চপল তব নবীন আঁখি দুটি
সহসা যত বাঁধন হতে আমারে দিল ছুটি॥
হৃদয় মম আকাশে গেল খুলি,
সুদূরবনগন্ধ আসি করিল কোলাকুলি।
ঘাসের ছোঁওয়া নিভৃত তরুছায়ে
চুপিচুপি কী করুণ কথা কহিল সারা গায়ে।
আমের বোল, ঝাউয়ের দোল, ঢেউয়ের লুটোপুটি-
বুকের কাছে সবাই এল জুটি॥
- পাঠভেদ: গীতবিতান তৃতীয় খণ্ডে (শ্রাবণ ১৩৩৯) অতিরিক্ত অংশ ছিল। এই অংশটুকু হলো—
চপল তব নবীন আঁখি দুটি
যা কিছু মোর ভাবনা ছিল সকলি নিল লুটি।
সকল-ভোলা ডাকিয়া মোরে আনিল লীলাভরে
দুয়ার খোলো পুরাণো খেলাঘরে,
যেথায় ছিনু সবার কাছাকাছি
অজানা ভাবে অবুঝ গান যেখানে গাহিয়াছি।
প্রাণের মাঝে বানের মতো ক্ষ্যাপামি এল ছুটি
কাজের বাধা সকলি গেল টুটু।
যে আঁখিপাতে আকাশ উঠে ফুলের মতো ফুটি।
ইসারা তার চমক দেয় চিতে
অশোক বন রাজিয়া উঠে রঙীন রাগিণীতে।
অলস হাওয়া আধেক জেগে জেগে
গগন পটে কী ছেলেখেলা খেলায় মেঘে মেঘে
কমল কলি বুলায় বুকে কোমল কচি মুঠি,
পরাণে মনে নিখিলে জেগে উঠি॥
রাগ : দেশ। রাগ রূপ অস্পষ্ট। স্থায়ী দেশ রাগে শুরু হয়ে কেদার-এর ছোঁওয়া দিয়ে শেষ হচ্ছে। [রবীন্দ্রসঙ্গীতে রাগ-নির্ণয়। ভি.ভি. ওয়াঝলওয়ার। রবীন্দ্রনাথের প্রেমের গান। সংগীত-শিক্ষায়তন। বৈশাখ ১৩৯০। পৃষ্ঠা : ৭২]
রাগ: খাম্বাজ। তাল: ঝম্পক। [রবীন্দ্রসংগীত: রাগ-সুর নির্দেশিকা। সুধীর চন্দ। প্যাপিরাস, ডিসেম্বর ২০০৬।] পৃষ্ঠা: ৪৯