বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া
এসো নূপুর বাজাইয়া যমুনা নাচাইয়া
কৃষ্ণ কানাইয়া হরি।
মাখি' গোখুর ধূলিরেণু গোঠে চরাইয়া ধেনু
বাজায়ে বাঁশের বাঁশরি॥
গোপী চন্দন চর্চিত অঙ্গে
প্রাণ মাতাইয়া প্রেম তরঙ্গে
বামে হেলায়ে ময়ূর পাখা দুলায়ে তমাল শাখা
নীপবনে, দাঁড়ায়ে ত্রিভঙ্গে।
এসো লয়ে সেই
শ্যাম-শোভা ব্রজ বধূ মনোলোভা
সেই পীত বসন পীত পরি '॥
এসো গগনে ফেলি নীল ছায়া
আনো পিপাসিত চোখে মেঘ মায়া।
এসো মাধব মাধবী-তলে
এসো বনমালী বন-মালা গলে
এসো ভক্তিতে প্রেমে আঁখি জলে
এসো তিলক-লাঞ্ছিত সুর-নর-বাঞ্ছিত
বামে লয়ে রাই কিশোরী॥
- ভাবসন্ধান: এই গানটিতে কূষ্ণকে আহ্বান করা হয়েছে
নানা মনোলোভা রূপরঙ্গে। গানের স্থায়ীতে নটবররূপী কৃষ্ণকে আহবান করা হয়েছে
নূপুরের ছন্দে যমুনাকে নৃত্যতরঙ্গ রঙ্গে উদ্বেলিত করে। আহ্বান করা হয়েছে- গোঠের
গাভী চরানো - অঙ্গে গো-খুরের ধূলি মাখা রাখাল রূপে, তাঁর বাঁশের বাঁশরির সুরে সুরে।
প্রথম অন্তরায় তাঁর আহ্বান করা হয়েছে কৃষ্ণের এক অনির্বচনী রূপচিত্রের আলোকে। চন্দন চর্চিত অঙ্গে,
প্রাণ মাতানো প্রেম তরঙ্গে তিনি আসবেন। বামে ময়ূর পাখা হেলায়ে, তমাল শাখা দুলায়ে
তিনি নীপ বনে এসে দাঁড়াবেন ত্রিভঙ্গে। তিনি আসবেন- পীত বসনে পীতবর্ণ ধারণ করে, তাঁর
শ্যাম-শোভা নিয়ে ব্রজবধূদের মনোহরণকারী রূপে।
দ্বিতীয় অন্তরাতে কৃষ্ণকে তাঁর রূপমাধুর্যের দ্বারা আবেশিত করে আসার জন্য
আহ্বান করা হয়েছে। যেন তাঁর নীলবর্ণের অঙ্গশোভার ছায়া পড়ে শরতের নীলাকাশে,
সৌন্দর্য পিপাসীর চাহনীতে বর্ষার মেঘলোকের সজল মায়া নিয়ে. বসন্তের আবেশ
ছড়িয়ে পড়ে মাধবী-তলে। তাঁর আগমনের শৃঙ্গার রসে অভিষিক্ত হোক ব্রজ-নরনারীর
মনে। তাদের হৃদয় পূর্ণ হয়ে উঠুক ভক্তি-প্রেমের আঁখি জলে। তিলক অঙ্কিত কৃষ্ণ
আসুন রাধাকে বামে অঙ্গসহচরী করে। তিনি আসুন দেবতা ও মানুষের কাম্য হয়ে।
- রচনাকাল ও স্থান: গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায়
না। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি (মাঘ-ফাল্গুন-১৩৩৯) মাসে, এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানি থেকে এই গানের প্রথম রেকর্ড প্রকাশিত হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩ বৎসর ৮ মাস।
- গ্রন্থ:
-
গীতি-শতদল
- প্রথম সংস্করণ [বৈশাখ ১৩৪১। এপ্রিল ১৯৩৪।
গীতি-শতদল ৫৭। পাহাড়ি মিশ্র -কার্ফা]
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, পঞ্চম খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ মে, ২০১১। গীতি-শতদল।
গান সংখ্যা ৫৭। পাহাড়ি মিশ্র -কার পৃষ্ঠা ৩১৪]
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট ফেব্রুয়ারি ২০১২)-এর ৪১৯ সংখ্যক
গান।
-
রেকর্ড:
এইচএমভি [ফেব্রুয়ারি ১৯৩৩ (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৩৯)]। এন ৭০৭২। শিল্পী: শ্রীমতি
মাণিকমালা
[শ্রবণ
নমুনা]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
নজরুল-সঙ্গীত স্বরলিপি, পঞ্চদশ খণ্ড।
ভাদ্র ১৪০৩। আগষ্ট ১৯৯৬। তৃতীয়
গান। রেকর্ডে শ্রীমতি
মাণিকমালা-র গাওয়া গানের সুরানুসারে স্বরলিপি করা হয়েছে।[নমুনা]
- সুরকার: চিত্ত রায়।
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণবসঙ্গীত।
কৃষ্ণ। আগমনী
- সুরাঙ্গ:
কীর্তনাঙ্গ
- রাগ: পাহাড়ি মিশ্র
- তাল:
কাহারবা
- গ্রহস্বর: মা