বিষয়: 
নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম 
: এই আমাদের বাংলাদেশ এই 
আমাদের বাংলাদেশ
	
		
			এই আমাদের 
			বাংলাদেশ এই আমাদের বাংলাদেশ
যে দিকে চাই স্নিগ্ধ শ্যামল চোখ জুড়ানো রূপ অশেষ॥
চন্দনিত শীতল বাতাস বয়
			এ দেশে নিরন্তর
জোছনা সম কোমল হয়ে আসে হেথায় রবির কর
জীবন হেথায় স্নেহ সরস সরল হৃদয় সহজ বেশ॥
নিত্য হেথা ঝরছে মেঘে স্বর্গ হতে শান্তি জল
মাঠে ঘাটে লক্ষ্মী হেথায় ছড়িয়ে রাখে ফুল কমল।
হাঙ্গোর কুমির শার্দুল সাপ খেলার সাথি এই জাতির
দিল্লীর যশ করল হরণ এই দেশেরি প্রতাপ বীর
একদা এই দেশের ছেলে জয় করেছে দেশ বিদেশ॥
		
	
	- 
	ভাবসন্ধান: 
	 প্রকৃতি ও স্বদেশ-প্রেমের যুগলবন্দীতে 
	বাঁধা এই গানের শেষের দুটি পঙ্ক্তি ছাড়া, পুরো গান জুড়ে পাওয়া যায়- চোখ জুড়ানো 
	চিরস্নিগ্ধ শ্যামল বাংলাদেশের বিচিত্র রূপের বর্ণনা। শুধু গানটির শেষের দুটি পঙ্ক্তিতে 
	রয়েছে- রাজা প্রতাপাদিত্যের বীরোচিত ভূমিকার কথা। ষোড়শ-সপ্তদশ শতাব্দীর 
	বঙ্গদেশের অন্যান্য বীরের ঈঙ্গিত এই গানে বিশেষভাবে উপস্থাপিত হয়েছে 'প্রতাপাদিত্য'-র 
	জন্য। 
 
 স্থায়ীর পরে কবি বাংলাদেশের রূপ বর্ণনায় চলে এসেছেন। কবির কাছে এদেশের প্রবাহিত স্নিগ্ধ বাতাস শীতল এবং চন্দন-সুগন্ধিত। এদেশের সূর্যকিরণ জোছনার মতো কোমলতর। এই দেশের মেঘ থেকে সদাই স্বর্গ থেকে আগত শান্তির জলরাশি সুখপ্রদায়ী বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে। মাঠে ঘাটে, পুষ্প-কমলে দেবী লক্ষ্মী যেন তাঁর সৌভাগ্য-শ্রী ছড়িয়ে রাখেন। এই সকল বর্ণনা বাস্তবতার বিচারে অনেকটাই সত্যাশ্রয়ী নয়, বরং স্বদেশ-প্রেমের ভক্তি ও ভালোবাসার বিচারে অনেকটা ভাবাশ্রয়ী কল্পকথা। প্রকৃতির কোলে লালিত এদেশের মানুষের যাপিত-জীবনে মিশে আছে স্নেহ-সরস-সারল্য। এদেশের মানুষ হাঙর, কুমির, বাঘ, সাপের মতো ভয়ঙ্কর প্রাণীকূলের সাথে খেলার সাথী হয়ে কালাতিপাত করে। এই সবই বাংলার চালচিত্র।
 
 বাংলা ও বাঙালির এই চালচিত্র প্রকাশের পরই এই গানে উপস্থাপন করা হয়েছে- মুঘল শাসনাধীন ভারতের করদ রাজ্য হিসেবে শাসিত বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীরযোদ্ধা হিসেবে- যশোর অঞ্চলের মহারাজা প্রতাপাদিত্যের কথা। মোগল-বাহিনীর সাথে যুদ্ধে তাঁর বাহিনী বারবার মোগলদের পরাজিত করার কারণে- দেশ বিদেশে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল।
 
- 
	রচনাকাল 
		ও স্থান: 
	গানটির রচনাকাল সম্পর্কে জানা যায় না।
	১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের 
		সেপ্টেম্বর মাসে (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪১), 
	
	
	এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি 'প্রতাপাদিত্য' 
		নামক নাটক প্রকাশ করে। 
	এই সময় নজরুলের বয়স ৩৫
		বৎসর ছিল ৩ মাস। 
 
-  গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ [নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। 
	ফেব্রুয়ারি ২০১২। গান সংখ্যা ৪১৪] 
 
- রেকর্ড: 
	- নাট্যপালা। 
	প্রতাপাদিত্য। 
	
	নাট্যকার যোগেশ চৌধুরী।
	এইচএমভি [সেপ্টেম্বর
		১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দ (ভাদ্র-আশ্বিন ১৩৪১)। এন ৭২৭৬। চরিত্র একদল তরুণ।
- 
		
	১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার ১০ মাঘ ১৩৪১) টুইন রেকর্ডে কোম্পানির সাথে 
নজরুলে একটি চুক্তি হয়। এই চুক্তিতে গানটি ছিল। 
 
 
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
	সুধীন দাশ 
	[নজরুল 
	সঙ্গীত স্বরলিপি, আটাশতম খণ্ড,  নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা।  আষাঢ়, ১৪১৩/জুলাই ২০০৬] 
	চতুর্থ গান।
	[নমুনা]
 
- পর্যায়: 
	
		- বিষয়াঙ্গ: জাগতিক, ঋতুনিরপেক্ষ, প্রকৃতি ও স্বদেশ
- সুরাঙ্গ: স্বকীয় বৈশিষ্ট্য