বিষয়: নজরুল সঙ্গীত।
শিরোনাম: আমি দ্বার খুলে আর রাখব না, পালিয়ে যাবে গো 
	
		
			
আমি দ্বার খুলে আর রাখব না, পালিয়ে যাবে গো।
জানবে সবে গো, নাম ধরে আর ডাকব না॥
				        
				এবার পূজার 
	প্রদীপ হয়ে
        
				জ্বলবে 
	আমার দেবালয়ে,
জ্বালিয়ে যাবে গো 
আর আঁচল দিয়ে ঢাকব না॥
হার মেনেছি গো, হার দিয়ে আর বাঁধব না।
দান এনেছি গো, প্রাণ চেয়ে আর কাঁদব না।
				        
				পাষাণ, 
	তোমায় বন্দী ক'রে
        
				রাখব আমার 
	ঠাকুর ঘরে,
রইব কাছে গো 
		
	আর অন্তরালে থাকব না॥
			
		
	
	- ভাবসন্ধান: এই গানের আরাধ্য দেবতা পরমাত্মা। যিনি মানুষের অন্তরে 
	লীলাময় হয়ে বিরাজ করেন। জীবাত্মার সাথে পরমাত্মার এই রহস্যময় লীলা চলে অবিরত। 
	এই জীবাত্মা মানুষের মনে 'আমি' রূপে বিরাজ করেন। পর্মাত্মা জীবাত্মার কাছে ধরা 
	দিয়েও যেন ধরা দেন না। তাই জীবাত্মার ভয়, মনের গোপন ঘরের দুয়ার খোলা পেয়ে, তিনি 
	লীলা ছলে কখন পালিয়ে যাবেন। তাই 'আমি' তাঁর গোপন ঘরের দুয়ার খুলে রাখবেন না। 
	এমন কি তাঁর হৃদয়ের গোপন ঘরের পরমাত্মাকে যাতে কেউ চিনতে না পারে, তাই তাঁর নাম 
	ধরেও ডাকবেন না। এমনটাই তাঁর প্রতিজ্ঞা।  এই প্রতিজ্ঞাই 'আমি' সাধনা। মূলত 
	এই গানে সাধকের সাধনাকেই নানা রূপকতার মধ্য দিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে।
 
 তাঁর গোপন ঘরে পরমাত্মার  বাস। সেই ঘরই  'আমি'র দেবালয়।  'আমি' 
	সে ঘরে প্রতিষ্ঠা করেছেন তাঁর আরাধ্য পরমসত্তাকে।  'আমি'র  কামনা, 
	আরাধনার প্রদীপ হয়ে সেখানে সে দেবালয়ে জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে দেবেন। এই আলোকে 
	সমুজ্জ্বল রাখার জন্য আঁচল নামক কোনো আবরণ দিয়ে ঢাকবেন না। কারণ এই জ্ঞানের আলো 
	এতোটাই দাহিকা শক্তি অধিকারী, তাকে আবরিত করতে গেলে আবরণই পুড়ে যাবে।
 
 পর্মাত্মার সাথে 'আমি'র লীলায় 'আমি' পরাভূত। তাই তাঁকে আর 'আমি' লীলার ফাঁদে 
	আটকাতে চান না। তিনি মন প্রাণ সকলই পরমাত্মার কাছে সমর্পণ করেছেন, তাই প্রাণের 
	মায়ায় তিনি আর কাঁদবেন না।
 
 লীলাময় এই পরমাত্মা ভক্তের কাতরতাকে মূল্য দিতে চান না, তিনি তাঁর কঠোর খেলা 
	খেলেই চলেন। তাই 'আমি'র কাছে তিনি পাষাণ সম। তাই 'আমি' তাঁকে মনের ঘরেই বন্দী 
	করে রাখবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছেন। যাতে সর্বক্ষণ তাঁকে কাছে পাওয়া যায়। যেন 
	তাঁর আর পরমাত্মার মধ্যে কোনো অন্তরাল না থাকে। তিনি থাকবেন 'আমি'র সর্বক্ষণের 
	সঙ্গী হয়ে।
 
- রচনাকাল ও স্থান:
	  গানটির রচনাকাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না।
	১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪২) মাসে এইচএমভি গানটির রেকর্ড করেছিল। 
	এই সময় নজরুলের বয়স ছিল 
	৩৬ বৎসর ৪ মাস।
 
 
- রেকর্ড: টুইন [অক্টোবর ১৯৩৫ (আশ্বিন-কার্তিক ১৩৪২)। এফটি ৪১০২। শিল্পী: রেণু 
			বসু। 
			রাগ-ইমন। তাল: দাদরা]
 
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার:
	আহসান মুর্শেদ
		 [নজরুল 
	সঙ্গীত স্বরলিপি, সাতাশ খণ্ড, নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা। কার্তিক, ১৪১২/অক্টোবর 
	২০০৫ খ্রিষ্টাব্দ] পঞ্চম গান
	[নমুনা]
- পর্যায়: 
	
		- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। সাধারণ। পরমাত্মা। সাধনা 
- সুরাঙ্গ: রাগাশ্রয়ী
- রাগ: 
		ইমন 
- তাল: 
		দাদরা
- গ্রহস্বর: গা