প্রজাপতি ফুলে ফুলে নেচে বেড়ায়। ঝিলি তার
ধ্বনি-নূপুর বাজিয়ে, রাত্রি তার এলোকেশ-রূপী বনভূমিকে দুলায়ে নাচে মন ভুলায়ে।
সরোবরের নীল জলে এলো খোঁপা মেলে নাচে মৃণালতনুর (কমলের ডাঁটা) ভর করে কমল
ফুলদল। পাহাড় পথে ঝর্ণার ছুটে চলার নৃ্ত্য-ছন্দে বাজে ঝুমুর ঝূমুর ঘুঙুর
ধ্বনি। বাদল হাওয়া তাল্-বনা (তাল গাছের সারি) বাজায় চটুল দাদরা (দ্রুত
দাদরা)। নৃত্যের ছন্দে নদীর ঢেউয়ে ধ্বনিত হয় মৃদঙ্গের ছন্দ, আর তার দোলায়
নাচে পানসী নৌকা। কবি মনে করেন এই নৃত্যের ছন্দে গ্রহ-নক্ষত্র দিশাহারা হয়ে-
নৃত্যের রাজা তথা নটরাজের (পরমস্রষ্টা বা শিব) বিশ্ব-নাটমন্দিরে নৃ্ত্যে
মাতোয়ারা হয়।
-
রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে
কিছু জানা যায় না। ১৩৩৯ বঙ্গাব্দের আষাঢ় (জুলাই ১৯৩২) মাসে প্রকাশিত 'সুর-সাকী' গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
এই
সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩
বৎসর ১ মাস।
-
গ্রন্থ:
- সুর-সাকী
- প্রথম সংস্করণ [আষাঢ় ১৩৩৯ বঙ্গাব্দ। জুলাই ১৯৩২]
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, চতুর্থ খণ্ড। বাংলা একাডেমী,
ঢাকা। [জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮, মে ২০১১।
সুর-সাকী। ৭৭ সংখ্যক গান। বেহাগ খাম্বাজ-কার্ফা। পৃষ্ঠা ২৭০-২৭১]
নজরুল-সঙ্গীত
সংগ্রহ,[নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২। সংখ্যা ১৫১০। রাগ: বেহাগ-খাম্বাজ। তাল: কাহারবা।
পৃষ্ঠা: ৪৫৩]
রেকর্ড: টুইন
[অক্টোবর ১৯৩২ (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৩৯)
]। এফটি ২২২৫। শিল্পী: মিস্ রাধারাণী।
স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: সেলিনা হোসেন
[নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, তেতাল্লিশতম খণ্ড, আষাঢ় ১৪২৫] গান সংখ্যা
১৩। পৃষ্ঠা: ৬২-৬৫ [নমুনা]
পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি, জাগতিক, ঋতু, বর্ষা, নৃত্যোৎসব
- সুরাঙ্গ: রাগাশ্রয়ী