ভাবসন্ধান: মন্মথ রায়ের রচিত কারাগার
নাটকের জন্য নজরুলের রচিত এই গানে উপস্থাপিত হয়েছে- জগতে শান্তি প্রতিষ্ঠার
জন্য বিষ্ণু তথা নারায়ণের পুনরুত্থানের আহ্বান। এই গানের কারাগার শুধুই
রাষ্ট্রীয় জেলখানা নয়। অত্যাচারীর শাসন-শৃঙ্খলে বন্দী করে রাখা সকল স্থানই
বন্দীশালা। কবির আহ্বান এই পাষাণ (নিষ্ঠুর) কারাগারের ভিত্তি নাশ করে যেন
নারায়ণ আবির্ভূত হন। অত্যাচারের বেদীমূলে ব্যথিত ক্রন্দসী আর্ত জনগণের বন্ধন
ছিন্ন করে, মুক্তিদাতা রূপে নারয়াণ জেগে উঠুন- এটাই কবির একান্ত কামনা।
এই অত্যাচারের কারগারে শিশুরা বলিদানের শিকার হচ্ছে। আর অমৃত-পুত্ররা (মনুষ্য
অমর আত্মার স্বরূপ পুত্র। যাঁরা কেবল রক্ত-মাংসের শরীর নয়, বরং তার মধ্যে
রয়েছে এক অমর, শাশ্বত এবং ঐশ্বরিক সত্তা) মৃত্যুর ভয়ে ম্রিয়মান।
শোণিত-লেখা (রক্তে লেখা) অবিচার ও অত্যাচার দেখেও কি- জেগে ওঠবেন না ভগবান- এমন
সংশয় জাগে কবির মনে। এখন
মৃত্যুক্ষুধা শিয়রে জাগে লেলিহান শিখার মতো। তাই কবির অনুরোধ- আর্ত-পীড়িতদের জন্য
শঙ্কানাশন হয়ে জেগে উঠুন নারায়ণ।
রচনাকাল ও স্থান: গানটি প্রথম
প্রকাশিত হয়েছিল জয়তী পত্রিকার পৌষ-মাঘ ১৩৩৭ (ডিসেম্বর ১৯৩৭-ফেব্রুয়ারি ১৯৩৮) সংখ্যায়। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩১ বৎসর
৬ মাস।
পত্রিকা: জয়তী। পৌষ-মাঘ ১৩৩৭ (ডিসেম্বর ১৯৩৭-ফেব্রুয়ারি ১৯৩৮) সংখ্যা । মন্মথ রায় রচিত কারাগার নাটক]