ভাষাংশ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনাসংগ্রহের সূচি
রুদ্রচণ্ড
ষষ্ঠ দৃশ্য
চাঁদ কবি। শিবির | ||
চাঁদ কবি । | সহস্র থাকুক কাজ, আজ একবার | |
অমিয়ারে না দেখিলে নারিব থাকিতে। না জানি সে অভাগিনী কি করিছে আহা! হয়ত সে সহিছে দ্বিগুণ অত্যাচার। তোর দুঃখ গেনু আমি দূর করিবারে, ফেলিনু দ্বিগুণ কষ্টে অমিয়া আমার। জানিলি নে, অভাগিনী, সুখ কারে বলে! শাসনের অন্ধকারে, অরণ্যবিজনে, পিতা নামে নিরদয় শমনের কাছে দারুণ কটাক্ষে তার থরথর কাঁপি দিনরাত্রি রয়েছিস ম্রিয়মাণ হয়ে। প্রভাতের ফুল তুই, দিবসের পাখী– করে এ আঁধার রাতি ফুরাইবে তোর? ওই মুখখানি নিয়ে প্রফুল্ল নয়নে গান গাবি, খেলাইবি প্রশান্ত হরষে! এই যুদ্ধ শেষ হলে, অভাগিনী তোরে আনিব রে নিষ্ঠুর পিতার গ্রাস হতে। আপনার ঘরে আনি রাখিব যতনে, এতদিনকার দুঃখ দিব দূর ক'রে। রাজপুত ক্ষত্রিয়েরে করিবি বিবাহ, ভালবেসে দুই জনে কাটাবি জীবন। অন্ধকার অরণ্যের রুদ্ধ বাল্যকাল দুঃস্বপ্নের মত শুধু পড়িবেক মনে। [দূতের প্রবেশ] মহাশয়, এসেছে এসেছে শত্রুগণ, তিন ক্রোশ দূরে তারা ফেলেছে শিবির। রাত্রিযোগে অলক্ষ্যেতে এসেছে তাহারা, সহসা প্রভাতে আজি পেলেম বারতা। |
||
চাঁদ । | চল তবে– বাজাও বাজাও রণভেরী। | |
সৈন্যগণ, অস্ত্র লও, উঠাও শিবির। দুয়ারে এসেছে শত্রু, বিলম্ব সহে না। দাও মোরে বর্ম্ম দাও, অশ্ব ল'য়ে এস। ত্বরা কর, বাজাও বাজাও রণভেরী। [কোলাহল] |