ভাষাংশ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনাসংগ্রহের সূচি
রুদ্রচণ্ড
প্রথম দৃশ্য
দৃশ্য–
পর্ব্বতগুহা। রাত্রি কালভৈরবের প্রতিমার সম্মুখে রুদ্রচণ্ড |
||
রুদ্রচণ্ড। | মহাকালভৈরব-মুরতি, | |
শুন, দেব, ভক্তের মিনতি! কটাক্ষে প্রলয় তব, চরণে কাঁপিছে ভব, প্রলয়গগনে জ্বলে দীপ্ত ত্রিলোচন। তোমার বিশাল কায়া ফেলেছে আঁধার ছায়া, অমাবস্যারাত্রি-রূপে ছেয়েছে ভুবন। জটার জলদরাশি চরাচর ফেলে গ্রাসি, দশনবিদ্যুত-বিভা দিগন্তে খেলায়। তোমার নিশ্বাসে খসি নিভে রবি, নিভে শশী, শত লক্ষ তারকার দীপ নিভে যায়। প্রচণ্ড উল্লাসে মেতে, জগতের শ্মশানেতে প্রেতসহচরগণ ভ্রমে ছুটে ছুটে– নিদারুণ অট্টহাসে প্রতিধ্বনি কাঁপে ত্রাসে, ভগ্ন ভূমণ্ডল তারা লুফে করপুটে। প্রলয়মূরতি ধর', থরহর সুর নর, চারি পাশে দানবেরা করুক বিহার– মহাদেব, শুন শুন নিবেদিনু পুনঃ পুন আমি রুদ্রচণ্ড, চণ্ড, সেবক তোমার। সে সঙ্কল্প আছে মনে সঁপিনু তা ও চরণে, কৃপা করি লও দেব, লও তাহা তুলে। এ দারুণ ছুরিখানি অর্ঘ্যরূপে দিনু আনি, দু-দণ্ড এ ছুরিকাটি রাখ পদমূলে। কৃপা তব হবে কবে মনোআশা পূর্ণ হবে, মন হ'তে নেমে যাবে প্রতিজ্ঞা-পাষাণ! সঙ্কল্প হইলে সিদ্ধ এ হৃদি করিয়া বিদ্ধ নিজের শোণিত দিব উপহারদান! |