বিষয়: নজরুল সঙ্গীত
শিরোনাম: ও তুই যাস্নে রাই-কিশোরী কদমতলাতে
ও তুই যাস্নে রাই-কিশোরী কদমতলাতে,
সেথা ধরবে বসন-চোরা ভূতে, পারবিনে আর পালাতে॥
সে দেখলে কি আর রক্ষে আছে,
ও-তোর বসন গিয়ে উঠ্বে গাছে,
ওলো গোবর্ধন-গিরিধারী সে
-পারবিনে তায় টলাতে॥
দেখতে পেলে
ব্রজবালা,
ঘট কেড়ে সে
ঘটায় জ্বালা,
(ওলো) নিজেই গ’লে জল হ’বি তুই পারবিনে তায় গলাতে॥
ঠেলে ফেলে
অগাধ-নীরে
সে হাসে লো
দাঁড়িয়ে তীরে,
শেষে ভাসিয়ে নিয়ে প্রেম-সাগরে ওলো দোলায় নাগরদোলাতে॥
- ভাবসন্ধান: বৃন্দাবনে রাধাকৃষ্ণের লীলার সূত্রে রাধাকে কৃষ্ণের
প্রেম-দুরন্তপনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সখিদের উপদেশ এই গানের মাধ্যমে
উপস্থাপন করা হয়েছে।
সখিরা রাধাকে কদমতলাতে যেতে নিষেধ করছেন। কারণ সেখানে রয়েছেন বসন-চোরা ভুত (কৃষ্ণ)।
রাধা স্নানের জন্য জলে নামলে, তিনি তাঁর বসন চুরি করে ভুতের মতো গাছে উঠে বসে
থাকবেন, তখন রাধার পালাবার আর কোনো উপায় থাকবে না। তখন রাই কিশোরী সেই গোবর্ধন-গিরিধারীকে
(কৃষ্ণ) কোনো ভাবেই তাঁর মন টলাতে পারবেন না।
কৃষ্ণের স্বভাবই এমন যখনই তিনি কোনো ব্রজবালাকে দেখতে পান, তখনই তিনি তার জলের
ঘট কড়ে নিয়ে যন্ত্রণা দেন। তখন কাকুতি মিনতি করে ঘটে চাইতে গিয়ে, তারা নিজেরাই
কৃষ্ণ-প্রেমে গলে যায়। তারা কৃষ্ণের দুরন্তপনাকে কিছুতেই থামাতে পারে না। বরং
তিনি তাদের প্রেমের অগাথ সাগরে ঠেলে ফেলে দিয়ে, নিজে তীরে দাঁড়িয়ে তাদের
প্রেম-সাগরের হাবুডুবু দশা উপভোগ করবেন। শেষে তিনিই তাকে প্রেম সাগরের নাগর
দোলায় নাচিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যান প্রেমযমুনায়।
তাই সখিদের উপদেশ, রাই-কিশোরী যেন ভুল করেও কদমতলাতে না যান।
- রচনাকাল ও স্থান:
গানটির রচনাকাল সম্পর্কে
সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানা যায় না। ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দের
ফেব্রুয়ারি (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৩৯)
মাসে, গানটি প্রথম
এইচএমভি রেকর্ড কোম্পানিতে প্রকাশিত
হয়েছিল। এই সময় নজরুলের বয়স ছিল ৩৩ বৎসর ৮ মাস।
- রেকর্ড:
এইচএমভি। [ফেব্রুয়ারি
১৯৩৩ (মাঘ-ফাল্গুন ১৩৩৯)। এন ৭০৭৬। শিল্পী: আশ্চর্যময়ী]
- গ্রন্থ:
-
গীতি-শতদল
- প্রথম সংস্করণ [বৈশাখ ১৩৪১। এপ্রিল ১৯৩৪।
গীতি-শতদল-৫১। ঝুমুর-খেমটা]।
- নজরুল রচনাবলী, জন্মশতবর্ষ সংস্করণ, পঞ্চম খণ্ড। বাংলা একাডেমী, ঢাকা। জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮ মে, ২০১১। গীতি-শতদল।
গান সংখ্যা ৫১। ঝুমুর-খেমটা। পৃষ্ঠা ৩১১-৩১২]
- নজরুল-সঙ্গীত সংগ্রহ, (নজরুল ইনস্টিটিউট, মাঘ ১৪১৮। ফেব্রুয়ারি ২০১২)। ৭৬৪ সংখ্যক গান]
- স্বরলিপি ও স্বরলিপিকার: ইদ্রিস আলী [নজরুল সঙ্গীত স্বরলিপি, দ্বাবিংশ খণ্ড,
নজরুল ইন্সটিটিউট, ঢাকা ভাদ্র, ১৪০৭/ সেপ্টেম্বর, ২০০০ খ্রিষ্টাব্দ] ষষ্ঠ গান।
[নমুনা]
পর্যায়:
- বিষয়াঙ্গ: ধর্মসঙ্গীত। হিন্দুধর্ম। বৈষ্ণব। কৃষ্ণ-লীলা
- সুরাঙ্গ: ঝুমুর
- তাল: তালফেরতা
(দাদরা/
কাহারবা)
- গ্রহস্বর: সা