বিষয়:
নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম
: (মা) আমার ভবের অভাব লয়
হয়েছে শ্যামা-ভাব-সমাধিতে
(মা) আমার ভবের অভাব লয় হয়েছে শ্যামা-ভাব-সমাধিতে।
শ্যামা রসে যে-মন আছে ডুবে কাজ কিরে তার যশ-খ্যাতিতে॥
মধু যে পায় শ্যামা-পদে,
কাজ কিরে তার বিষয়-মদে;
যুক্ত যে মন যোগমায়াতে ; ভাবনা কি তার রোগ ব্যাধিতে॥
কাজ কি'রে তার লক্ষ টাকায়, মোক্ষ লক্ষ্মী যাহার ঘরে,
কত রাজার রাজা প্রসাদ মাগে সেই ভিখারির পায়ে ধরে।
ওমা শান্তিময়ী অন্তরে যার,
দুঃখ শোকে ভয় কিরে তার
সে সদানন্দ সদাশিব জীবন্মুক্ত ধরণীতে॥
- ভাবসন্ধান: মাতৃরূপিণীর শ্যামাকে পাওয়ার মধ্যেই রয়েছে লৌকিক
সকল আকাঙ্ক্ষার অবসান। ভক্তের এই ভাবনা থেকে গানটি রচিত হয়েছে।
এ গানের শ্যামা-ভক্তের সাধনায় ভবের (জগৎসংসার) সকল
অভাব ঘুঁচে গেছে কালী-সাধনার ভাব-সমাধিতে (ধ্যানমগ্ন দশা)।
ভক্তের মতো- যাঁরা এরূপ সাধনায় মগ্ন হতে পারেন- জগতে তাঁর যশখ্যাতির প্রয়োজন
নেই। শ্যামার কাছে নিজেকে সমর্পণ করার মোহে যখন কেউ মোহিত দশায় থাকেন, তখন
তাঁর সংসারের মোহ বলে আর কিছু থাকে না। যোগমায়া (দুর্গার কল্যাণময়ী রূপ,
মহাশক্তি) রূপিণী শ্যামাতে যিনি
সমাহিত থাকেন, তাঁর রোগ ব্যাধির ভাবনাও থাকে না। লক্ষ্মীরূপিণী যাঁর মন-সাধনার
ঘরে বিরাজ করেন, তাঁর লক্ষ টাকার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। তাই ভিখারি-রূপী
এরূপ সাধকের কাছে রাজা-মহারাজা এসে করুণার প্রসাদ প্রার্থনা করেন।
যাঁর অন্তরে শান্তিময়ী শ্যামা বিরাজ করেন, তাঁর দুঃখ-শোক-ভয় থাকে না।
শ্যামা-সাধনার মধ্য দিয়ে সাধক এই পার্থিব জীবনেই নিজের মধ্যে অনুভব করেন-
সদানন্দ সদাশিব (সর্বশক্তিমান, সূক্ষ্ম, দীপ্তিময় পরম, শিবের সর্বোচ্চ প্রকাশ)
ভাব এবং জীবন্মুক্ত (আত্ম-জ্ঞান
ও আত্ম-উপলব্ধি প্রাপ্ত দশা) ভাব।
- রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। প্রবর্তক পত্রিকার কার্তিক ১৩৪৬ (
অক্টোবর-নভেম্বর
১৯৩৯) সংখ্যায় গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৪০ বৎসর
৫ মাস।
- পত্রিকা: প্রবর্তক। কার্তিক ১৩৪৬ (অক্টোবর-নভেম্বর
১৯৩৯)
- রেকর্ড:
এইচএমভি। সেপ্টেম্বর
১৯৪০ (ভাদ্র -আশ্বিন ১৩৪৭)। এন ২৭০১০। শিল্পী: মৃণালকান্তি ঘোষ।
- গ্রন্থ: নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ (নজরুল ইন্সটিটিউট, মাঘ ১৪১৭, ফেব্রুয়ারি ২০১১) নামক গ্রন্থের
৪৮৮ সংখ্যক গান। পৃষ্ঠা: ১৪৯-১৫০]
- স্বরলিপিকার ও স্বরলিপি: সালাউদ্দিন আহ্মেদ
[নজরুল-সঙ্গীত
স্বরলিপি, অষ্টাদশ খণ্ড। প্রথম সংস্করণ। নজরুল ইন্সটিটিউট আশ্বিন ১৪০৪/অক্টোবর
১৯৯৩। ২২ সংখ্যক গান]
[নমুনা]
- সুরকার: কমল দাশগুপ্ত
- পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সনাতন হিন্দুধর্ম। শাক্ত। শ্যামাসঙ্গীত।
প্রাপ্তি
- সুরাঙ্গ: স্বকীয়