পোহাল পোহাল নিশি খোল গো আঁখি।
কুঞ্জ-দুয়ারে তব গাহিছে^১ পাখি,
                ওই গাহিছে পাখি॥
ওই বংশী বাজে দূরে
শোন ঘুম ভাঙানো সুরে,
খোল দ্বার লহ বঁধুরে ডাকি॥^২

            ১. ডাকিছে
            ২. খুলি' দ্বার বঁধুরে লহ ডাকি'

• ভাবার্থ: আলেয়া নাটকের জন্য রচিত এই গানে ভোরের হাওয়া প্রভাতের মধুর প্রকৃতির সঙ্গ নেওয়ার জন্য গৃহীকে ডেকে বলছে- রাত্রি শেষ হয়ে গেছে। দুয়ার খুলে মধুর প্রভাতের অঙ্গনে সকলে ভোরের পাখির গান শুনুক। বাঁশিতে বাজে ভোরের ঘুম ভাঙানিয়া সুর। বন্ধুকে সাথে নিয়ে সে সুরের অঙ্গনে এসে সবাই দাঁড়াক।
  
  এ গানে প্রভাতের পাখির গান এবং ভোরের সুরের আবেশ ছাড়া অন্য কোনো উপকরণের উল্লেখ নেই। তাই ভোরের পূর্ণ সৌন্দর্যের রূপ ঠিক পাওয়া যায় না। তবু এই স্বল্প পরিসরে এ গানের মধ্যে লুকিয়ে আছে ভোরের স্নিগ্ধ কোমল শুভ্র সৌন্দর্যের অনুভব। যা উপভোগের জন্য ভোরের হাওয়া  সাবাইকে আহ্বান করেছে তার গানে গানে।
   
• রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। এই গানটি 'আলেয়া' গীতিনাট্যে প্রস্তাবনা'র গান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। উল্লেখ্য, কল্লোল পত্রিকার 'আষাঢ় ১৩৩৬' সংখ্যার 'সাহিত্য-সংবাদ' বিভাগে'  বিষয়ে একটি তথ্য পাওয়া যায়। তথ্যটি হলো-

'নজরুল ইসলাম একখানি অপেরা লিখেছেন। প্রথমে তার নাম দিয়েছিলেন 'মরুতৃষ্ণা'। সম্প্রতি তার নাম বদলে 'আলেয়া' নামকরণ হয়েছে। গীতি-নাট্যখানি সম্ভবত মনোমোহনে অভিনীত হবে। এতে গান আছে ত্রিশখানি। নাচে গানে অপরূপ হয়েই আশা করি এ অপেরাখানি জনসাধারণের মন হরণ করেবে।'

এই বিচারে ধারণা করা যায়, গানটি নজরুল রচনা করেছিলেন, ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসের দিকে। এই  সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩০ বৎসর ১ মাস।
 

• মঞ্চস্থ নাটক: আলেয়া। ' নাট্যনিকেতন' রঙ্গমঞ্চ। ৩রা পৌষ ১৩৩৮ (শনিবার ১৯ ডিসেম্বর ১৯৩১)। প্রথম অঙ্ক। ভোরের হাওয়ার গান।
• গ্রন্থ:
• আলেয়া
  • প্রথম সংস্করণ [ডি,এম, লাইব্রেরী। ১৩৩৮ বঙ্গাব্দ। প্রথম অঙ্ক। ভোরের হাওয়ার গান। ]
  • নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ। চতুর্থ খণ্ড [বাংলা একাডেমী, ঢাকা জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮।  মে ২০১১। আলেয়া। প্রথম অঙ্ক। ভোরের হাওয়ার গান। পৃষ্ঠা: ৩১৭]
পত্রিকা: নাচঘর। ৯ পৌষ ১৩৩৮ (শুক্রবার ২৫ ডিসেম্বর ১৯৩১)। শিরোনাম: আলেয়ার আরও দশটি গান।
• পর্যায়:
  • বিষয়াঙ্গ: প্রকৃতি। ভোরের হওয়া। নাট্যগীতি