ভাষাংশ | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনাসংগ্রহের সূচি
রুদ্রচণ্ড
অষ্টম দৃশ্য
দৃশ্য। পথ [নেপথ্যে গান] |
||
তরুতলে ছিন্নবৃন্ত মালতীর ফুল মুদিয়া আসিছে আঁখি তার। চাহিয়া দেখিল ধার! শুষ্ক তৃণরাশি-মাঝে একেলা পড়িয়া, চারি দিকে কেহ নাই আর, নিরদয় অসীম সংসার। কে আছে গো দিবে তার তৃষিত অধরে এক বিন্দু শিশিরের কণা! কেহ না, কেহ না! মধ্যাহ্নকিরণ চারি দিকে খরদৃষ্টে চেয়ে অনিমিখে– ফুলটির মৃদুপ্রাণ হায় ধীরে ধীরে শুকাইয়া যায়। [নেপথ্যে]। উত্তরের পথ দিয়া চল সৈন্যগণ! [সেনাপতিগণ সৈন্যগণ ও চাঁদ কবির প্রবেশ] |
||
চাঁদ কবি । | অমিয়ার কণ্ঠ যেন শুনিনু সহসা, | |
এ মধ্যাহ্নে রাজপথে সে কেন আসিবে? | ||
সেনাপতি । | সৈন্যগণ হেথা এসে দাঁড়াইলে কেন? | |
বিশ্রাম করিতে কভু এই কি সময়? | ||
দ্বিতীয় সেনাপতি । শুনিনু যবনগণ যুঝে প্রাণপণে– | ||
অতিশয় ক্লান্ত নাকি হিন্দু সৈন্য যত। এখনো রয়েছে তারা সাহায্যের আশে, নিতান্ত নিরাশ হবে বিলম্ব হইলে। |
||
চাঁদ কবি । | তবে চল, চল ত্বরা, আর দেরি নয়! | |
[গমনোদ্যম। অমিয়ার প্রবেশ] | ||
অমিয়া ।
চাঁদ, চাঁদ–
ভাই মোর– সৈন্যগণ । কে তুই! দূর হ! সেনাপতি । স'রে দাঁড়া, পথ ছাড়্, চল সৈন্যগণ! চাঁদ কবি । [স্তম্ভিত হইয়া ] অমিয়া রে– সেনাপতি । চাঁদ কবি, এই কি সময়! |
||
আমাদের মুখ চেয়ে সমস্ত ভারত, ছেলেখেলা পেনু একি পথের ধারেতে? চল চল, বাজাও, বাজাও রণভেরী! |
||
চাঁদ । | [যাইতে যাইতে] অমিয়া রে, ফিরে এসে– | |
সেনাপতি । | বাজাও দুন্দুভি! | |
রণবাদ্য। প্রস্থান [অমিয়ার অবসন্ন হইয়া পতন] |