বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: বিশ্ব ব্যাপিয়া আছ তুমি জেনে শান্তি ত’ নাহি পাই।
বিশ্ব ব্যাপিয়া আছ তুমি জেনে শান্তি ত’
নাহি পাই।
রূপ ধরে এসো, দাঁড়াও সুমুখে, দেখিয়া আঁখি জুড়াই॥
আমার মাঝারে যদি তুমি রহ
কেন তবে এই অসীম বিরহ
কেন বুকে বাজে নিবিড় বেদনা মনে হয় তুমি নাই॥
চাঁদের আলোকে ভরে না গো মন, দেখিতে চাই যে চাঁদ,
ফুলের গন্ধ পাইলে, জাগে যে ফুল দেখিবার সাধ।
(ওগো) সুন্দর, যদি নাহি দেবে ধরা
কেন প্রেম দিলে বেদনায় ভরা
রূপের লাগিয়া কেন প্রাণ কাঁদে রূপ যদি তব নাই॥
- ভাবসন্ধান: একেশ্বরবাদী ধর্মদর্শনে পরমসত্তা সর্বত্র বিরাজমান। তিনি মিশে
আছেন তাঁর সৃষ্টির সাথে। বিশ্বরূপ দর্শনের ভিতর দিয়ে পরম স্রষ্টাকে দর্শন করা যায়।
কবি এ কথা জেনেও শান্তি পান না। কারণ তিনি এই পরমসত্তাকে দেখতে চান- একক মহিমান্বিত
রূপে। কবি জানেন পরমস্রষ্টার সৃষ্টি মিশে আছেন তাঁর অস্তিত্বের সাথে- দেহ ও মনে।
তিনি তাঁকে অনুভব করেন কিন্তু দেখতে পান না। কবির কাছে এই অদর্শন হয়ে উঠেছে অসীম
বিরহ। দেখা না দেখায় মেশার রহস্যময় অনুভবের ভিতরে কবির মনে জাগে পরম স্রষ্টার
অস্তিত্ব ও অনস্তিত্বের দ্বন্দ্ব। কখনো মনে হয় তিনি আছে, কখনো মনে হয় তিনি নাই।
জ্যোৎস্নার আলোয় মন মধুর স্নিগ্ধতায় ভরে ওঠে, তবু চাঁদকে না দেখলে যেমন মন ভরে না,
ফুলের গন্ধে মন পুলিকত হলেও ফুলকে দেখার জন্য যেমন সাধ জাগে, তেমনি পরমসত্তার অনুভবে
মন অনির্বচনীয় আনন্দে ভরে উঠলেও, তাঁকে না দেখার বিরহে কবির মনে হাহাকার জেগে ওঠে।
এই অসীম বিরহে কবির মনে জেগে ওঠে পরমসুন্দর পর্মস্রষ্টার কাছে একান্ত অভিমানী
বেদনাভরা অনুযোগ। যদি তিনি স্বরূপে দর্শন নাই দেবেন, তবে কেন মনে দিলেন তিনি তাঁকে
পাওয়ার প্রেমময় আকাঙ্ক্ষা? স্রষ্টার অরূপ রূপ যদি সত্য হয়, তবে কেন তাঁর রূপ
দর্শনের বেদনা প্রাণে জাগালেন?
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির
রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
- গ্রন্থ:
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২) -এর
২০২৭ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ৬০৯-৬১০।
- পটদীপ। নজরুল-সঙ্গীতের স্বরলিপি নম্বর ৪। স্বরলিপি: নিতাই ঘটক। হরফ প্রকাশনী।
১১ জ্যৈষ্ঠ। ভজন ১৭। পৃষ্ঠা: ৪৯-৫১। [
নমুনা]
- সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমসত্তা। বন্দনা
- সুরাঙ্গ: ভজন
- রাগ: মিশ্র
দেশ
- তাল:
একতাল (ত্রিমাত্রিক ছন্দ)
- গ্রহস্বর: সা