বিষয়: রবীন্দ্রসঙ্গীত।
শিরোনাম: নৃত্যের তালে তালে, নটরাজ, ঘুচাও ঘুচাও ঘুচাও সকল বন্ধ হে
পাঠ ও পাঠভেদ:
- গীতবিতান (বিশ্বভারতী, কার্তিক ১৪১২)-এর পাঠ: বিচিত্র
পর্যায়ের দ্বিতীয় গান।
নৃত্যের তালে তালে, নটরাজ, ঘুচাও
ঘুচাও ঘুচাও সকল বন্ধ হে।
সুপ্তি ভাঙাও, চিত্তে জাগাও মুক্ত সুরের ছন্দ হে॥
তোমার চরণপবনপরশে সরস্বতীর মানসসরসে
যুগে যুগে কালে কালে সুরে সুরে তালে তালে
ঢেউ তুলে দাও, মাতিয়ে জাগাও অমলকমলগন্ধ হে॥
নমো নমো নমো—
তোমার নৃত্য অমিত বিত্ত ভরুক চিত্ত মম॥
নৃত্যে তোমার মুক্তির রূপ, নৃত্যে তোমার মায়া,
বিশ্বতনুতে অণুতে অণুতে কাঁপে নৃত্যের ছায়া।
তোমার বিশ্ব-নাচের দোলায় দোলায় বাঁধন পরায় বাঁধন খোলায়
যুগে যুগে কালে কালে সুরে সুরে তালে তালে,
অন্ত কে তার সন্ধান পায় ভাবিতে লাগায় ধন্দ হে॥
নমো নমো নমো—
তোমার নৃত্য অমিত বিত্ত ভরুক চিত্ত মম॥
নৃত্যের বশে সুন্দর হল বিদ্রোহী পরমাণু,
পদযুগ ঘিরে জ্যোতিমঞ্জীরে বাজিল চন্দ্র ভানু।
তব নৃত্যের প্রাণবেদনায় বিবশ বিশ্ব জাগে চেতনায়
যুগে যুগে কালে কালে সুরে সুরে তালে তালে,
সুখে দুখে হয় তরঙ্গময় তোমার পরমানন্দ হে॥
নমো নমো নমো—
তোমার নৃত্য অমিত বিত্ত ভরুক চিত্ত মম॥
মোর সংসারে তাণ্ডব তব কম্পিত জটাজালে।
লোকে লোকে ঘুরে এসেছি তোমার নাচের ঘূর্ণিতালে।
ওগো সন্ন্যাসী, ওগো সুন্দর, ওগো শঙ্কর, হে ভয়ঙ্কর,
যুগে যুগে কালে কালে সুরে সুরে তালে তালে,
জীবন-মরণ-নাচের ডমরু বাজাও জলদমন্দ্র হে॥
নমো নমো নমো—
তোমার নৃত্য অমিত বিত্ত ভরুক চিত্ত মম॥
- তথ্যানুসন্ধান:
-
ক. রচনাকাল ও স্থান: ২১-২৫ ফাল্গুন ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ।
শান্তিনিকেতন।
রবীন্দ্রনাথের ৬৫ বৎসর ১০ মাস বয়সের রচনা। -
খ. প্রকাশ ও গ্রন্থভুক্তি:
-
গ্রন্থ:
- পত্রিকা:
- বিচিত্রা (আষাঢ় ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ)। নৃত্য। গান। নটরাজ-ঋতুরঙ্গশালা'র
সাথে প্রকাশিত হয়েছিল। বিচিত্রা'র ভাদ্র ১৩৩৫ বঙ্গাব্দ সংখ্যায়- গানটি
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত স্বরলিপি-সহ মুদ্রিত হয়েছিল।
- নটরাজ (১৩৩৮ বঙ্গাব্দ)। নৃত্য। গান। রবীন্দ্ররচনাবলী অষ্টাদশ খণ্ড
(বিশ্বভারতী)। পৃষ্ঠা ১৯৯।
- গ.সঙ্গীত বিষয়ক তথ্যাবলী:
- স্বরলিপি:
[নমুনা:
মূল,
সুরান্তর]
- স্বরলিপিকার:
স্বরবিতান দ্বিতীয় খণ্ডে
প্রথম
সংস্করণে (আশ্বিন ১৩৪৩) এই গানটির স্বরলিপিটি ছিল
দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর-কৃত।
স্বরবিতান দ্বিতীয় খণ্ডের
সর্বশেষ সংস্করণ (অগ্রহায়ণ ১৩৭৭) এই স্বরলিপিটির অংশবিশেষ পরে পাঠান্তর
হিসেবে সুরভেদ ছন্দোভেদ পত্রে যুক্ত হয়েছে। [পৃষ্ঠা: ১৬৭-৬৮] মূল স্বরলিপিটি
অনাদিকুমার দস্তিদারের সম্পাদিত।
[দিনেন্দ্রনাথ
ঠাকুর-কৃত রবীন্দ্রসঙ্গীতের তালিকা]
-
সুর ও তাল:
-
স্বরবিতান দ্বিতীয় খণ্ডের (মাঘ ১৪১২) গৃহীত গানটির
স্বরলিপিতে রাগ-তালের উল্লেখ নেই। উক্ত স্বরলিপিতে
গানটি একাধিক ছন্দোবিভাজনে পাওয়া যায়। তালের পরিবর্তনের সাথে সাথে
এই গানের লয়ের পরিবর্তন ঘটেছে। যেমন-
প্রথম স্তবক : ৩।৩ ছন্দ (দাদরা)। লয় :
মধ্য।
দ্বিতীয় স্তবক : ২।৪ ছন্দ (ষষ্ঠী)। লয়
: দ্রুত
পূরক অংশ : ৩।৩ ছন্দ (দাদরা)। লয় :
মধ্য।
তৃতীয় স্তবক : ৪।৪ ছন্দ (কাহারবা)। লয়
: দ্রুত।
পূরক অংশ : ৩।৩ ছন্দ (দাদরা)। লয় :
মধ্য।
চতুর্থ স্তবক : ২।৩।২।৩ ছন্দ
(ঝাঁপতাল)। লয় : দ্রুত।
পূরক অংশ : ৩।৩ ছন্দ (দাদরা)। লয় :
মধ্য।
- রাগ: খাম্বাজ। তাল:
দাদরা-ষষ্ঠী-কাহারবা-ঝাঁপ। [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস,
ডিসেম্বর, ২০০৬)]। পৃষ্ঠা: ৬
-
রাগ: খাম্বাজ। তাল:
[রাগরাগিণীর এলাকায় রবীন্দ্রসংগীত। প্রফুল্লকুমার
চক্রবর্তী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত আকাদেমী, জুলাই ২০০১।] পৃষ্ঠা: ১১০
-
- গ্রহস্বর-পা।