ভাষাংশ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-এর
রচনাবলী
রচনাবলী সূচি
২
পাহাড় মাঠ
পঞ্চকের গান এ পথ গেছে কোন্খানে গো
কোন্খানে
–
তা কে জানে তা কে জানে।
কোন্ পাহাড়ের পারে, কোন্ সাগরের ধারে,
কোন্ দুরাশার দিকপানে –
তা কে জানে তা কে জানে।
এ পথ দিয়ে কে আসে যায় কোন্খানে
তা কে জানে তা কে জানে।
কেমন যে তার বাণী, কেমন হাসিখানি,
যায় সে কাহার সন্ধানে
তা কে জানে তা কে জানে।
পশ্চাতে আসিয়া যূনকদলের নৃত্য
পঞ্চক। ও কী রে! তোরা কখন পিছনে এসে নাচতে লেগেছিলি?
প্রথম যূনক। আমরা নাচবার সুযোগ পেলেই নাচি, পা দুটোকে স্থির
রাখতে পারি নে।
দ্বিতীয় যূনক। আয় ভাই, ওকে সুদ্ধ কাঁধে করে নিয়ে একবার নাচি।
পঞ্চক। আরে না না, আমাকে ছুঁস নে রে, ছুঁস নে।
তৃতীয় যূনক। ঐ রে! ওকে অচলায়তনের ভূতে পেয়েছে। যূনককে ও ছোঁবে
না।
পঞ্চক। জানিস, আমাদের গুরু আসবেন?
প্রথম যূনক। সত্যি নাকি? তিনি মানুষটি কী রকম? তাঁর মধ্যে নতুন
কিছু আছে?
পঞ্চক। নতুনও আছে, পুরোনোও আছে।
দ্বিতীয় যূনক। আচ্ছা, এলে খবর দিয়ো
–একবার দেখব তাঁকে।
পঞ্চক। তোরা দেখবি কী রে! সর্বনাশ! তিনি তো যূনকদের গুরু নন।
তাঁর কথা তোদের কানে পাছে এক অক্ষরও যায় সেজন্যে তোদের দিকের প্রাচীরের বাইরে সাত
সার রাজার সৈন্য পাহারা দেবে। তোদেরও তো গুরু আছে
–তাকে
নিয়েই
–
তৃতীয় যূনক। গুরু! আমাদের আবার গুরু কোথায়? আমরা তো হলুম
দাদাঠাকুরের দল। এ পর্যন্ত আমরা তো কোনো গুরুকে মানি নি।
প্রথম যূনক। সেই জন্যেই তো ও জিনিসটা কী রকম দেখতে ইচ্ছা করে।
দ্বিতীয় যূনক। আমাদের মধ্যে একজন, তার নাম চণ্ডক –তার কী জানি
ভারি লোভ হয়েছে; সে ভেবেছে তোমাদের কোনো গুরুর কাছে মন্ত্র নিয়ে আশ্চর্য কী-একটা ফল
পাবে –তাই সে লুকিয়ে চলে গেছে।