এক সূত্রে বাঁধিয়াছি সহস্রটি মন,
এক কার্ষে সঁপিয়াছি সহস্র জীবন-
বন্দে মাতরম্॥
আসুক সহস্র বাধা, বাধুক প্রলয়,
আমরা সহস্র প্রাণ রহিব নির্ভয়-
বন্দে মাতরম্॥
আমরা ডরাইব না ঝটিকা-ঝঞ্ঝায়,
অযুত তরঙ্গ বক্ষে সহিব হেলায়।
টুটে তো টুটুক এই নশ্বর জীবন,
তবু না ছিঁড়িবে কভু এ দৃঢ় বন্ধন-
বন্দে মাতরম্॥
রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনস্মৃতি গ্রন্থের 
'স্বাদেশিকতা' অংশে- সঞ্জীবনী সভার সভাপতি রাজনারায়ণ বসু'র সম্পর্কে বলতে গিয়ে 
লিখেছেন- 'এ দিকে তিনি মাটির 
মানুষ কিন্তু তেজে একেবারে পরিপূর্ণ ছিলেন। দেশের প্রতি তাঁহার যে প্রবল অনুরাগ সে 
তাঁহার সেই তেজের জিনিস। দেশের সমস্ত খর্বতা দীনতা অপমানকে তিনি দগ্ধ করিয়া ফেলিতে 
চাহিতেন। তাঁহার দুইচক্ষু জ্বলিতে থাকিত, তাঁহার হৃদয় দীপ্ত হইয়া উঠিত, উৎসাহের 
সঙ্গে হাত নাড়িয়া আমাদের সঙ্গে মিলিয়া তিনি গান ধরিতেন— গলায় সুর লাগুক আর না লাগুক 
সে তিনি খেয়ালই করিতেন না— 
                                                 এক সূত্রে বাঁধিয়াছি সহস্রটি মন,
                                                 এক কার্যে সঁপিয়াছি সহস্র জীবন।'
এই বিচারে ধারণা করা যায়, এ গানটির রচনাকাল- 
'পৌষ ১২৮৩ থেকে জ্যৈষ্ঠ ১২৮৪' -এর মধ্যবর্তী 
কোনো এক সময়। মোটা দাগে বলা যায়- সম্ভবত এই গানটি রবীন্দ্রনাথের ১৫ বৎসর বয়সের 
শেষার্ধে রচিত।
 
রাগ: ঝিঁঝিট পাশ্চাত্য প্রভাব। তাল: দাদরা [রবীন্দ্রসংগীত : রাগ-সুর নির্দেশিকা । সুধীর চন্দ। (প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬)। পৃষ্ঠা: ৩৭]।