১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রবোধচন্দ্র 'ক্যালকাটা থিয়েটার্স লিমিটেডস্-এর কাছে এই
থিয়েটারের দায়িত্ব অর্পণ করেন। এই সময় 'ক্যালকাটা থিয়েটার্স-এর পক্ষে যশোদানন্দন
ঘোষ এই থিয়েটার পরিচালনা করা শুরু করেন। যশোদানন্দনের তত্ত্বাবধানে
প্রথম অভিনয় শুরু হয় ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ৪ এপ্রিল থেকে। প্রথম নাটক ছিল রমেশ
গোস্বামীর 'কেদার রায়'। এর ভিতরে
সুধীন্দ্রনাথ রাহার 'আলাদীন' নাটক অভিনীত হয়। এই নাটকে গান রচনা করেছিলেন
কাজী নজরুল ইসলাম।
১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর রবীন্দ্রনাথের 'গোরা' উপন্যাসের নাট্যরূপ
মঞ্চস্থ হয়েছিল। নাট্যরূপ দিয়েছিলেন নরেশ মিত্র। এর পর নরেশ মিত্র নাট্য নিকেতনের দায়িত্ব
গ্রহণ করেছিলেন।
১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দের
২৮ এপ্রিল. মন্মথ রায়ের নাটক 'সতী" অভিনীত হয়। 'সতী' নাটকে
কাজী নজরুল ইসলাম ও সুর সংযোজনা করেন।
এই বছরে সিনেমার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে,
অভিনয়ের সময়ও কমিয়ে আনা হয় সিনেমার মতো করে।
১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাস থেকে প্রবোধচন্দ্র গুহ আবার নাট্যনিকেতনের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
এই বছরে আলোড়নসৃষ্টিকারী নাটক
শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত '
সিরাজদ্দৌলা' লেখেন। ২৯ জুন নাটকটি
মঞ্চস্থ হয়েছিল। এই নাটকের জন্য নজরুল গান লেখেন এবং সুর দেন।
নাটকটি পরিচালনা করেন নির্মলেন্দু লাহিড়ী ও সতু সেন। অভিনয়ে ছিলেন-
নির্মলেন্দু (সিরাজ), রবি রায় (গোলাম হোসেন), নীহারবালা (আলেয়া), সরযূ দেবী (লুৎফাউন্নিসা)। প্রত্যেকেই অসামান্য অভিনয় করেন।
এই বছরের উল্লেখযোগ্য নাটক ছিল-
মন্মথ রায়ের 'মীরকাশিম' (ডিসেম্বর ১৯৩৮)।
১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৩
মে অভিনীত হয়েছিল শরৎচন্দ্রে
উপন্যাস 'পথের দাবী'র নাট্যরূপ। নাট্যরূপ দিয়েছিলেনশচীন সেনগুপ্ত।
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জুলাই। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস 'কালিন্দী'র নাট্যরূপ
অভিনীত হয়েছিল।
নাট্যনিকেতনে ক্রমাগত দর্শক কমতে থাকলে থিয়েটারটি
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে
শিশিরকুমার ভাদুরীকে
ভাড়া দেওয়া হয়। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এই
মঞ্চের নামকরণ করেন 'শ্রীরঙ্গম'।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের
শিশিরকুমার
এই বাড়ির দখল নিয়ে একটি মামলায় জড়িয়ে পড়েন। শেষ
পর্যনত আদালতের মাধ্যমে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ জানুয়ারি, এই
বাড়ির দখলিস্বত্ব পায় মেসার্স সরকার ব্রাদার্স অ্যান্ড প্রোপার্টি (প্রাইভেট)
লিমিটেড। এই
মঞ্চে ২৪ জানুয়ারিতে একটি নাটক মঞ্চস্থ হওয়ার পর,
শিশিরকুমার এই মঞ্চে আর নাটক
করার সুযোগ পান নি।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জুন, এই মঞ্চটি 'বিশ্বরূপা' নামে প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকার
ব্রাদার্স-এর পক্ষে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাসবিহারী সরকার।
২০০১ খ্রিষ্টাব্দের
১৪ নভেম্বর কালী পূজার রাত্রি ২টার দিকে এই থিয়েটার বাড়ি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এরপর
এখানে একটি নতুন মঞ্চ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তা আর হয়ে ওঠেনি।