ভাষাংশ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-এর
রচনাবলী
রচনাবলী সূচি
প্রার্থনাতীত দান
শিখের পক্ষে বেণীচ্ছেদন ধর্মপরিত্যাগের ন্যায় দূষণীয়
পাঠানেরা যবে বাঁধিয়া আনিল
বন্দী শিখের দল —
সুহিদ্গঞ্জ রক্তবরন
হইল ধরণীতল ।
নবাব কহিল, ‘ শুন তরুসিং,
তোমারে ক্ষমিতে চাই ।'
তরুসিং কহে, ‘ মোরে কেন তব
এত অবহেলা ভাই ? '
নবাব কহিল, ‘ মহাবীর তুমি,
তোমারে না করি ক্রোধ —
বেণীটি কাটিয়া দিয়ে যাও মোরে
এই শুধু অনুরোধ ।'
তরুসিং কহে, ‘ করুণা তোমার
হৃদয়ে রহিল গাঁথা —
যা চেয়েছ তার কিছু বেশি দিব,
বেণীর সঙ্গ মাথা ।'
২ কার্তিক ১৩০৬
রাজবিচার
বিপ্র কহে, রমণী মোর আছিল যেই ঘরে
নিশীথে সেথা পশিল চোর ধর্মনাশ - তরে ।
বেঁধেছি তারে, এখন কহো চোরে কী দেব সাজা ।'
‘ মৃত্যু' শুধু কহিলা তারে রতনরাও রাজা ।
ছুটিয়া আসি কহিল দূত, ‘ চোর সে যুবরাজ —
বিপ্র তাঁরে ধরেছে রাতে, কাটিল প্রাতে আজ ।
ব্রাহ্মণেরে এনেছি ধরে, কী তারে দিব সাজা ? '
‘ মুক্তি দাও' কহিলা শুধু রতনরাও রাজা ।
৪ কার্তিক ১৩০৬